Monday, October 20, 2025

রেমিট্যান্সের পালে স্বস্তির হাওয়া, রিজার্ভেও উন্নতি


কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সূচক রেমিট্যান্সের পালে জোর হাওয়া লেগেছে। ব্যাংকিং চ্যানেলের তথ্য-উপাত্ত বলছে, প্রবাসীরা এই কয়েক দিন আগের তুলনায় দ্বিগুণ হারে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে বিগত সময়ের সব রেকর্ড ভেঙে রেমিট্যান্সে নতুন উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রবাসীরা চলতি জুন মাসে দৈনিক গড়ে ১২ কোটি ১৭ লাখ ডলার করে পাঠিয়েছেন। তার মানে গত মে মাসের তুলনায় চলতি মাসের দৈনিক গড়ে প্রায় ৫ কোটি ডলার বেশি পাঠিয়েছেন।

ব্যাংক খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাধারণত দুই ঈদের আগেই পরিবার-স্বজনদের কাছে বাড়তি অর্থ পাঠান প্রবাসীরা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, সাধারণত ঈদের আগে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ে। এবারও তাই হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া বেশ কিছু উদ্যোগ রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, গত দুই বছর ধরে সাধারণত প্রবাসীরা দৈনিক ৫ থেকে ৬ কোটি ডলার পাঠাচ্ছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দৈনিক তারা ৪ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে প্রবাসীরা দৈনিক প্রায় গড়ে ৬ কোটির কিছু বেশি ডলার পাঠিয়েছেন।

অবশ্য চলতি বছরের শুরু থেকে মে পর্যন্ত টানা ৫ মাস এই সংখ্যা বেড়ে ৭ কোটি ডলারের ঘরে উন্নীত হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে মে মাসের প্রথম ১৭ দিনে প্রতিদিন গড়ে দেশে এসেছে ৭ কোটি ৯৯ লাখ ডলারের রেমিট্যান্স। কিন্তু চলতি মাসের শুরু থেকেই রেমিট্যান্সের পালে জোর হাওয়া লাগে। জুন মাসের প্রথম ১২ দিনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে ১৪৬ কোটি ডলার পাঠিয়েছেন।

আগামী সোমবার (১৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আজহা। অর্থাৎ ঈদের আগে আরও দুদিন প্রবাসী আয় আসার সুযোগ আছে। ফলে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রবাসী বাংলাদেশিরা কত কোটি ডলার দেশে পাঠালেন, তার পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তবে গত মাসের তুলনায় চলতি মাসের প্রথম ১২ দিনে প্রবাসী আয় আসার গড় হার বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসে ২২৫ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় আসে, যা গত ৪৬ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, চলতি জুন মাসের ১ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত মোট প্রবাসী আয় এসেছে ১৪৬ কোটি ডলার। গত বছরের জুনের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল মাত্র ৮৪ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৬২ কোটি ডলার বা প্রায় ৭৪ শতাংশ। অবশ্য চলতি মাসের প্রথম ৭ দিনে দেশে রেমিট্যান্স আসে ৭২ কোটি ৬২ লাখ ডলার।

প্রবাসী আয় আসার এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাস শেষে প্রবাসী আয় ২৫০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, গত মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক এক লাফে ডলারের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১১৭ টাকা নির্ধারণ করার পর প্রবাসী আয় বাড়তে শুরু করেছে। যার প্রভাব দেখা গেছে গত মাসে। চলতি মাসেও এখন পর্যন্ত প্রবাসী আয়ের ঊর্ধ্বমুখী ধারা রয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বছরের জুনে প্রবাসীরা ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার দেশে পাঠান। যা তার আগের ৩৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

২০২২-২৩ অর্থবছর বাংলাদেশে ২ হাজার ১৬১ কোটি ডলারের প্রবাসী আয় দেশে আসে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ১৩৭ কোটি ডলার। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মে পর্যন্ত ১১ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছে মে মাসে। তবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। ওই মাসে দেশে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ২১৬ কোটি ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে ২০৪ কোটি ডলার প্রবাসী আয় এসেছিল। এর আগে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ২১৬ কোটি, মার্চে ১৯৯ কোটি  ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

এদিকে রেমিট্যান্স বাড়ার পাশাপাশি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বেড়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কিছুটা বেড়েছে। গত মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৮ বিলিয়নের ঘরে নেমে গেলেও জুনের শুরুতে তা ১৯ বিলিয়নের ঘরে উঠেছে। সর্বশেষ রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার বা ১ হাজার ৯২০ কোটি ৯৭ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। একই সময়ে বৈদেশিক মুদ্রায় গঠিত বিভিন্ন তহবিলসহ মোট রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৪৫২ কোটি ১৬ লাখ মার্কিন ডলার।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নে (আকু) মার্চ ও এপ্রিল মাসের দায় মেটানোর পর মে মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশ ব্যাংকে মোট রিজার্ভ কমে ২ হাজার ৩৭৭ কোটি ডলারে নেমে আসে। আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ নামে ১ হাজার ৮৩২ কোটি ডলার। তবে ওই সময় প্রকৃত বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ ছিল ১৩ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।

আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত আইএমএফের দেওয়া নিট বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ১১ কোটি মার্কিন ডলার। এই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আইএমএফ ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ডলারে নামিয়েছে।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles