Monday, May 20, 2024

২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক


চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের ১৬ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এখন দৃশ্যমান। যান চলাচলের জন্য শিগগিরই এটি খুলে দেওয়া হবে। চার লেনের মধ্যে দুই লেন পুরোপুরি প্রস্তুত। বাকি দুই লেনে চলছে বৈদ্যুতিক পোল স্থাপন ও সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর কাজ। এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে নগরীর লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। অথচ সড়ক ধরে ভয়াবহ যানজট পেরিয়ে এটুকু পথ অতিক্রম করতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা। প্রতিদিন জনসাধারণকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

তবে এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও প্রাইম মুভার ট্রেইলার (কনটেইনার পরিবহনকারী যান) চলতে পারবে না। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) এসব গাড়ি চালাতে চাইলেও তাতে সায় দেয়নি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এই তিন ধরনের গাড়ি বাদ দিয়ে এক্সপ্রেসওয়ের টোল চূড়ান্ত করেছে মন্ত্রণালয়। গাড়ির ধরন অনুযায়ী, কয়েকটি ক্ষেত্রে সিডিএর প্রস্তাবিত টোলের চেয়ে বেশি টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্সপ্রেসওয়ের নিরাপত্তায় থাকবে ২০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। পাশাপাশি যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে আটটি দ্রুতগতির ক্যামেরা। টোল আদায়ের জন্য থাকবে ১৪টি বুথ।

শিগগিরই যানবাহন চলাচলের জন্য এটি খুলে দেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান। 

তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যানবাহন চলাচলের জন্য প্রস্তুত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বর্তমানে বৈদ্যুতিক পোল বসানোর কাজ চলছে। পাশাপাশি নিরাপত্তার জন্য বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে থাকবে আটটি দ্রুতগতির ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ। এখানে নির্ধারিত গতি সীমার কম-বেশি চালানো হলে ক্যামেরার সাহায্যে যানবাহনগুলোকে জরিমানার আওতায় আনবে পুলিশ।’

২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক

এখন শেষ মুহূর্তের কাজ চলছে জানিয়ে সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৈদ্যুতিক পোল, লাইট, সিসি ক্যামেরা এবং দ্রুতগতির ক্যামেরা বসানোর পর এক্সপ্রেসওয়ে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে টোল আদায়ের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ জন্য টেন্ডার ডাকা হবে। এখানে টোল নেওয়ার জন্য ১৪টি বুথ থাকবে। প্রাথমিকভাবে পতেঙ্গা প্রান্তে চারটি বুথ থাকবে। র‌্যাম্প নির্মাণের পর বাকি টোল বুথ বসানো হবে।’

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট কমে যাবে উল্লেখ করে হাসান বিন শামস বলেন, ‘শুধু তাই নয়, এটি নগরীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তকে অর্থাৎ নতুন ব্রিজ বাকলিয়া থেকে বহদ্দারহাট হয়ে পতেঙ্গা পর্যন্ত সংযুক্ত করেছে। এতে লালখানবাজার থেকে পতেঙ্গায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট।’

তবে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করতে দেওয়া না হলে মানুষ এক্সপ্রেসওয়ের সুফল পাবে না জানিয়ে হাসান বিন শামস আরও বলেন, ‘এক্সপ্রেসওয়ে যাতে সবাই ব্যবহার করতে পারেন, সেজন্য অটোরিকশা চলাচলের অনুমোদনের চিন্তাভাবনা আছে আমাদের। বোর্ডের অনুমোদন নিয়ে তা করা হবে।’

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নগরের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের মূল এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ১৬ কিলোমিটার। এর নাম মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী-সিডিএ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটিতে ওঠানামার জন্য ১৫টি র‍্যাম্প রয়েছে। 
ইতোমধ্যে মূল অংশের কাজ শেষ হয়েছে। তবে র‍্যাম্পগুলোর কাজ এখনও পুরোপুরি শুরু হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১৪ নভেম্বর এর উদ্বোধন করেন। তবে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে যান চলাচল শুরু হয়নি। এই এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে চার হাজার ৩৬৯ কোটি সাত লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা। ইতোমধ্যে টোলের হার অনুমোদন দিয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তবে কবে নাগাদ যানবাহন চলাচল শুরু হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

টোলের হার

সিডিএ ১২ ধরনের গাড়ির প্রস্তাবিত টোল নির্ধারণ করে একটি তালিকা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। ওই তালিকা অনুযায়ী, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে মোটরসাইকেল (দুই চাকা), সিএনজিচালিত অটোরিকশা (তিন চাকা), কার, জিপ, মাইক্রোবাস, পিকআপ, মিনিবাস, বাস, ট্রাক (৪ চাকা), ট্রাক (৬ চাকা), কাভার্ডভ্যান এবং ট্রেইলার গাড়ি চলাচলের সুযোগ রাখা হয়েছিল। সিডিএর প্রস্তাব নিয়ে গত ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

২০ মিনিটে লালখানবাজার থেকে বিমানবন্দর, চলবে না অটোরিকশা-বাইক

সভার সভাপতি মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন ওই সভায় বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল, ট্রেইলার ও অটোরিকশা প্রবেশ করতে দেওয়া সমীচীন হবে না। সভায় তিন ধরনের গাড়ি বাদ দিয়ে টোলের হার চূড়ান্ত করা হয়।

সিডিএ সূত্র জানিয়েছে, এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচল করলে প্রাইভেটকার ১০০, জিপ ১০০, মাইক্রোবাস ১০০, মিনিবাস ২০০, বাস ৩০০, ট্রাক (চার চাকা) ২০০ টাকা করে টোল দিতে হবে। তবে উড়াল সড়কে চলবে না মোটরসাইকেল, ট্রাক (৬ চাকা) এবং কাভার্ডভ্যান।

সিডিএ জানায়, চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় শহরের লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।

তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় দফায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এই দফায় সময় বেড়েছে এক বছর। অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা। একই সময়ে প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে চার হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা করা হয়। সিডিএর এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র‍্যাংকিন।

১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের, ৫৪ ফুট প্রশস্ত এবং চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১৫টি র‌্যাম্প। এর মধ্যে জিইসি মোড়ে একটি, টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি, সিমেন্ট ক্রসিং মোড়ে একটি এবং কেইপিজেড এলাকায় দুটি র‌্যাম্প থাকবে।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles