রাজশাহীর পদ্মায় শ্রমিক পরিবহন করার সময় নৌকাডুবির ঘটনায় কাউকে উদ্ধার করা যায়নি। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করে।
রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে অতিরিক্ত স্রোতের কারণে ১৬ জন যাত্রী নিয়ে নৌকাটি ডুবে যায়। ১২ জন সাঁতরে পাড়ে উঠলেও চার জন নিখোঁজ হন। পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের চরমাঝারদিয়ার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নৌকার সব যাত্রী চরমাঝারদিয়ার গ্রামের বাসিন্দা।
নিখোঁজ ব্যক্তিরা হলেন– চরমাঝারদিয়ার গ্রামের এনামুল হকের ছেলে রাজু (২২), এন্তাজুল হকের ছেলে সবুজ (২০), আবুল কালামের ছেলে ফারুক (১৯) এবং খলিলের ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩৮)।
ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভরা মৌসুমে নদীর তীব্র স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না। এই কারণে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
পবা উপজেলার ৪ নম্বর হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির বলেন, ‘রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) ১৬ জন শ্রমিক দিনের কোনও একসময় পদ্মার চরে কাজে গিয়েছিলেন। কাজ শেষে তারা একটি ডিঙি নৌকায় বাড়ি ফেরার সময় নৌকাটি ডুবে যায়। এ সময় নৌকায় থাকা ১৬ জনের মধ্যে ১২ জন সাঁতরে পাড়ে উঠে জীবন বাঁচান। এই ঘটনায় চার জন শ্রমিক পদ্মার পানিতে ডুবে নিখোঁজ ছিলেন।’
রাজশাহী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের একেএম মুরশেদ বলেন, ‘সোমবার সকাল ৬টার দিকে তারা উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় বেলা ১১টার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়া মানুষদের খুঁজে পাওয়া যায়নি।’
এ বিষয়ে পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সালেহ মোহাম্মদ হাসনাত বলেন, ‘সোমবার সকাল থেকে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। নদীতে প্রচণ্ড স্রোত। তাদের পাওয়া যায়নি। তবে নিখোঁজ মানুষগুলোর স্বজনরা জানিয়েছেন ওই চার জন সাঁতার জানতেন না। যারা সাঁতার জানতেন তারা নদীর পাড়ে উঠে প্রাণে বেঁচে গেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেক দুঃখজনক বিষয় একই পরিবারের তিন জন নিখোঁজ হয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান স্থগিত করলেও সব থানা ও বিজিবিকে ঘটনাটি জানানো হয়েছে। কেউ নদীতে মানুষ দেখতে পেলে স্থানীয় থানা ও ফায়ার সার্ভিসকে জানাতে বলা হয়েছে।’
এদিকে, পদ্মা নদীতে নিখোঁজ রাজুর নানি আশরাফুন বেগম (৭০) বলেন, ‘কী বললো বাবা, কিছু বলার নেই। একই পরিবারের তিন জন মারা গেছে। নদীতে জামাইরা সারারাত খোঁজাখুঁজি করেছে, কিন্তু পায়নি। যারা নদীতে ডুবে নিখোঁজ হয়েছে তারা বেঁচে থাকলে এতক্ষণ পাওয়া যেতো। লাশগুলো পেলেও জানে সান্ত্বনা পেতাম।’
তিনি বলেন, ‘জমিতে টমেটো লাগিয়ে ফেরার এ সময় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। অন্যরা সাঁতরে উঠেছে পাড়ে, চার জন পারেনি। আমার জামাই (নিখোঁজ রাজুর বাবা) অসুস্থ হয়ে গেছে। রাত ৯টার দিকে নদীতে উদ্ধারে করতে যাওয়া আরেক জামাই খবর দিয়েছে কাউকে পাওয়া যায়নি।’
জানা গেছে, রাজু ও সবুজ চাচাতো ভাই। মোহম্মদ আলী রাজুর দুলাভাই। রাজুর প্রতিবেশী ভাই হয় ফারুক। রাজুর স্ত্রীর মেয়েসন্তান হয়েছে তিন মাস আগে। সবুজ বিবাহিত, তবে তার সন্তান নেই। মোহাম্মদ আলীর এক ছেলের ১২ বছর এবং মেয়ের বয়স ১০ বছর। ফারুকের বাবা কৃষিকাজ করেন।’
নিখোঁজ একজনের স্বজন টকেনা বেগম বলেন, ‘পানির নিচে অন্ধকার। আর নদীর পানি ঘোলা। একহাত দূরে কিছু দেখা যায় না। দিন হলে অতটা সমস্যা হতো না। আর ভরা নদীতে মানুষ পানিতে নেমে খুঁজতেও ভয় পায়। যদি তারা জীবিত থাকতো তাহলে এতক্ষণে পাওয়া যেত। ধরে নিতে হবে তারা আর বেঁচে নেই।’
ঘটনাস্থল চরমাজারদিয়াড় এলাকায় থাকা নিখোঁজ সবুজের দুলাভাই মো. মেজর বলেন, ‘আমরা সারারাত খুঁজেছি। চার জনের একজনকেও পাওয়া যায়নি। সকালে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসেছেন। তাদের ডুবুরিরা খোঁজাখুঁজি করেছেন। তারাও পাননি।’
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com