Friday, October 4, 2024

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় কমিউনিটিকে কার্যকর করা জরুরি


বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ, যেখানে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিকম্প, নদীভাঙন এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রায় নিয়মিত ঘটে। দুর্যোগের সময় ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য একটি কার্যকর ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন হয় এবং এই ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়ক, তবে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যকরভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলের স্থানীয় মানুষজন তাদের পরিবেশ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা রাখেন। তারা দুর্যোগের সময় কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হয়, কোথায় আশ্রয় নিতে হয় এবং কোন কোন সম্পদগুলো ব্যবহারের উপযুক্ত, সে সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। এই স্থানীয় জ্ঞান দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সহায়ক হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিশেষ ধরনের স্থাপত্য ব্যবহার করে, যা স্থানীয়ভাবে প্রমাণিত কার্যকর পদ্ধতি। এছাড়া, দুর্যোগের সময়, সময়মতো প্রতিক্রিয়া জানানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং উদ্ধার কার্যক্রম নিশ্চিত করা সম্ভব। স্থানীয় কমিউনিটির সদস্যরা প্রায়ই প্রথম প্রতিক্রিয়া প্রদানকারী হিসেবে কাজ করেন, কারণ তারা দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বসবাস করে এবং বিপর্যয়ের সময় সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারেন। অধিকন্তু কমিউনিটির সম্পৃক্ততা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সম্পদ এবং সক্ষমতার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে। স্থানীয় কমিউনিটি জানে কোথায় কোন সম্পদ রয়েছে এবং কীভাবে তা ব্যবহার করা যায়।  

উদাহরণস্বরূপ, একটি গ্রাম বা এলাকার প্রধান সড়কগুলো বন্যার সময় অকার্যকর হয়ে গেলে স্থানীয় মানুষ জানেন কোন বিকল্প পথগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া, স্থানীয় কমিউনিটি জানে কোন স্থানগুলো নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে এবং কোন বাড়িগুলো দুর্যোগের সময় সহায়ক হতে পারে।

বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কমিউনিটি অংশগ্রহণের বিদ্যমান চিত্র আলোকপাত করলে দেখা যায়, দেশে অনেক আগে থেকেই দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় কমিউনিটির অংশগ্রহণ কার্যকর রয়েছে, এর প্রাতিষ্ঠানিক অবয়ব রয়েছে।  

যেমন, ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (CPP): ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত এই কর্মসূচি স্থানীয় সম্প্রদায়কে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা প্রদান করে। CPP-র অধীনে, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা জনগণকে সতর্কীকরণ বার্তা প্রদান, নিরাপদ আশ্রয়স্থলে স্থানান্তর এবং বিপজ্জনক এলাকার লোকদের উদ্ধার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। পাশাপাশি কমিউনিটিভিত্তিক দুর্যোগ প্রস্তুতি প্রকল্প (CBDPP) স্থানীয় সম্প্রদায়কে দুর্যোগের পূর্ব প্রস্তুতি এবং ঝুঁকি হ্রাসের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এতে স্থানীয় কমিটি গঠন, মহড়া পরিচালনা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয়।

এর পাশাপাশি, বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় স্তরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি (Native Catastrophe Administration Committee-LDMC) গঠন করেছে, যা সম্প্রদায়ের সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কাজ করে। এলডিএমসির মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন এবং সাধারণ জনগণের মধ্যে একটি শক্তিশালী সংযোগ স্থাপন করা হয়। এলডিএমসি দুর্যোগের পূর্বাভাস এবং সতর্কীকরণ সম্পর্কে স্থানীয় জনগণের মধ্যে সমন্বয় এবং দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণে সহায়তা করে। এছাড়া, এলডিএমসি স্থানীয় জনগণের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বিশেষ করে, বন্যা এবং নদীভাঙন প্রতিরোধে স্থানীয় কমিটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে কমিউনিটি রেডিও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দুর্যোগের সময় স্থানীয় ভাষায় সচেতনতামূলক বার্তা প্রচার, সতর্কীকরণ এবং পুনরুদ্ধারের তথ্য প্রদান করা হয়, যা গ্রামীণ জনগণের কাছে সহজেই পৌঁছে যায়।

স্থানীয় কমিউনিটির অংশগ্রহণের বিভিন্ন পদ্ধতি চলমান থাকলেও এখনও নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান।  বাংলাদেশের অনেক গ্রামীণ অঞ্চলে শিক্ষার অভাব ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সচেতনতার সংকট রয়েছে। দুর্যোগের পূর্বাভাস, প্রস্তুতি এবং মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অনেক ক্ষেত্রেই স্থানীয়দের মধ্যে অনুপস্থিত। স্থানীয় অনেকের মধ্যেই দুর্যোগের প্রভাব, বিপদ সংকেতের মানে এবং দুর্যোগের পর কীভাবে মোকাবিলা করতে হবে, এসব বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে।

প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং কার্যকর নীতিমালার অভাব স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অনেক ক্ষেত্রে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ কেন্দ্রীয় পর্যায়ে হয়, যা স্থানীয় সম্প্রদায়ের বাস্তব চাহিদা ও সমস্যাগুলো উপেক্ষা করে।

কখনও কখনও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার নীতিমালায় অনেক সময় স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় সম্পৃক্ততার বিষয়টি গুরুত্ব পায় না। ফলে, নীতিমালা বাস্তবায়নে স্থানীয় স্তরে বিভ্রান্তি ও অসঙ্গতি দেখা দেয়। পাশাপাশি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয়  অর্থায়নের অভাব একটি বড় বাধা। স্থানীয় সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং আর্থিক সহায়তার অভাব দুর্যোগ মোকাবিলাকে জটিল করে তোলে।

বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে প্রচলিত সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ধ্যান-ধারণা স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততায় একটি বড় বাধা। অনেক ক্ষেত্রে, মহিলারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তাদের মতামত উপেক্ষা করা হয় এবং তাদের কার্যকর ভূমিকা পালন করতে দেওয়া হয় না। অধিকন্তু, স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে আস্থার অভাবও সম্পৃক্ততায় বাধা সৃষ্টি করে। দুর্যোগ ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের প্রতি অবিশ্বাস, বিশেষ করে দুর্যোগের সময় ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম এবং অব্যবস্থাপনার কারণে স্থানীয় মানুষের মধ্যে আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়। ফলে তারা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে দ্বিধা করেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা একটি জটিল প্রক্রিয়া, যা বিভিন্ন স্তরে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততার বিভিন্ন উদাহরণ রয়েছে, যা প্রমাণ করে যে এই প্রক্রিয়ায় জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ কতটা কার্যকর হতে পারে।

জাপান একটি উন্নত দেশ, যেখানে ভূমিকম্প এবং সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ খুবই সাধারণ। জাপানের স্থানীয় সম্প্রদায়ের সদস্যরা নিয়মিত দুর্যোগ প্রতিরোধ এবং মোকাবিলার জন্য প্রশিক্ষণ এবং মহড়ায় অংশ নেন। স্কুল, কলেজ এবং অফিসে নিয়মিত ভূমিকম্প মহড়া এবং সুনামি সতর্কীকরণ ব্যবস্থা পরীক্ষা করা হয়। এর ফলে, দুর্যোগের সময় জনগণের সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। স্থানীয় সরকার এবং সামাজিক সংগঠনগুলো বিপদসংকেত এবং সতর্কীকরণ ব্যবস্থা তৈরি করে, যা স্থানীয়দের সতর্ক করে এবং দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণ করতে সহায়ক হয়। যুক্তরাষ্ট্রে কমিউনিটি রেসিলিয়েন্স প্রোগ্রাম পরিচালনা করা হয়, যেখানে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে দুর্যোগ মোকাবিলার পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে স্থানীয়রা দুর্যোগের সময় কোন কোন সম্পদ ব্যবহার করতে পারবে এবং কীভাবে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো যেতে পারে তা শেখে। স্থানীয় পর্যায়ে ভলান্টিয়ার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হয়, যেখানে দুর্যোগের সময় ত্রাণ কার্যক্রম, আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা এবং পুনর্বাসনে স্থানীয়দের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়।

ইন্দোনেশিয়া একটি উন্নয়নশীল দেশ, যেখানে সুনামির ঝুঁকি অত্যন্ত উচ্চ। ২০০৪ সালের বিধ্বংসী সুনামির পর, ইন্দোনেশিয়া স্থানীয় সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করে সুনামি মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছে। ইন্দোনেশিয়ায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য বিশেষ সুনামি প্রস্তুতি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। স্থানীয় গ্রামবাসী সমুদ্রের কাছাকাছি বসবাস করায়, তাদের সুনামির সময় দ্রুত আশ্রয়স্থলে পৌঁছানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। স্থানীয় সম্প্রদায়ের নেতৃত্বে সুনামি সতর্কীকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, যেখানে সাধারণ মানুষকে সুনামির সময় বিপদসংকেত প্রদান এবং আশ্রয়স্থলে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়। এই ব্যবস্থা বিশেষভাবে কার্যকর হয়েছে, কারণ স্থানীয়রা নিজেদের পরিবেশ সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারেন।

ব্রাজিলের অনেক অঞ্চলে বন্যা একটি নিয়মিত দুর্যোগ, যা বিশেষ করে নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীকে প্রভাবিত করে।  ব্রাজিলের ফ্যাভেলা সম্প্রদায়গুলো স্থানীয়ভাবে নিজেদের বন্যা প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করেছে। তারা স্থানীয় ড্রেনেজ সিস্টেম উন্নয়ন, রাস্তা মেরামত এবং অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এছাড়াও স্থানীয়রা বন্যার সময় প্রতিবেশীদের সাহায্য করার জন্য গ্রুপ তৈরি করেছে, যা সংকটের সময় দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করে।

বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ এবং বৈশ্বিক অভিজ্ঞতার আলোকে স্থানীয় কমিউনিটির কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য বহুমুখী কৌশল গ্রহণ করা যেতে পারে। স্থানীয় সম্প্রদায়কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরও কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো জরুরি। মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট এবং সামাজিক মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে দুর্যোগের তথ্য এবং সতর্কতা ছড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে, স্থানীয় জনগণকে এসব প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান করা উচিত। স্থানীয় জনগণকে ড্রোন ও রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তির ব্যবহার শেখানো যেতে পারে, যা বন্যা বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা নির্ধারণ এবং দ্রুত পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।

স্থানীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দল গঠন করে, স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে এই দলগুলোর নেতৃত্বে রাখা যেতে পারে। এই দলগুলোর দায়িত্ব হবে দুর্যোগের সময় দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানানো এবং দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন কাজ তত্ত্বাবধান করা। এসব দল স্থানীয় প্রশাসন ও জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করবে এবং দুর্যোগের সময় জরুরি সাহায্য প্রদান নিশ্চিত করবে। এর পাশাপাশি দুর্যোগ মোকাবিলায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা উচিত। এদের স্থানীয় পর্যায়ে জরুরি সেবা প্রদান এবং পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুত করা যেতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সম্প্রদায়কে কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করার জন্য সরকারের বিভিন্ন বিভাগ এবং এনজিওগুলোর সঙ্গে সমন্বয় অপরিহার্য। স্থানীয় সম্প্রদায়কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় ভূমিকা দেওয়া উচিত। এর জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও এনজিওগুলোকে তাদের পরিকল্পনা এবং কার্যক্রমে স্থানীয় সম্প্রদায়ের মতামত এবং প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করতে হবে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য তাদের সচেতনতা ও প্রস্তুতির ওপর জোর দিতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দুর্যোগ প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণ প্রদান অত্যন্ত জরুরি। দুর্যোগ মোকাবিলার ক্ষেত্রে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, কোথায় আশ্রয় নিতে হবে, কীভাবে দ্রুত এবং নিরাপদে পরিবহন ব্যবস্থা পরিচালনা করতে হবে—এসব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। নিয়মিত মহড়া ও কর্মশালা আয়োজনের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। এই মহড়াগুলো বাস্তব পরিস্থিতিতে কীভাবে কাজ করতে হয় তা শেখাতে সাহায্য করবে। ফলে জনগণ দুর্যোগের সময় দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে।

বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিক। তাদের স্থানীয় জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং প্রযুক্তির ব্যবহার করে দুর্যোগের ক্ষতি কমানো সম্ভব। প্রশিক্ষণ, মহড়া, স্থানীয় নেতৃত্বে দল গঠন, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে স্থানীয় সম্প্রদায়কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরও কার্যকরভাবে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং এনজিওগুলোর সহায়তায় স্থানীয় সম্প্রদায়কে কেন্দ্রীয়ভাবে অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে বাংলাদেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় একটি টেকসই এবং কার্যকর পদ্ধতি গড়ে তোলা সম্ভব।

লেখক: লোক-প্রশাসন গবেষক

[email protected]




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles