ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী দখলকৃত পশ্চিম তীরের হেবরন শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোকে এক ধরনের ‘বড় কারাগারে’ রূপান্তর করেছে বলে অভিযোগ করেছেন ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েলি চেকপয়েন্ট এবং লোহার গেট দিয়ে শহরটির প্রবেশ পথগুলো বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এ খবর জানিয়েছে।
রবিবার হেবরনের কাছে এক ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীর হামলায় তিনজন ইসরায়েলি নিহত হওয়ার পর এবং গুশ এতজিয়োন বসতিতে দুটি বিস্ফোরণের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। পাশাপাশি, গাজায় ইসরায়েলের চলমান হামলার সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম তীরেও আক্রমণ তীব্র করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনিরা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হেবরনকে ২০০০ সালে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময়ের মতো পরিস্থিতিতে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। পশ্চিম তীরের শহর ও গ্রামের সব রাস্তাঘাট এবং প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
হেবরনের উত্তর প্রান্তে রাস আল জুরা নামে পরিচিত প্রবেশ পথে একটি ধাতব গেট স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে ফিলিস্তিনিদের পায়ে হেঁটে চলাচল করতে হচ্ছে। তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদক জানিয়েছেন, মেডিক্যাল টিমগুলো রোগীদের পরিবহনে সমস্যায় পড়েছে। তাদের এখন চেকপয়েন্টে গাড়ি বদল করে রোগীদের নিয়ে যেতে হচ্ছে।
হেবরন পশ্চিম তীরের সবচেয়ে বড় প্রশাসনিক অঞ্চল এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক ও শিল্পকেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হয়।
সমষ্টিগত শাস্তি
হেবরনের মেয়র তায়সির আবু স্নেইনেহ আনাদোলুকে জানান, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হেবরনকে এক ধরনের বড় কারাগারে পরিণত করেছে এবং সমষ্টিগত শাস্তির নীতি প্রয়োগ করছে।
তিনি বলেন, শহরের সব প্রবেশপথে সামরিক বাধা ও গেট বসানো হয়েছে, যা প্রায় সব শহরেই ঘটছে। এটি সাধারণ নাগরিকদের ওপর প্রতিকূল প্রভাব ফেলছে, জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে, বাজার প্রায় ফাঁকা এবং বাণিজ্য ও পরিবহন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে।
মেয়র আরও বলেন, ক্লোজারের কারণে আমরা প্রয়োজনীয় সেবা যেমন বর্জ্য সংগ্রহের মতো কাজও করতে পারছি না। হেবরন একটি বাণিজ্যিক কেন্দ্র, এবং এই অবরোধ চতুর্থ দিনে পৌঁছানোয় ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, সেনাবাহিনীর সুরক্ষার মধ্যে বসতি স্থাপনকারীরা নির্বিচারে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং মানুষকে হত্যা করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, মানুষ তাদের অধিকার নিয়ে নিরাপত্তা ও শান্তিতে বাঁচতে চায়; এই অধিকারগুলো কেড়ে নেওয়া হলে তা একটি বিস্ফোরণ ডেকে আনতে পারে।
হত্যা ও অবরোধ
রাস আল জুরার চেকপয়েন্টে ইদনা শহরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ ফারাজাল্লাহ বলেন, পশ্চিম তীরে পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় মানুষ হত্যা করছে, পশ্চিম তীরের উত্তরে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে এবং দক্ষিণাঞ্চল অবরোধ করে রেখেছে।
পশ্চিম তীরের সাম্প্রতিক অভিযানে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত, ৫ হাজার ৭০০ জন আহত এবং ১০ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি গ্রেফতার হয়েছে বলে ফিলিস্তিনি সরকারি সূত্র জানিয়েছে। একই সময়ে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের আক্রমণও বেড়ে গেছে।
ফারাজাল্লাহ আরও বলেন, দখলদার বাহিনী ফিলিস্তিনিদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে তাদের স্থানান্তরে বাধ্য করতে চায়, কিন্তু আমরা আমাদের ভূমি ছেড়ে যাবো না।
প্রায় ফাঁকা বাজার
চেকপয়েন্টে মালবাহী গাড়ির চালক মাহমুদ জিয়াদ বলেন, এই অবরোধের কারণে ব্যবসায়িক কার্যক্রম কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। শহরের রাস্তা ফাঁকা, বাজারগুলো প্রায় শূন্য, এবং দোকানগুলোতে কোনও ক্রেতা নেই।
মঙ্গলবার ইসরায়েলি সংবাদপত্র ইসরায়েল হায়োম জানিয়েছে, ইসরায়েল এখন দখলকৃত পশ্চিম তীরকে একটি ‘যুদ্ধক্ষেত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে, যা গাজার পর দ্বিতীয় প্রধান ফ্রন্ট।
প্রতিবেদনটি আরও জানিয়েছে, সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পর ইসরায়েলের দৃষ্টিভঙ্গিতে পশ্চিম তীর এখন কেবল একটি ‘গুঁড়ো পিপা’ নয়, বরং ‘বিস্ফোরণের মুখোমুখি একটি অঞ্চল’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com