Saturday, May 18, 2024

তীব্র গরমে মরে যাচ্ছে মুরগি, কমেছে ডিম ও মাংসের উৎপাদন


প্রচণ্ড গরমে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে খামারের মুরগি। ডিম ও মাংসের উৎপাদনও কমেছে ১৫ থেকে ৩৫ ভাগ। ঘরের চালে ঝর্ণা, বাড়তি ফ্যানের ব্যবস্থা করেও মুরগি সুস্থ রাখতে পারছে না খামারিরা। এতে করে খামারিরা চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

জানা যায়, দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজবাড়ীতেও মাসব্যাপী চলছে তীব্র তাপদাহ। এই অসহনীয় গরমে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষ। তীব্র তাপদাহ থেকে রেহাই পাচ্ছে না অন্যান্য জীব-জন্তুও। হিটস্ট্রোকের কারণে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন পোল্ট্রি খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন পোল্ট্রি হ্যাচারিজের মালিক ও প্রান্তিক খামারিরা। এমন পরিস্থিতিতে ডিম ১৫ থেকে ২০ শতাংশ ও মুরগির মাংস উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে মুরগি ও ডিম সরবরাহে সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

তাপ সহনশীল করতে মুরগিকে খাওয়ানো হচ্ছে ভিটামিন সি জাতীয় নানা ওষুধ সরেজমিন গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি ও ফার্ম ঘুরে দেখা যায়, তীব্র তাপদাহের করণে হিট স্ট্রোক করে প্রতিদিনই মরছে খামারের মুরগি। খামারিরা মুরগি সুস্থ রাখতে ঘরের চালে মোটরের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পানি ছিটানোর পাশাপাশি বাড়তি ফ্যানের ব্যবস্থা করেছেন। এছাড়াও তাপ সহনশীল করতে মুরগিকে খাওয়ানো হচ্ছে ভিটামিন সি জাতীয় নানা ওষুধ। এতে খরচ বেড়ে দ্বিগুণ ক্ষতির মুখোমুখি হচ্ছেন পোল্ট্রি খামারিরা। তারপরও রোদের তাপ বাড়ার সাথে সাথে মুরগিও অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। এভাবে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে মুরগি।

দেশে পোল্ট্রি শিল্পে দ্বিতীয় বৃহত্তম জোন হিসেবে বিবেচনা করা হয় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দকে। এ উপজেলায় অন্তত অর্ধশত পোল্ট্রি হ্যাচারির পাশাপাশি অসংখ্য পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। নানা কারণে পোল্ট্রির সাথে জড়িত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন। ক্ষতির কারণে শত শত মুরগির খামার বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে এই ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোনালী পোল্ট্রি হ্যাচারিজ লিমিটেডের পরিচালক মো. আইয়ুব রানা জানান, তীব্র গরমের কারণে তাদের বাচ্চা উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যে প্যারেন্টসের ১৮ সপ্তাহে উৎপাদনে যাওয়ার কথা, সেখানে ২৪ সপ্তাহেও উৎপাদনে যাচ্ছে না। প্রতি সপ্তাহে এই মুরগির পেছনে খরচ হয় ৩ লাখ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেও মুরগির মৃত্যু বন্ধ করা যাচ্ছে না।

দেশে পোল্ট্রি শিল্পে দ্বিতীয় বৃহত্তম জোন হিসেবে বিবেচনা করা হয় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দকে উপজেলার উজানচর নতুন পাড়া এলাকার খামারি মো. শাহনি শেখের খামারে সোনালি জাতের মুরগি আছে প্রায় আড়াই হাজারের মতো। হিটস্ট্রোকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি করে মুরগি মারা যাচ্ছে। তিনি জানান, মুরগির জন্য আলাদাভাবে বাতাসের ব্যবস্থা ও শেডের উপরে সারাদিন ঝরনা বসিয়ে পানি দেওয়া হচ্ছে। তারপরও মুরগির মৃত্যু বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া এই গরমের কারণে মুরগির ওজনও কমে যাচ্ছে।

ছোটভাকলা ইউনিয়নের খামারি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার এখানে প্রায় ১ হাজার ২০০ মুরগি আছে। গত এক মাসে প্রায় ৫০টির মতো মুরগি মারা গেছে। এসব মুরগিকে বেশি শীতল জায়গায় রাখা যায় না, আবার বেশি গরমেও রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র গরমের কারণে মুরগিকে সুস্থ রাখতে এক বেলা খাবার দেওয়া হচ্ছে। মুরগির খাবার কমিয়ে দিলে উৎপাদন কমে আসবে এটাই স্বাভাবিক।

গোয়ালন্দ কুড়মড়াকান্দি এলাকার কিয়াম শিকদার বলেন, তীব্র গরমে ২০ দিন বয়সের প্রায় ৫ হাজার কোয়েল পাখির বাচ্চা মারা গেছে। এতে আমার ক্ষতি হয়েছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ছিদ্দিক মিয়া বলেন, তীব্র এই তাপদাহে খামারের মুরগির ওজন ও ডিম উৎপাদন কমে যাচ্ছে। ৪০ দিনে একটি ব্রয়লার মুরগি দুই কেজি ওজন ছাড়িয়ে যায়। এখন তা ১ কেজিও হচ্ছে না। আবার একই কারণে খামারিরা নতুন করে বাচ্চা তুলছেন না, এতে করে বাচ্চার দাম কমে গেছে। কিন্তু হ্যাচারি মালিকদের ব্যয় আরও বেড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ ব্যবসার সাথে জড়িতরা একেবারে পথে বসে যাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর থেকে পোল্ট্রি খামারিদের তাপপ্রবাহ মোকাবিলায় বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো, শেডে সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা, ধারণ ক্ষমতার মধ্যে মুরগি রাখা, মুরগির শরীরে পানি স্প্রে করা, শেডের চালে ভেজা পাটের ব্যাগ রাখা এবং নিয়মিত পানি ঢালা ও দুপুরে মুরগিকে খাবার না খাওয়ানো ইত্যাদি।

 




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles