Monday, May 19, 2025

সবার চাহিদা নতুন নোট


ঈদুল ফিতরের ছুটি শুরু হচ্ছে আগামী ১০ এপ্রিল থেকে। ফলে ৯ এপ্রিল মঙ্গলবার শেষ কার্যদিবস। তাই ছুটির আগে ব্যাংকগুলোতে গ্রাহকদের দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। আর নগদ টাকা উত্তোলনের চাপে সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তারা।

সোমবার (৮ এপ্রিল) রাজধানীর ব্যাংকপাড়া মতিঝিল ও দিলকুশা, দৈনিক বাংলা, পল্টনসহ বিভিন্ন এলাকার ব্যাংকের শাখায় সকাল থেকেই ক্যাশ ও জমা কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন দেখা গেছে। স্বাভাবিক দিনের সঙ্গে তুলনা করলে তিন-চার গুণ বেশি লেনদেন। চালানপত্র, ডিপোজিটসহ বিভিন্ন সেবার বিল জমা দেয়ার লাইনের সঙ্গে টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে। বেশির ভাগই নগদ টাকা তুলছেন। গ্রাহককে চাহিদা মতো টাকা দেওয়া হচ্ছে, নগদ টাকার কোনো সংকট নেই। তবে সংকট সৃষ্টি হয়েছে নতুন নোটের ক্ষেত্রে। সবাই নতুন নোট চাইছেন। এই অতিরিক্ত গ্রাহকের চাপে ক্যাশ কাউন্টারের কর্মকর্তাদের বেশ হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সোনালী ব্যাংকের গ্রাহক জানান, ঈদের সকালে সালামির ক্ষেত্রে ও ঈদের সময় নানা কাজে নতুন নোট ব্যবহার করা হয়। তােই প্রতিটি মানুষেরই চাহিদা থাকে নতুন নোট উত্তোলনের।

আরেক গ্রাহক জানান, তিনি ঢাকার স্থানীয়। এখনও ঈদের কেনাকাটা হয়নি। মার্কেটগুলোয় ভিড় থাকায় মার্কেটমুখি হয়নি। আজ রাতে কেনাকাটার ইচ্ছে আছে এজন্য টাকা তুলতে এসেছেন। তিনিও প্রায় হাজার দশেক টাকার নতুন নোটের চাহিদা দিয়েছেন ব্যাংকে।

সোনালী ব্যাংক মতিঝিল শাখার এক কর্মকর্তা জানান, ঈদের শেষ মুহুর্ত হওয়ায় গ্রাহকের উপস্থিতি বেশি রয়েছে। আগামীকালও ভিড় বেশি হবে। তবে শেষ দিকে টাকা জমার চেয়ে উত্তোলনের পরিমাণ বেশি হয়। আর সবচেয়ে বড় ঝামেলা হলো নতুন নোট। সবাই নতুন নোট চায়। তবে এতো নোট দেয়া তো সম্ভব নয়। তাই সবাইকেই কমবেশি করে দিয়ে মেনেজ করতে হচ্ছে।

এদিকে ঈদুল ফিতরের ছুটির সময় গ্রাহকের নির্বিঘ্নে লেনদেন নিশ্চিতে ব্যাংকের এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একই সঙ্গে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), পয়েন্ট অব সেল (পিওএস), ই-পেমেন্ট গেটওয়েসহ সব ডিজিটাল সেবা নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস ডিপার্টমেন্ট এক নির্দেশনায় বলা হয়, এটিএম বুথ, পয়েন্ট অব সেল (পিওএস), ইন্টারনেট ব্যাংকিং, ই-পেমেন্ট গেটওয়ে, মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্ন লেনদেন নিশ্চিত করতে হবে। এসব লেনদেনে কোনোভাবেই গ্রাহক যেন হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

নির্দেশনায় সার্বক্ষণিক এটিএম সেবা চালু রাখা, বুথের কারিগরি ত্রুটি দ্রুততম সময়ে সমাধান করা এবং বুথে সার্বক্ষণিক পাহারাদারদের সতর্ক অবস্থানসহ অন্যান্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক পিওএস সেবা নিশ্চিত করা, জাল-জালিয়াতি রোধে মার্চেন্ট ও গ্রাহককে সচেতন করতেও ব্যাংকগুলোকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এছাড়া ই-পেমেন্ট গেটওয়ের ক্ষেত্রে কার্ডভিত্তিক ‘কার্ড নট প্রেজেন্ট’ এবং অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেনের ক্ষেত্রে ‘টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন’ ব্যবস্থা চালু রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে পরের দিন বুধবার (১০ এপ্রিল) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। আর বাংলাদেশের কোথাও চাঁদ দেখা না গেলে বুধবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে ঈদ উদযাপিত হবে আগামী বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল)।

এবারের ঈদুল ফিতরের সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি পহেলা বৈশাখের ছুটি যুক্ত হয়েছে। ফলে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বন্ধ থাকছে ব্যাংক ও আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানও।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles