Monday, May 19, 2025

পুঁজিবাজারে ভি-নেক্সটের মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্যোগ


পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে স্টক এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মে ভি-নেক্সটের কার্যকারিতা নিয়ে গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (৩১ মার্চ) ডিএসই টাওয়ারের ভিআইপি লাউঞ্জে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার (১ এপ্রিল) ডিএসই থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ৷

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ শামসুদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের উন্নয়নের জন্য প্রচুর বিনিয়োগ প্রয়োজন। কিন্তু, প্রয়োজনীয় পরিমাণ অর্থের অভাবে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ হচ্ছে না। এ সমস্যা সমাধানে পুঁজিবাজারকে কাজে লাগানোর জন্য ভি-নেক্সট প্ল্যাটফর্ম হতে পারে অন্যতম মাধ্যম। এটা নতুন কিছু না। অনেক আগে থেকেই বিষয়টা ছিল। শুধু মাঝখানে করোনা এবং অন্যান্য কারণে বন্ধ ছিল। ২০২০ সালে ডিএসই ভি-নেক্সট নিয়ে একটি প্রগ্রেস রিপোর্ট দিয়েছিল। সেখানে কী কী কাজ করা লাগবে, সে বিষয়ে বলা আছে। এছাড়া, ভি-নেক্সট সম্পর্কিত ওয়েবসাইটসহ আরো অনেক বিষয় বলা আছে। তাই, আর পিছনের কথা বলব না। এখন শুধু এগিয়ে যেতে হবে। এজন্য প্রথমে বিএসইসির সঙ্গে ডিএসইর বৈঠকের যে বিষয় আছে, সেগুলো এবং ২০২০ সালের প্রেজেন্টেশনের বিষয়গুলো নিয়ে কাজ শুরু করতে হবে। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে, যে ২২টি কোম্পানি নিয়ে শুরু হওয়ার কথা ছিল, তারা কেন শুরু করতে পারেনি, সেটা তাদের কাছ থেকে জানতে হবে। তারা যদি বলে, ডিএসই প্রস্তুত ছিল না, সেটা ছাড়া আর কী কারণ ছিল, তা তাদের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে। তৃতীয় বিষয় হচ্ছে, ভি-নেক্সটে যুক্ত হতে হলে বেশ কিছু নিয়ন্ত্রক আইন মেনে কাজ করতে হবে। সেই বিষয়টাও আমাদের খেয়াল রেখে কাজ শুরু করতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান বলেন, শেনঝেন স্টক এক্সচেঞ্জের সহায়ক সংস্থা দ্বারা পরিচালিত একটি মূলধন ম্যাচমেকিং প্ল্যাটফর্ম, যা ইক্যুইটি/ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ও উদীয়মান প্রতিষ্ঠানের মূলধন সরবরাহ ও কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে। বর্তমানে এটি চীনসহ ৪৭টিরও বেশি দেশে ভি-নেক্সট প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে এবং এসব দেশের সম্ভাবনাময় সংস্থাসমূহ ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন ও সম্প্রসারণে প্রয়োজনীয় মূলধন চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। অনলাইন প্রযুক্তিনির্ভর ভি-নেক্সট প্ল্যাটফর্ম সমগ্র বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷ একটি দেশের সম্ভাবনাময় খাতসমূহ বৈদেশিক অর্থায়নের মাধ্যমে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে ভি-নেক্সট সেতুবন্ধন রূপে কাজ করছে। এটি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পুঁজিবাজারের জন্য দুটি সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রথমত, এসএমই কোম্পানিগুলোর জন্য অর্থায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং দ্বিতীয়ত, পুঁজিবাজারে ইস্যুকারী ও বিনিয়োগকারী উভয়কে উপকৃত করার জন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির উন্নয়ন। ভি-নেক্সটের মাধ্যমে ব্যাপক বৈদেশিক বিনিয়োগ হবে।

স্টক এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্মে ভি-নেক্সটের কার্যকারিতা বাস্তবায়নের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসই’র সিনিয়র ম্যানেজার মো. শাহাদাত হোসেন৷ তিনি ভি-নেক্সটের উদ্দেশ্য, বৈশিষ্ট্য, নেক্সট গ্লোবাল নেটওয়ার্ক, নেক্সট কমিউনিটি, নেক্সট অফার: এন্টারপ্রাইজ, নেক্সট ও ডিএসই, নেক্সট ব্যবহারকারীদের নির্দেশিকা এবং নেক্সটের অপারেশনাল প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোকপাত করেন৷

মূল প্রবন্ধের ওপর বক্তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন কোম্পানি, এসএমই, স্টার্টআপ, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল ভি-নেক্সট প্লাটফর্মে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে বিভিন্ন অভিমত এবং এর সুবিধা তুলে ধরেন। বক্তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন, আমাদের প্রধান কাজই হচ্ছে মার্কেটকে বড় করা। যারা আসতে চায় না, তাদেরকে আনতে হবে। কেন আসতে চায় না, সেটাও জানতে হবে। নেক্সট প্ল্যাটফর্ম একটি আন্তর্জাতিক মানের প্রযুক্তি, যা কৌশলগত বিনিয়োগকারীদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। ভি-নেক্সট চালু হলে বাংলাদেশে মানসম্পন্ন কোম্পানির সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং নেক্সটভুক্ত কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অথনীতি তথা পুঁজিবাজার উন্নয়নে গুরুত্বপূণ ভূমিকা রাখবে৷



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles