আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও সদ্য সাবেক সংসদ সদস্যের চাচা ও তার লোকজন আদিবাসীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদের জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আদিবাসীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের ক্ষমতায় তাদের প্রায় ১৫০ একর জমি দখল করেছে দিনাজপুর-৬ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক ও তার চাচা জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন।
তাদের অভিযোগ, আদিবাসীদের জায়গা দখল করে এবং সরকারি খাস জায়গা দখল করে ক্ষমতার দাপটে ‘স্বপ্নপুরী’ নামে পিকনিক স্পট তৈরি করেছেন চাচা-ভাতিজা।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার খালিপপুর এলাকাসহ আশপাশের এলাকার আদিবাসীরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নবাবগঞ্জ উপজেলার খালিপপুর গ্রামের মৃত জেঠা হেমরমের ছেলে গণেশ হেমরম। পরে প্রেসক্লাবের সামনে শতাধিক আদিবাসীর অংশগ্রহণে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক এমপি শিবলী সাদিক ও তার চাচা জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আদিবাসী ও সরকারি জমি দখলে জড়িত। তাদের অধীনে একটি ‘গুণ্ডা বাহিনী’ রয়েছে, যার সদস্য ৩৫ থেকে ৪০ জন। দীর্ঘদিন ধরেই তারা আদিবাসীদের জমি দখলের সঙ্গে জড়িত। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকায় আদিবাসীরা তাদের ন্যায্য দাবিতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি। শিবলী সাদিক ও দেলওয়ার হোসেনের অত্যাচারে শত শত আদিবাসী এলাকা ছাড়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, অনেককেই মারধর ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। এ জন্য ছয়টি পৃথক মামলা করেছেন আদিবাসীরা। যাতে শিবলী সাদিক, তার ছোট ভাই নবাবগঞ্জ উপজেলার সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান তাজওয়ার মোহাম্মদ ফাহিম, চাচা দেলওয়ার হোসেনের ছেলে তাওয়ার মোহাম্মদ তাছিম, রাফসান জাসি, নাফিজ ইমতিয়াজসহ অনেককেই আসামি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ১৬ বছরে ছয়টি আদিবাসী পরিবারের ৭২ দশমিক ৬১ একর জমি, শিবপুর মৌজার সরকারি ৪৯ দশমিক ৪৬ একর ও খালিপপুর মৌজার ৩৬ একর জমি দখল করে নিয়েছেন শিবলী সাদিক, দেলওয়ার হোসেনরা। জমিগুলো তাদের পিকনিক স্পট স্বপ্নপুরীর সঙ্গে যুক্ত করেছে। জমি দখলের ঘটনায় উকিল হেমরম, মানিক মার্ডি, খুকুমনি হেমরম, অখিল হেমরম, লুইস হাসদা, সলেমন মার্ডি বাদী হয়ে আদালতে ছয়টি মামলা করেছেন। জমি দখলের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন সব কিছু জানলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও এমপি ও তার চাচার পরিবারের দাপট এখনও কমেনি। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সাবেক এমপি দেলোয়ার ও তার চাচা দেলোয়ার হোসেনের গুণ্ডা বাহিনী আমাদের নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। আমাদের বসবাসের জন্য অবশিষ্ট জমিগুলোও তারা দখল করতে চায়। এ বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে থানা পুলিশ অভিযোগ নেয়নি। আমাদের ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, প্রায় ৩৫ বছর আগে নবাবগঞ্জ উপজেলার আফতাবগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় দেলোয়ার হোসেনের আমাদের ৮-৯টি পরিবার দেশত্যাগ করে ভারতে চলে গেছে। ২০২৪ সালের ২ আগস্ট নবাবগঞ্জ উপজেলার কুশদহ ইউনিয়নের হিলিরডাঙ্গা হাড়িদহ গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে শিবলী সাদিক ও দেলোয়ার হোসেনের গুণ্ডাবাহিনীর হাতে ঢদু সরেন নামে এক আদিবাসী নিহত হন। এই ঘটনায় ঢদু সরেনের ছেলে রবি সরেন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে কথা হলে নবাবগঞ্জ থানার ওসি তাওহীদুল ইসলাম বলেন, জমি দখলের বিষয়ে আদিবাসীরা আমার কাছে এসেছিল। তাদের পূর্বের জমিজমা দখল সংক্রান্ত মামলা রয়েছে। এ জন্য একই বিষয়ে পুনরায় মামলা নেওয়া হয়নি।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, স্বপ্নপুরীর ভেতরে কিছু সরকারি জায়গা রয়েছে। কিছু সমস্যার কারণে সেই জমিগুলো উদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে জমিগুলো উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কথা হলে স্বপ্নপুরীর স্বত্বাধিকারী ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেন দাবি করেন, অনুমতি সাপেক্ষে আদিবাসীদের কাছ থেকে এসব জমি কেনা হয়েছে। পরে কিছু আদিবাসী জমিগুলোর বিষয়ে দাবি তুলেছে, তারা মামলাও করেছে। আদালতে মামলা রয়েছে, মামলায় তারা জমি পেলে ছেড়ে দেওয়া হবে। তবে স্বপ্নপুরীর ভেতরে কোন সরকারি জমি নেই।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com