Monday, May 19, 2025

ফেসবুকে ‘আপত্তিকর’ ছবি-ভিডিও, ষড়যন্ত্র বলছেন বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী


সদ্য বহিষ্কৃত ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা যুব মহিলা লীগ সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইসরাত জাহান তনুর ‘আপত্তিকর’ কিছু ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওতে থাকা ওই নারী ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসরাত জাহান তনু।

ভাইরাল হওয়া অপর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, এক ব্যক্তির সঙ্গে তিনি একই কক্ষে অবস্থান করছেন। তবে তার দাবি, উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ গ্রুপ তার সাবেক স্বামী খাইরুল ইসলাম মনির ও তথাকথিত কিছু সাংবাদিক দিয়ে আপত্তিকর ফেক ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে ছড়িয়ে দিয়েছে। এতে তার সম্মানহানি করার পাশাপাশি তাকে নির্বাচন থেকে সরানোর চেষ্টা করছে প্রতিপক্ষরা। প্রতিকার পেতে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা বলে এবং অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১ এপ্রিল সংগঠনবিরোধী ও শৃঙ্খলাপরিপন্থি কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের দলীয় প্যাডে মুক্তাগাছা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি পদ থেকে ইসরাত জাহান তনুকে বহিষ্কার করা হয়। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) মোহাম্মদ রাকিবুল হাসান নামের এক ফেসবুক আইডি থেকে তনুর মদ্যপান ও ইয়াবা সেবনের স্থিরচিত্র ও পারিবারিক একটি অশ্লীল ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।

ফেসবুকের সেই ছবি ও ভিডিও যাচাই-বাছাই করে দেখা যায়, মদ্যপান ও ইয়াবা সেবনের ছবি দুটি ভুয়া এবং ২০ সেকেন্ডের ভিডিওটি তার সাবেক স্বামীর মোবাইলে ধারণ করা একটি পুরাতন ভিডিও।

বহিষ্কৃত ওই যুব মহিলা লীগ নেত্রীর দাবি, তার সাবেক স্বামী খাইরুলের সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভে এবং প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন বিভিন্ন সাংবাদিক দিয়ে সামাজিকভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন। এবার ফেসবুকে ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্নভাবে মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে ব্ল্যাকমেল শুরু করেছেন। তাদের অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানালে এসব ভুয়া ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দেয়।

এদিকে এ ঘটনার প্রতিকার পেতে থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন ইসরাত জাহান তনু। এ ছাড়া বিষয়টি নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও আইসিটি আইনে মামলা করার কথাও জানান ওই নেত্রী।

ইসরাত জাহান তনু বলেন, ‘আমার বহিষ্কার হওয়ার পেছনে এবং নির্বাচনের প্রার্থিতা থেকে সরাতে আমার সাবেক স্বামী খাইরুল ইসলাম মনিরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন। আমাকে ঘায়েল করতে ২০২২ সালের ভারতের একটি ফেসবুকের ভিডিও থেকে নেওয়া ছবি আমার নামে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে। যা সম্পূর্ণ ফেক ও ভিত্তিহীন। আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই কিছু মানুষ ওঠেপড়ে লেগেছে। এ বিষয়ে আমি থানায় জিডি করেছি এবং আইসিটি আইনে মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। বিষয়টি জেলা ও কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের নেতৃবৃন্দদের অবহিত করেছি। আশা করি, ন্যায়বিচার এবং পদ ফিরে পাবো।’

এদিকে, এ বিষয়ে কথা বলতে খাইরুল ইসলাম মনিরের মোবাইলে ফোন দিলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ ছাড়া ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একাধিক আইডির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক বিলকিস খানম পাপড়ি জানান, তার (ইসরাত জাহান তনু) বহিষ্কারের বিষয়টি সঠিক কিন্তু ফেসবুকে ছড়ানো ছবি ও ভিডিওগুলো ভুয়া। সেগুলো তনুর না। যা ইতোমধ্যে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। তার পদের বিষয়েও সুপারিশ করা হয়েছে।

মুক্তাগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহমেদ বলেন, ‘বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles