Tuesday, October 14, 2025

মিয়ানমারে তীব্র সংঘর্ষের কারণে টেকনাফ সীমান্তে আরেকটি নির্ঘুম রাত


মিয়ানমারের রাখাইনের মংডুতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্য চলমান যুদ্ধের তীব্রতা বেড়েছে। বেড়েছে আকাশপথে যুদ্ধ বিমানের হামলাও। এতে রাখাইনে পরিস্থিতি থমথমে। যার কারণে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বসবাসকারী মানুষের মাঝে বাড়ছে আতঙ্ক।

বুধবার (২৮ আগস্ট) রাত থেকে বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত মংডুতে তুমুল সংঘর্ষে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তজুড়ে কেঁপে ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে সেখানকার (মংডুতে) রোহিঙ্গারা টিকে থাকতে না পেরে প্রাণে বাঁচতে এদিক-সেদিক যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আবার অনেকে সীমান্ত দিয়ে এপারে প্রবেশের অপেক্ষায় আছেন। তবে রোহিঙ্গারা যাতে নতুন করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারে, সে জন্য সীমান্ত-নাফনদে বিজিবি ও কোস্টগার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, মিয়ানমার বাংলাদেশের সীমান্তের কাছাকাছি হওয়ার কারণে বড় বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। সেদেশে চলমান যুদ্ধ চলছে। তবে সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকানার পাশাপাশি যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি সদস্যরা প্রস্তুত রয়েছেন।

এদিকে খারাংখালী, টেকনাফ, পৌরসভা, হ্নীলা, জাদিমুড়া, দমদমিয়া, নাইট্যংপাড়া, পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নাজিরপাড়া, সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, নাফনদের মোহনা ও নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত থেকে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বড় বড় শব্দ। সীমান্তের লোকজন বলছে, দীর্ঘদিন বন্ধের পরে আবারও কোনও বড় ধরনের মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দে কাঁপছে টেকনাফ।

এ বিষয়ে টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা মুহাম্মদ জাকির বলেন, মিয়ানমারে হামলার কারণে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত ঘুমাতে পারিনি। ভয়ে রাতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ি। মনে হয়েছে, এপারে বিমান হামলা হচ্ছে।  কারণ এমন বিকট শব্দ আগে শুনিনি।

হ্নীলা ওয়াব্রাং সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা কামাল জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তর থেকে ১০-১৫ মিনিট পর পর মর্টারশেল বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। যার কারণে আমরা আতঙ্কিত হয়ে রাত জেগেছিলাম। এতদিন বন্ধ থাকলেও আজকে রাতে নতুন করে বেশি বিস্ফোরণ হচ্ছে। রাত ১২টার পর থেকে বজ্রপাতের মতো বিকট শব্দ আসছে আর কালো ধোঁয়া দেখা গেছে।

অন্যদিকে গত মঙ্গলবার ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের (আইসিজি) এক প্রতিবেদনে বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তাকে পরাজিত করে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মধ্য ও উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা দখলে নিয়েছে সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি। এই সংগঠনের নেতৃত্বে খুব শিগগির আরাকান রাজ্য সার্বভৌমত্ব অর্জন করতে পারে। এ বছরের প্রায় পুরো সময়জুড়ে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর নিরবচ্ছিন্ন হামলার মুখে পাল্টা জবাব দিতে হিমশিম খেয়েছে সামরিক সরকার (জান্তা)। নিরুপায় হয়ে এক পর্যায়ে তারা রোহিঙ্গা মুসলিমদের যোদ্ধা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। 
কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করলে একটি উদীয়মান আধা-রাষ্ট্র (পুরোপুরি সার্বভৌম নয় এমন) সৃষ্টি হবে এবং এ রাজ্যের বাসিন্দারা মানবিক সংকটে পড়বে।

রাখাইন ও সীমান্ত সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি রাখাইনে মংডু শহর নিয়ন্ত্রণ নিতে সামরিক বাহিনীকে তুমুল হামলা চালিয়ে শক্ত অবস্থা নেয়। দেশটির সামরিক বাহিনীও শহরটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরাকান আর্মিকে আকাশপথসহ ত্রিমুখী হামলা চালায়। দুই পক্ষ মংডু শহরটি নিয়ন্ত্রণ নিতে তুমুল চলমান যুদ্ধে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে।

এই গৃহযুদ্ধের ফলে রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরের সুদাপাড়া, হাদিবিল, নুরুল্লা পাড়া, হাইর পাড়া, মুন্নী পাড়া, সাইরা পাড়া, ফাতনজা, ফেরানপ্রু, সিকদার পাড়া, হাঁড়ি পাড়া, হেতিল্লা পাড়ার বাসিন্দারা গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। এর মধ্য অনেকে সীমান্ত দিয়ে এপারে অনুপ্রবেশের অপেক্ষা জড়ো হয়ে রয়েছেন। ফলে মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে টেকনাফে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা বাড়তে পারে। একই সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদের অনুপ্রবেশের ঘটনাও বৃদ্ধি পেতে পারে।

কুতুপালং শরণার্থী শিবিরের নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, মূলত যুদ্ধের নামে রাখাইনে যেসব রোহিঙ্গা রয়েছে তাদের নিশ্চিহ্ন করতে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্য নাটক চলছে। আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ করবো, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে সেফ জোন গড়ে তুলে তাদের সেখানে বসবাসের উপযোগী করা হোক। না হলে পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে সেখানে থাকা মানুষগুলো প্রাণে বাঁচতে এদিকে পালাতে থাকবে।

সীমান্তে কিছু রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলেও শুনেছি উল্লেখ করে টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা নবী হোসেন বলেন, রাতভর মিয়ানমারে হামলা চলছিল। এতে টেকনাফ সীমান্ত কেঁপে ওঠে। ফলে নির্ঘুম রাত কেটেছে এখানকার মানুষের।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী বলেন, মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতে আবারও বিস্ফোরণের বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। আমরা সীমান্তের মানুষের খোঁজ রাখছি। তবে নতুন করে যাতে কোন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার রয়েছে।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles