Saturday, May 17, 2025

সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় থ্রি-পিস ও লেহেঙ্গা 


নীলফামারীতে জমে উঠেছে ঈদবাজার। বেড়েছে ক্রেতা সমাগম। প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহরের বিপণিবিতানগুলোর পাশাপাশি ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। এবার নারীরা শাড়ির চেয়ে ভারতীয় থ্রি-পিসের দিকে ঝুঁকেছেন। নতুন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ নকশার দেশি-বিদেশি থ্রি-পিস তরুণী ও কিশোরীদের নজর কেড়েছে। তরুণ ও কিশোরদের মন মজেছে দেশি পাঞ্জাবি ও টি-শার্টে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। এবার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় থ্রি-পিস। পাশাপাশি ভারতীয় নায়রা, গারারা, সারারা, কাতান ও লেহেঙ্গা বেশি কিনছেন ক্রেতারা। তবে ক্রেতারা বলছেন, কাপড়ের দাম একটু বেশি রাখা হচ্ছে। ফলে কেনাকাটা করতে এসে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। 

মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) শহরের নিউমার্কেট, পৌর সুপার মার্কেট, মকবুল হোসেন সুপার মার্কেট, মুরাদ আলী প্লাজা, সোলেমান প্লাজা, বড় বাজার, স্মৃতি গার্মেন্টস, প্রিয়ম ক্লথ স্টোরসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে ইফতারের পর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় দেখা গেছে। তবে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ছিল উপচেপড়া ভিড়।

এবার নারীরা শাড়ির চেয়ে থ্রি-পিসের দিকে ঝুঁকেছেন

ব্যবসায়ীরা জানান, রমজানের প্রথম দিকে ক্রেতা-সমাগম কম থাকলেও এখন বেড়েছে। নিজেদের পছন্দের জামা-কাপড়, প্রসাধনী ও জুতা কিনিতে বিভিন্ন দোকানে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন ক্রেতারা। 

বড় বাজারের প্রিয়ম ক্লথ স্টোরের স্বত্বাধিকারী জাভেদ আকতার নান্নু বলেন, ‘এ বছর ঈদবাজারে দেশি সুতি থ্রি-পিসের সঙ্গে লেহেঙ্গা, বুটিকস, চোয়া, আড়ং, জিপসি, ভারতীয় থ্রি-পিস ও নাইরাকাটা ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। ভারতীয় জারা, সারারা, ও থ্রি-পিস অনেকে পছন্দ করে কিনছেন। পাশাপাশি দেশি পোশাকের চাহিদাও রয়েছে। এছাড়া অরগেনজা, মেঘা, চান্দ্রিয়া, জয়পুরী, সারারা ও গারারা বেশি বিক্রি হচ্ছে। কাতান, বাড়িস, কারচুপি, বালাহার, মটকা এবং কাশ্মীরি কাতানেরও চাহিদা আছে। বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে।’

তরুণ ও কিশোরদের মন মজেছে দেশি পাঞ্জাবি ও টি-শার্টে

এবার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ভারতীয় থ্রি-পিস উল্লেখ করে বড় বাজারের স্মৃতি ক্লোথ অ্যান্ড গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী মকবুল হোসেন বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবার বিক্রি বেড়েছে। দাম কিছুটা বেশি হলেও ক্রেতাদের সামর্থ্যের মধ্যেই আছে। নায়রা, গারারা, সারারা, কাতান, ভারতীয় থ্রি-পিস সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে। শাড়ির মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফোর প্লে, মণিপুরী ও কাশ্মীরি কাতান বেশি চলছে। এছাড়া ইন্ডিয়ান লেহেঙ্গা বিক্রি হচ্ছে বেশ।’

কোন পোশাকের দাম কেমন জানতে চাইলে শহরের জামিল গার্মেন্টসের প্রোপাইটার আব্দুর রহিম বলেন, ‘ফোর প্লে ও মণিপুরী শাড়ি বিক্রি হচ্ছে তিন থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ভারতীয় লেহেঙ্গা পাঁচ থেকে ১০ হাজার, নায়রা, গারারা ও সারারা পাঁচ থেকে আট হাজার, সুতি থ্রি-পিস এক হাজার ৫০০ থেকে পাঁচ হাজার, ভারতীয় জিপসি সাত থেকে ৯ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। তরুণ ও কিশোরদের মন মজেছে দেশি পাঞ্জাবি ও টি-শার্টে। তবে কিশোরী ও নারীরা বেশি কিনছেন ভারতীয় থ্রি-পিস। পাশাপাশি শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি ফতুয়া ও শিশুদের জামা কাপড় কিনছেন ক্রেতারা। বলা যায়, ঈদের বাজার জমে উঠেছে।’

প্রসাধনী ও জুতা কিনিতে বিভিন্ন দোকানে বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় করছেন ক্রেতারা

শহরের মকবুল হোসেন সুপার মার্কেটে কেনাকাটা করতে এসেছেন সদরের রামনগর ইউনিয়নের বাহালীপাড়া গ্রামের রিপন ইসলাম (২৮)। তিনি বলেন, ‘ঈদের আর কয়েকদিন বাকি। পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা প্রায় শেষের দিকে। এখন আমার জন্য পাঞ্জাবি কিনতে এসেছি। পছন্দমতো একটি কিনেছি।’

একই মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা জেলা শহরের বাসিন্দা শাহিদা সরকার (৫০) বলেন, ‘প্রত্যেক দোকানে পছন্দের কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। স্বল্প আয়ের মধ্য থেকে সাধ্যমতো শাড়ি কিনতে পেরে ভালোই লাগছে। ব্যবসায়ীরা ভালো ব্যবহার করছেন। তবে অন্যান্য বারের চেয়ে এবার শাড়ির দাম একটু বেশি।’

রমজানের প্রথম দিকে ক্রেতা-সমাগম কম থাকলেও এখন বেড়েছে

গত বছরের চেয়ে তুলনামূলক এবার পোশাক–আশাকের দাম বেশি বলে জানালেন নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এরপরও ঈদে কমবেশি সবাইকে পরিবারের জন্য কিছু না কিছু কিনতে তো হবেই। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা নিচ্ছে। তাই বাজার স্থিতিশীল রাখতে বাজার তদারকির জন্য জেলা প্রশাসন ও দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানাই।’

ঈদ সামনে রেখে শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতান, দোকান ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘জনগণের জানমাল রক্ষায় সবসময় সতর্ক আছে পুলিশ। এছাড়া যানজট নিরসনে বিভিন্ন পয়েন্টে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ।’

নিজেদের পছন্দের জামা-কাপড় কিনছেন ক্রেতারা

জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর বলেন, ‘ইতোমধ্যে জেলার ছয় উপজেলায় সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করছে পুলিশ। আশা করছি, ঈদের কেনাকাটায় কোনও বিপণিবিতান ও দোকানে অপ্রীতিকর কিছু ঘটবে না।’



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles