Tuesday, December 3, 2024

রমেকে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়া সেই ফাতেমার মৃত্যু


রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের ভুলে ভিন্ন গ্রুপের রক্ত দেওয়া রোগী ফাতেমা বেগম মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়েইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

বুধবার (১০ জুলাই) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মারুফ জিয়াম। এদিন বাদ এশা গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ভাতগ্রাম ইউনিয়নের খোদাবকস এলাকায় তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

ফাতেমা পরিবার নিয়ে রংপুর নগরীর কেরানীপাড়া চৌরাস্তায় থাকতেন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-রমেক ও ফাতেমার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২১ জুন অস্ত্রোপচারের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন ফাতেমা। রোগীকে ট্রান্সমিশন বিভাগে নিয়ে পরীক্ষার পর জানানো হয়, তার রক্তের গ্রুপ ‘এ’ পজিটিভ। স্বজনরা ‘এ’ পজিটিভ রক্ত সংগ্রহ করেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা ক্রস ম্যাচ করে নিশ্চিত করে রক্তের গ্রুপ ঠিক আছে বলে জানায়। ২২ জুন ফাতেমার অস্ত্রোপচার হয়। 

সংগ্রহ করা রক্তের মধ্য থেকে এক ব্যাগ রক্ত শরীরে প্রবেশ করার পরপরই রক্তক্ষরণ, শরীর ফুলে যাওয়া, খিঁচুনিসহ বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া শুরু হয় তার। কারণ জানতে না পেরে পরদিন চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেন, আবার অস্ত্রোপচার করবেন। তাই আবার স্বজনদের রক্ত সংগ্রহ করতে বলা হয়।

স্বজনরা এবারও তিন ব্যাগ ‘এ’ পজিটিভ রক্ত সংগ্রহ করেন। কিন্তু এবার আর ক্রস ম্যাচ করার সময় ব্লাড ম্যাচ হয়নি। এতে চিকিৎসকদের সন্দেহ হয়। এরপর হাসপাতাল ও বাইরে দুই জায়গা থেকে ফাতেমার রক্ত পরীক্ষা করে জানা যায়, তার রক্তের গ্রুপ আসলে ‘ও’ পজিটিভ। চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন, রক্তের গ্রুপ মিস ম্যাচ হওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। 

এরপর ফাতেমাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ২৯ জুন পর্যন্ত আইসিইউতে রাখার পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৩০ জুন তাকে ঢাকায় নেওয়া হয়। এরপর ৯ জুলাই দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফাতেমার মৃত্যু হয়। 

এর আগে ভুল গ্রুপ নির্ণয়কারী ওই চিকিৎসকের শাস্তির দাবিসহ মায়ের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার বহনের দাবি জানিয়ে ৭ জুলাই ছেলে আব্দুল্লাহ আল মারুফ জিয়াম তার সহপাঠী, বন্ধু ও জেলা স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে রমেক হাসপাতাল ঘেরাও করে চার ঘণ্টা অবস্থান করেন। 

এসময় আব্দুল্লাহ আল মারুফ জিয়াম অভিযোগ করেন, ভুল চিকিৎসায় তার মায়ের জীবন এখন সংকটাপন্ন। তার জন্য মেডিসিন, গাইনি, নেফ্রো, গ্যাস্ট্রোর ডাক্তার একসঙ্গে বসে বোর্ড করে চিকিৎসা করাতে হবে। একটি আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করতে হবে। শুরু থেকে সুস্থ হওয়া পর্যন্ত যত টাকা খরচ হবে, তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। যাদের জন্য তার মায়ের আজ এই অবস্থা, তাদের বিচারের দাবি জানিয়েছিলেন জিয়াম।

এসময় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মাদ ইউনুস আলী দাবিগুলো লিখিতভাবে নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বাস দিলে তারা অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেন। 

ফাতেমার ছেলে আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, ‘ভুল গ্রুপের রক্ত মায়ের শরীরে দিয়ে চিকিৎসকেরা তাকে মেরে ফেলেছে। আমার মা’কে হত্যা করেছে রংপুর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। আমাকে এতিম করেছে। সহায়-সম্বল যা ছিল সব শেষ করেও মাকে বাঁচাতে পারলাম না। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। টাকা ও সঠিক চিকিৎসার অভাবে আজ মা হারালাম। আমি এর সঠিক বিচার চাই।’ 

এ ঘটনায় ৩ জুলাই হেমাটোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক একেএম কামরুজ্জামানকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়নি। 

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মাদ ইউনুস আলী বলেন, ‘তদন্ত কমিটি করেছিলাম, কমিটির সদস্যরা ব্যস্ত ছিল। তাই প্রতিবেদন দিতে পারেনি। আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে বসা হবে। এতে দায় কার সেটি আগামী কালকে পাওয়া যাবে।’ 

তবে ফাতেমা বেগমের ছেলের ক্ষতিপূরণের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে পরিচালক এবিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles