প্রতিরক্ষার জন্য তাইওয়ানের যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থ প্রদান করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) প্রকাশিত একটি সাক্ষৎকারে তিনি এই কথা বলেছেন। কেননা, তাইওয়ান ওয়াশিংটনকে প্রতিরক্ষা সহায়তার বিনিময়ে কিছুই দেয় না। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের জেরে দেশ দুটির সম্পর্ক নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বেশ চর্চা হচ্ছে। দুই দেশের সম্পর্কের ধরন নিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনের আলোকে কিছু তথ্য তুলে ধরা হলো:
প্রতিরক্ষা সম্পর্কের ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা
শীতল যুদ্ধের তীব্রতার সময় তাইওয়ানে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপন করতে দিয়েছিল তাইপেই কর্তৃপক্ষ। তখন উভয়ের মধ্যে একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি ছিল। ১৯৭৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র তাইপেই সরকারের সঙ্গে সরকারি সম্পর্ক ছিন্ন করে বেইজিং সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। তখন তাইওয়ানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিটিও বাতিল করা হয়।
তবে ১৯৭৯ এর পর তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ‘তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট’ আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। এটি যুক্তরাষ্ট্রকে তাইওয়ানে আত্মরক্ষার উপায় সরবরাহ করতে একটি আইনি ভিত্তি দেয়। তবে আইনটি তাইওয়ানে আক্রমণ করা হলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটির সাহায্যে এগিয়ে আসবে এমন আদেশ দেয় না।
দীর্ঘকাল ধরে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতার’ নীতি অনুসরণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চীন তাইওয়ানকে আক্রমণ করবে এমন কোনও পরিস্থিতিতে দেশটিকে রক্ষার জন্য সামরিকভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারে ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তাইওয়ানকে রক্ষার জন্য তিনি শক্তি ব্যবহার করতে ইচ্ছুক।
প্রশিক্ষণের জন্য তাইওয়ানে কিছু সামরিক কর্মী রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। আর তাইওয়ান তার এফ-১৬ পাইলটদের অ্যারিজোনার লুক এয়ার ফোর্স ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণের জন্য পাঠায়।
তাইওয়ানের ঊর্ধ্বতন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারাও যুক্তরাষ্ট্র সফরে যান এবং দেশ দুটির মধ্যে গোয়েন্দা তথ্যও আদান-প্রদান হয়।
তাইপেইতে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বড় ডি ফ্যাক্টো দূতাবাস রয়েছে যেটিকে আমেরিকান ইনস্টিটিউট বলা হয়। আর যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের ডি ফ্যাক্টো দূতাবাসের নাম তাইপেই ইকোনমিক অ্যান্ড কালচারাল রিপ্রেজেন্টেটিভ অফিস।
মার্কিন সামরিক সুরক্ষার জন্য অর্থ প্রদান করে তাইওয়ান?
এশিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটির স্থাপনায় খরচের অধিকাংশই বহন করে মার্কিন চুক্তির মিত্র দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া। আগে থেকেই বিদ্যমান ব্যবস্থার অধীনে এই খরচ বহন করে থাকে দেশ দুটি। তবে তাইওয়ানে আর মার্কিন ঘাঁটি বা কোনও প্রতিরক্ষা চুক্তি না থাকায় দ্বীপরাষ্ট্রটির জন্য এমন কোনও ব্যবস্থা নেই।
তবে তাইওয়ান মার্কিন অস্ত্র ক্রয়ের জন্য একটি বড় অঙ্কের অর্থ খরচ করে থাকে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশটিতে প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র সরবরাহের কথা রয়েছে।
ট্রাম্পের প্রথম শাসনামলে সম্পর্কগুলো যেমন ছিল
এক কথায়—চমৎকার। ট্রাম্প এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন ২০১৬ সালে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরপরই টেলিফোনে কথা বলেন। ১৯৭৯ সালের পর এই প্রথম উভয় দেশের মধ্যে এমন শীর্ষ পর্যায়ের যোগাযোগ হয়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল বেইজিং।
তৎকালীন স্বাস্থ্য সচিব অ্যালেক্স আজারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে তাইওয়ানে পাঠিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। চার দশকের মধ্যে স্বায়ত্তস্বাশিত এই দ্বীপে পাঠানো সর্বোচ্চ পর্যায়ের মার্কিন কর্মকর্তা ছিলেন অ্যালেক্স আজার। সেখানে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রেখেছিলেন তিনি।
মাইক পম্পেওর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল চীন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের মেয়াদ যখন শেষের দিকে তখন সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে অফিস ছেড়েছিলেন মাইক। চীন, বিশেষ করে দেশটির ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির বারবার সমালোচনা করা এবং তাইওয়ানের প্রতি তার প্রকাশ্য সমর্থনের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বেইজিং।
তাইওয়ানের কি দ্বিপক্ষীয় মার্কিন সমর্থন আছে?
মার্কিন রাজনীতিবিদরা এ বিষয়টিতে জোর দেন যে, তাইওয়ান একটি বিরল সমস্যা যেটি দ্বিদলীয় সমর্থন পায়। তাইওয়ানের কর্মকর্তারাও এ বিষয়ে একমত। তাইপেই কর্তৃপক্ষ দেশটিতে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের এবং ট্রাম্পের নিয়োগ দেওয়া সাবেক কর্মকর্তাদের দ্বিদলীয় সফর অব্যাহত রেখেছে।
এপ্রিলে একটি ব্যাপক বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজ পাস করেছিল মার্কিন কংগ্রেস। এই প্যাকেজে দ্বীপরাষ্ট্রটির জন্য অস্ত্র সহায়তা অন্তর্ভুক্ত ছিল। তখন প্রতিনিধি পরিষদের নেতারা হঠাৎ বিরোধিতা ভুলে ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজের পক্ষে ভোট দেয়। এই প্যাকেজের আওতায় ইউক্রেন, ইসরায়েল ও তাইওয়ান এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে মার্কিন অংশীদারদের সামরিক সহায়তা দেওয়ার কথা রয়েছে।
তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটিক প্রোগেসিভ পার্টি এবং প্রধান বিরোধী দল কুওমিনতাং উভয়েরই মিলওয়াকিতে চলমান রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দল রয়েছে।
বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক যেমন
২০২৩ সালের শেষ পর্যন্ত তাইওয়ান ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ১০তম বৃহত্তম রফতানি বাজার, যার মূল্য ৪০ বিলিয়ন ডলার। একইসঙ্গে আমদানির অষ্টম বৃহত্তম উৎসও ছিল দেশটি। যার মূল্য ৮৮ বিলিয়ন ডলার।
২০২২ সালে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলার জন্য বাইডেন প্রশাসনের এশিয়া-কেন্দ্রিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক ফ্রেমওয়ার্ক বা আইপিইএফ থেকে তাইওয়ানকে বাদ দেওয়া হয়। তবে এর পরিবর্তে ওয়াশিংটন ‘২১ শতকের’ বাণিজ্য উদ্যোগের অধীনে তাইওয়ানের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে।
যুক্তরাষ্ট্রে তাইওয়ানের বিনিয়োগে চিপমেকার টিএসএমসি (২৩৩০.টিডব্লিউ) প্রাধান্য পেয়েছে। অ্যারিজোনায় এর তিনটি কারখানা নির্মাণের জন্য ৬৫ বিলিয়ন ডলারের একটি পরিকল্পনা চালু করা হয়েছে। এর জন্য মার্কিন সরকার ৬.৬ বিলিয়ন ডলার ভর্তুকি এবং কম খরচে ৫ বিলিয়ন পর্যন্ত সরকারি ঋণ দিচ্ছে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com