Monday, November 4, 2024

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শৃঙ্খলায় আনা হয়েছে: মেয়র তাপস 


ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম শৃঙ্খলায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

বুধবার (২৭ মার্চ) নগরীর ৬৯ নম্বর বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ দাবি করেন তিনি। 

মেয়র বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে দেখেছি যে, প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটত এবং কয়েকজনের প্রাণহানিও ঘটেছে। আমাদের নিয়মিত গাড়িচালক ছিল না। যানবাহনগুলো সবই প্রায় পুরনো ও লক্কর-ঝক্কর ছিল। ফলে, সংগ্রহ ও সরবরাহ ব্যবস্থা খুবই নাজুক অবস্থায় ছিল। ময়লা-আবর্জনা উন্মুক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকত। কিন্তু, সেখান থেকে আমরা অনেকটা উত্তরণ ঘটিয়েছি। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে ২৫টি ডাম্প ট্রাক কিনেছি। নতুন প্রায় ১০০ জন নিয়মিত ভারী গাড়ির চালক নিয়োগ দিয়েছি। আগে যাকে-তাকে দিয়েই গাড়ি চালানো হতো। সেটা এখন নেই বললেই চলে। আমরা পুরো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সংস্কার করেছি। এখন আর রাস্তায় উন্মুক্তভাবে বর্জ্য পড়ে থাকতে দেখা যায় না। এভাবেই আমরা পুরো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করছি, শৃঙ্খলায় নিয়ে আসছি।’

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে ধাপে ধাপে উন্নতি করা হচ্ছে, জানিয়ে তিনি বলেন, একটি শহর যত বেশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে, সেই শহরের নান্দনিকতা ও সৌন্দর্য ততই বৃদ্ধি পাবে। আগে ঢাকা শহরে নালা-নর্দমা, হাঁটার পথসহ যত্রতত্র বর্জ্য পড়ে থাকত। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আমরা প্রত্যেকটি ওয়ার্ডেই একটি করে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে এসব কাজ করা হচ্ছে। তবে, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিকূলতা হলো জায়গার সংকট। আমরা এ পর্যন্ত ৬৪টি ওয়ার্ডে বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করতে পেরেছি। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পরে এটি নিয়ে চল্লিশতম বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের উদ্বোধন করা হলো। আগে আমাদের মাত্র ২৪টি বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র ছিল। অল্প সময়ের মধ্যে ৪০টি বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে এই কার্যক্রমে আমরা আমূল পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। আর মাত্র ১১টি বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র নির্মাণ করলেই পুরো ঢাকা শহর আমাদের এই কার্যক্রমের আওতায় চলে আসবে। আগে আমরা দেখতাম যে, ১০০ ভাগ বর্জ্য রাস্তায় উপচে পড়ত। ময়লা মাড়িয়ে মানুষ মসজিদে যেতে পারত না। সেই পরিস্থিতি থেকে আমরা ধাপে ধাপে উন্নতি করছি। বর্তমানে প্রায় ৮০ ভাগ বর্জ্য আমরা সংগ্রহ করতে পারছি। ইনশাল্লাহ, অল্প সময়ের মধ্যেই আমরা বাকি ২০ ভাগও শেষ করতে পারব এবং উপচে পড়া বর্জ্যের জঞ্জাল থেকে ঢাকাবাসীকে মুক্ত করতে পারব।’

এ সময় এডিস মশার প্রকোপ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ঢাদসিক মেয়র বলেন, ‘গতবার যেসব এলাকায় দশজনের বেশি রোগী পাওয়া গেছে, সেসব এলাকায় আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করেছি। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা যৌথভাবে অভিযান করেছি। এর মাধ্যমে সচেতনতা যেমন বেড়েছে, তেমনই জনগণের সম্পৃক্ততাও বেড়েছে। জনগণ যদি দায়িত্বশীল হয়ে কোথাও পানি জমতে না দেয়, বাড়ির আঙিনা পরিষ্কার রাখে, তাহলেই আমরা এডিস মশার প্রকোপ হতে ঢাকাবাসীকে স্বস্তি দিতে পারব। আমরা ১০০ ভাগ সফল হতে পারব। 

পরে মেয়র কোনাপাড়া থেকে গলাকাটা সেতু সংলগ্ন খাল হতে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাছিম আহমেদ, অঞ্চল-৮ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা এম জে আরিফ বেগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. সফিউল্লাহ সিদ্দিক ভুঁইয়া, কাউন্সিলরদের মধ্যে ৬৯ নম্বর ওয়ার্ডের সালাহউদ্দিন আহমেদ, ৬৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাসুদর রহমান মোল্লা, ৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল মতিন সাউদ ও সংরক্ষিত আসনের মাহফুজা আক্তার হিমেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles