Thursday, December 12, 2024

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে বিএনপির রিভিউ আবেদনে ১০ যুক্তি


তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় বাতিল চেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রিভিউ আবেদন করেছেন। ৮০৭ পৃষ্ঠার ওই আবেদনে মোট ১০টি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। ৮০৭ পৃষ্ঠার মধ্যে মূল রিভিউ আবেদনটি ৪১ পৃষ্ঠার। রিভিউ আবেদনে তুলে ধরা ১০টি যুক্তি মধ্যে রয়েছে—

‘আদালতে প্রকাশ্যে ঘোষিত সংক্ষিপ্ত আদেশ সংবিধান সংশোধনের পর পূর্ণাঙ্গ রায় থেকে বাদ দেওয়া হয়। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের অবসরের ১৮ মাস পর রায় প্রকাশ করা হয়। একটি বিচার বিভাগীয় প্রতারণা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই বিষয়ে একটি ফৌজদারি মামলা চলমান রয়েছে।’

‘গণতন্ত্র এবং অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন যমজ সন্তানের মতো একটি ছাড়া আরেকটি অর্থহীন। সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র গ্রহণযোগ্য বাহন। এই রায়ের মাধ্যমে সংবিধানের মৌলিক স্তম্ভ ধ্বংস করা হয়েছে। একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

‘সংবিধান একটি জীবন্ত রাজনৈতিক দলিল। সময়ের প্রয়োজন মেটাতে না পারলে এর কার্যকারিতা থাকে না। সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব সংবিধানকে প্রাসঙ্গিকভাবে ব্যাখ্যা করা, যান্ত্রিকভাবে নয়। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে এই রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) প্রয়োজন।’

‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ফলশ্রুতিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী সংশ্লিষ্ট মৌলিক মর্যাদা অর্জন করে। সুপ্রিম কোর্ট এই মৌলিক স্তম্ভ অসাংবিধানিক ঘোষণা করতে পারে না।’

‘ত্রয়োদশ সংশোধনী বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব করেনি। কারণ, কোনও দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে এই সরকারে প্রধান করার বিধান ছিল না। সবশেষ অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন আইনত বিচার বিভাগের কার্য হয় না। যদি তাই হয় তাহলে অবসরপ্রাপ্ত কেউ কোথাও বসতে পারে না।’

এ প্রসঙ্গে রিভিউ প্রস্তুতকারী অন্যতম আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, গণতন্ত্র রক্ষা ও ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্যে যে রিভিউ আবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে, তা সফল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

মামলার অন্যতম আইনজীবী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ১৯৯১ সালে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকার গঠিত হয়। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়। বিএনপি সরকার জনগণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে সংবিধান ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করে। তারপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন যথাক্রমে ১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে।

তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। ২০১১ সালের ৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে সংক্ষিপ্ত আদেশ ঘোষণা করে। সংক্ষিপ্ত আদেশের ভিত্তিতে সরকার সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেয়। ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত হয়। পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পূর্বেই তৎকালীন সংসদ তড়িঘড়ি করে সংবিধান সংশোধন করে এবং নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে। ফলশ্রুতিতে পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রকাশ্য আদালতে ঘোষিত সংক্ষিপ্ত আদেশ পরিবর্তন করা হয়। যা বিচার বিভাগীয় প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়। আমরা গণতন্ত্র ফেরাতে রিভিউ করেছি। আশা করছি দ্রুতই আমরা তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থায় ফিরে যেতে পারবো।

আরও পড়ুন:

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে মির্জা ফখরুলের রিভিউ আবেদন




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles