বিরাট কোহলির অনবদ্য ব্যাটিংয়ে স্কোরবোর্ডে লড়াইয়ের পুজি পেয়েছিল রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। তবে দুই ওপেনার সুনীল নারাইন ও ফিল সল্টের বিধ্বংসী ইনিংসের পর ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ফিফটিতে সহজ জয় তুলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। ফলে কোহলিদের ৭ উইকেটে হারিয়েছে দুবারের চ্যাম্পিয়নরা।
শুক্রবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট ১৮৫ রান তোলে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। জবাবে ১৬.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে সহজ জয় পায় কলকাতা। এতে চলতি আইপিএলে টানা দ্বিতীয় ম্যাচ জিতল শ্রেয়াস আইয়ারের দল।
এদিন ব্যাটিংয়ে নেমে ইনিংসের প্রথম বলেই মিচেল স্টার্ককে চার মেরে শুরু করেন বিরাট কোহলি। তবে অপর প্রান্তে দাঁড়াতে পারেননি অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি। দ্বিতীয় ওভারেই দলীয় ১৭ রানে হর্ষিত রানার শিকার হন ডু প্লেসি। ৬ বলে ৮ রান করে স্টার্কের হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এরপর ক্যামেরন গ্রিনকে সাথে নিয়ে বেঙ্গালুরুর ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান কোহলি। ইনিংসের নবম ওভারে ক্যামেরন গ্রিন আন্দ্রে রাসেলের শিকার হলে ভাঙে তাদের ৬৫ রানের জুটি। রাসেলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২১ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় করেন ৩৩ রান।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ম্যাক্সওয়েলের সাথে দ্রুত রান তুলতে থাকেন কোহলি। ব্যক্তিগত ১১ ও ২১ রানে দুইবার জীবন পেলেও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ এই অজি ব্যাটার। ১৯ বলে তিনটি চার ও এক ছক্কায় ২৮ রান করে সুনীল নারাইনের বলে রিঙ্কু সিংকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল।
এরই মাঝে ৩৬ বলে নিজের ফিফটি তুলে নেন কোহলি। এই ম্যাচে বেঙ্গালুরুর হয়ে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ডে ক্রিস গেইলকে (২৩৯ ছক্কা) ছাড়িয়ে যান এই ডানহাতি ব্যাটার। এরপর রজত পাতিদার ও অনুজ রাওয়াত অল্পতেই ফিরলেও শেষদিকে দীনেশ কার্তিককে নিয়ে ঝড় তোলেন কোহলি।
ষষ্ঠ উইকেটে মাত্র ১৫ বলে ৩১ রানের জুটি গড়েন তারা। ইনিংসের শেষ বলে রানআউট হওয়ার আগে মাত্র আট বলে তিনটি ছক্কায় ২০ রান করেন কার্তিক। পুরো ইনিংস বাইশ গজে কাটানো কোহলি অপরাজিত ছিলেন ৫৯ বলে ৮৩ রান করে। তার ইনিংসে ছিল চারটি করে চার ও ছক্কা। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৮২ রানে থামে রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
কলকাতার হয়ে দুইটি উইকেট শিকার করেন আন্দ্রে রাসেল ও হর্ষিত রানা।
জবাব দিতে নেমে কলকাতাকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন ফিল সল্ট ও সুনীল নারাইন। তাদের ব্যাটে মাত্র ৩.৩ ওভারেই দলীয় পঞ্চাশ রান তুলে ফেলে কলকাতা। এরপর পাওয়ারপ্লের ছয় ওভারে ৮৫ রান তুলে ফেলেন তারা। যা তাদের পাওয়ারপ্লের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
অবশ্য সপ্তম ওভারেই মায়াঙ্ক ডাগারের শিকার হন নারাইন। আউট হওয়ার আগে মাত্র ২২ বলে দুইটি চার ও পাঁচ ছক্কায় ৪৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন তিনি। নারাইন আউট হওয়ার পর বেশিক্ষণ টেকেননি সল্টও। দলীয় ৯২ রানে বিজয়কুমার বিশাকের বলে ক্যামেরন গ্রিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ২০ বলে সমান দুইটি করে চার ও ছক্কায় ৩০ রান করে থামেন এই ইংলিশ তারকা।
এরপর রান তাড়া অনেকটাই সহজ হয়ে যায় কলকাতার জন্য। ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার দলকে এগিয়ে নিয়ে যান জয়ের বন্দরে। ব্যক্তিগত পাঁচ রানে জীবন পান শ্রেয়াস আইয়ার। তার ক্যাচ ফেলেন যশ দয়াল। ঝড়ো ইনিংস খেলেন ভেঙ্কটেশ। ইনিংসের ১১তম ওভারে আলজারি জোসেফের ওভার থেকে সমান দুইটি করে চার ও ছক্কায় ২০ রান তোলেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার।
ইনিংসের ১৫তম ওভারে ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নেন ভেঙ্কটেশ। মাত্র ২৯ বলে ফিফটি করেই পরের বলে আউট হন তিনি। আউট হওয়ার আগে তিনটি চার ও চারটি ছক্কায় ৩০ বলে ৫০ রান করেন তিনি। অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। তিনি করেন ২৪ বলে ৩৯ রান। শেষ পর্যন্ত সাত উইকেটের জয় পায় কলকাতা।
বাংলাদেশ জার্নাল/এসএ