নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে বরিশালে প্রথম মামলা হয়েছে। ঘটনার ১৭ মাস পর শুনানি শেষে রবিবার মামলাটি গ্রহণ করেন বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মেহেদী হাসান আল মাসুদ। সোমবার (০২ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী নাজিম উদ্দিন আহমেদ পান্না।
সাউন্ড বক্সে গান বাজানোকে কেন্দ্র করে ২০২৩ সালের ৩ মার্চ তিন নারীকে তুলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় তিন পুলিশের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছেন বাবুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা মালা আক্তার।
আইনজীবী নাজিম উদ্দিন আহমেদ পান্না বলেন, ‘ঘটনার পর ওই সময়ে আদালতে মামলার আবেদন করেছিলেন ভুক্তভোগী ওই নারী। কিন্তু মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে পুলিশ ও আইনজীবীদের বাধার মুখে বিচার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। রবিবার পুনরায় মামলার আবেদন করলে শুনানি শেষে তা গ্রহণ করেন বিচারক।’
মামলার আসামিরা হলেন- বাবুগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) খলিলুর রহমান, এসআই নাসির উদ্দিন ও কনস্টেবল নীপা রানী। বর্তমানে তারা অন্যান্য থানায় কর্মরত আছেন।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, ২০২৩ সালের ৩ মার্চ রাতে বাবুগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ দেহেরগতি গ্রামের মাহিনুর বেগমের বাড়িতে পারিবারিক বনভোজনের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে গান বাজানো হয়। কিন্তু গ্রামের কয়েকজন ব্যক্তি গানবাজনা বন্ধ করার জন্য টহল পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। টহল পুলিশ মাহিনুরের বাড়িতে এসে উচ্চস্বরে গান বাজানো বন্ধের নির্দেশ দেন। তখন পরিবারের সবাই তাদের বোঝান বনভোজন উপলক্ষে ছেলেমেয়েরা আনন্দ করছে। এতে ক্ষুব্ধ হন বাবুগঞ্জ থানার এসআই খলিলুর রহমান, নাসির উদ্দিন ও কনস্টেবল নীপা রানী। তারা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। পরে পরিবারের ছয় সদস্যকে তুলে থানায় নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। সবচেয়ে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হন আকাশী, রাশিদা ও মালা আক্তার। এ ঘটনায় উল্টো এসআই নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে ওই ছয় সদস্যসহ পরিবারের ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় ৪ মার্চ আদালতে সোপর্দ করা হলে তিন জনের বয়স ১৪ বছর হওয়ায় বিচারক জামিন দেন। বাকি ওই তিন নারীকে কারাগারে পাঠান।
১২ মার্চ তাদের বরিশাল আদালতে তোলা হলে বিচারকের কাছে পুলিশের অমানবিক নির্যাতনের বর্ণনা দেন তারা। ওই ঘটনা শুনে বিচারক পুলিশ সুপারকে মামলা নেওয়ার আদেশ এবং তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করে তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করে মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার আদেশ দেন।
মামলার বাদী বলেন, ‘মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং জবানবন্দি পাওয়ার পর বিচারক অভিযুক্ত তিন পুলিশের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে মামলা নেওয়ার নির্দেশ দেন পুলিশ সুপারকে। এরপর বাবুগঞ্জ থানা পুলিশ দায়সারা এজাহার দিয়ে সময়ক্ষেপণ করে। পরবর্তীতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আইনজীবী পান্না আদালতে নারাজি দাখিল করেন। পুলিশ কর্মকর্তাদের চাপের কারণে বিচারক সেই নারাজি আবেদন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠান। ওই আদালতে নারাজি শুনানিকালে এএসপি পদ মর্যাদার কর্মকর্তারা আদালতে উপস্থিত হয়ে চাপ সৃষ্টি করেন। এমনকি আইনজীবী পান্নাকে হুমকি দেওয়া হয়। ওই বছরের ৭ আগস্ট মামলাটি না মঞ্জুর করেন চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।’
আইনজীবী পান্না বলেন, ‘ওই আদেশের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আনা হলে পুলিশ বিভাগ থেকে আদালতের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়। এ কারণে রিভিশন মামলাটি বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতে পাঠানো হয়। আদালতে মামলার শুনানিকালে পুলিশ বিভাগ থেকে ৫০ জন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তখন আইনজীবীরা আমাকে নানাভাবে হুমকি দেন। সেইসঙ্গে বিচারকাজ থেমে যায়। গত ২৯ আগস্ট আগের আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন মামলার আবেদন করেন বাদী। ওই দিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার মামলাটি গ্রহণ করেন আদালত। সেইসঙ্গে নারাজি আবেদন না মঞ্জুরের আদেশ বাতিল করেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন পাস করেছিল সরকার। এরপর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নিহত হয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। পরে এই আইন বাতিলের দাবি তুলেছিল পুলিশ। এ অবস্থায় বিচার কার্যক্রম চলেনি।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com