Friday, June 27, 2025

বন্যা পরিস্থিতিতে শিশুর সুরক্ষা ও মানসিক বিকাশে নাগরিক সমাজের ৯ পরামর্শ


বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা বন্যায় প্রাথমিক হিসাবে ১১টি জেলার ৭৭টি উপজেলার প্রায় ৫৬ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাণহানি ও নিখোঁজের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বন্যার পানি নামতে শুরু করলে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। তবে সবচেয়ে বেশি সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে শিশুরা। অনেক শিশু তাদের প্রিয়জনকে হারিয়েছে, অনেকে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ঘরবাড়ি ও বিদ্যালয়। ইউনিসেফের সূত্রমতে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি শিশু এখন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই শিশুদের সুরক্ষা ও মানসিক বিকাশে ৯টি পরামর্শ দিয়েছে নাগরিক সমাজের ২০ প্রতিনিধি। 

বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে একথা জানানো হয়।

এতে বলা হয়, বন্যাপরবর্তী কাজে যারা অংশ নেবেন তাদের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে সব শিশুকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফেরানো, কোনও শিশু যেন শিশুশ্রমে যুক্ত না হয়। শিশুরা যেন তাদের বসতভিটায় অভিভাবকদের সঙ্গে থাকতে পারে। কোনও শিশু যেন বাল্যবিয়ের শিকার না হয়।

এছাড়া পানি কমে যাওয়ার পর পরিবারের বড়রা বাড়িঘর মেরামত, ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহ ও পুনর্বাসনসহ অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তখন তারা সাধারণত শিশুদের প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারে না, এমনকি তাদের সুরক্ষা এবং শিক্ষার দিকেও নজর থাকে না। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ, ঘরে পানিবন্দি হয়ে থাকা, খেলাধুলা করতে না পারা কিংবা পরিবার থেকে দূরে থাকার কারণে তাদের ওপর মানসিক চাপ পড়ে। এই সময়ে শিশুদের মনোসামাজিক অবস্থার ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। পরিবারের বড়রা যখন কাজে ব্যস্ত থাকবে তখন শিশুদের কথাও মনে রাখতে হবে, তাদের সময় দিতে হবে।

এই পরিস্থিতিতে পরিবারের পাশাপাশি যেসব সরকারি কিংবা বেসরকারি সংস্থা বন্যা এলাকায় পুনর্বাসনের কাজ করছে তাদের উচিত হবে শৈশবকালীন কর্মকাণ্ডে যুক্ত রেখে শিশুদের সুরক্ষা ও মানসিক বিকাশে একসঙ্গে কাজ করা। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে চলমান বন্যাপরিস্থিতিতে শিশু সুরক্ষা এবং তাদের মানসিক বিকাশসহ শিশুদের সর্বোত্তম স্বার্থ রক্ষার জন্য শিশুদের জন্য নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়।

নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে ৯টি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আছে– শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যালয়ভিত্তিক মিড ডে মিল চালু করা, শিক্ষকদের এই সময়ে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে এবং বিদ্যালয়ে না হলে বাড়িতেই যেন নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে হবে; বন্যার কারণে যেসব এলাকার স্কুল বন্ধ সেসব এলাকায় শিশু-কিশোর কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য যত দ্রুত সম্ভব অস্থায়ী বিদ্যালয় বা শিশুবান্ধব স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে, তবে শিশুবান্ধব কেন্দ্র গঠন ও পরিচালনায় স্কুলকে সম্পৃক্ত করতে হবে; বন্যায় যদি বই ও লেখার উপকরণ নষ্ট হয়ে যায় সেক্ষত্রে যেখানে মজুদ আছে বা বাড়তি বই আছে সেসব স্থান থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত বই সরবরাহ করতে হবে; পরীক্ষার সময়সূচি অনুযায়ী আসন্ন পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও রয়েছে, বন্যাপরবর্তী সময়ে শিশু ও তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ সামাজিক সুরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে, দুর্যোগের পরে শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে ঝরে পড়ার বা শ্রমবাজারে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। স্কুল থেকে ঝরে পড়া, শিশুশ্রম, শিশু পাচার এবং বাল্যবিবাহ থেকে শিশুদের রক্ষার জন্য সমাজভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি; এই সময় শিশুদের মনোসামাজিক অবস্থার ওপর বিশেষ নজর দিতে হবে। তাদের খেলাধুলা ও বিনোদনের সুযোগ করতে হবে দ্রুত; অনেকেই শিশু এবং কিশোরীদের স্বজনদের তত্ত্বাবধানে রেখেছেন। পরিবার থেকে দূরে শিশু-কিশোররা নানা ধরনের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে পারে। তাদের দ্রুত পরিবারে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করতে হবে; অনেক ক্ষেত্রে, চাঞ্চল্যকর সংবাদ বা মনোযোগ আকর্ষণের জন্য শিশুদের ছবি ও ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসতর্কভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, শিশুদের ছবি ও ভিডিও ব্যবহার করা থেকে পুরোপুরি বিরত থাকতে হবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ জাকারিয়া, উন্নয়নকর্মী এক্স শিশুরাই সবর আহ্বায়ক লায়লা খন্দকার, সাবেক অতিরিক্ত সচিব একেএম সাইফুল ইসলাম চৌধুরী, সংবাদকর্মী ও গবেষক নাজনীন নাসির, গবেষক ও উন্নয়নকর্মী জিনিয়া আফরোজ, শিশু সাহিত্যিক ও অভিনয় শিল্পী দীপু মাহমুদ, শিশু অধিকার ও উন্নয়নকর্মী আসিফ মুনীর, লেখক ও সাংবাদিক সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম, লেখক ও শিশু অধিকারকর্মী পুলক রাহা, উন্নয়নকর্মী সাজ্জাদুর রহমান, সিরাজুদ দাহার খান, সোয়ালেহিন ফাতেমা, মারুফা কলি, মুশফিকা জাহান, সাংবাদিক শুভ কিবরিয়া, কলাম লেখক ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ড. সৈয়দ নাসের আহমেদ রুমি, উন্নয়নকর্মী নবলেশ্বর দেওয়ান, জাফর ইকবাল, বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির এবং লেখক ও গবেশক গওহার নঈম ওয়ারা।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles