Saturday, March 15, 2025

পেঁয়াজের দাম হঠাৎ বাড়ার যে কারণ


হঠাৎ করেই ঢাকার কাঁচাবাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়তে শুরু করেছে। এক লাফে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যের দাম। এতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ভুগতে থাকা মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়লো।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে বাংলাদেশে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ, যা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে পেঁয়াজের মূল্য বৃদ্ধি ভোক্তাদের জন্য নতুন অস্বস্তি ডেকে এনেছে।

ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন, পেঁয়াজের হঠাৎ মূল্য বৃদ্ধির প্রধান কারণ- সরবরাহ সংকট, আমদানি ও ফলন কমে যাওয়া।

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকার খুচরা বিক্রেতা নুরুল আলম শিকদার বলেন, দেড় মাস ধরে পেঁয়াজের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে।

তিনি জানান, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। তারা গতকাল দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১২৫ টাকায় বিক্রি করেছেন।

সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গতকালের তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহ আগে দেশি পেঁয়াজ ৯৫ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছিল, সেখানে গতকাল বিক্রি হয়েছে ১০৫ থেকে ১১৫ টাকায়।

টিসিবি বলছে, গত মাসে দেশি পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। গত মাস থেকে এ পর্যন্ত পেঁয়াজের দাম ৪১ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে, গত বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

এদিকে আমদানি করা পেঁয়াজের দামও বেড়েছে।

টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, এক সপ্তাহ আগে আমদানি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫ থেকে ১০০ টাকা। কিন্তু গতকাল দাম বেড়ে হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা।

টিসিবি বলছে, এক মাসের ব্যবধানে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ এবং এক বছরে ব্যবধানে বেড়েছে ১৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের দাবি, এ বছর দেশে ৩৪ লাখ টন পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়েছে, যা চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট। কিন্তু আরও ছয় থেকে সাত লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতে হবে। কারণ দেশে পেঁয়াজ সংরক্ষণ সুবিধার অভাব আছে, এতে উৎপাদিত পেঁয়াজের কিছু অংশ নষ্ট হয়।

তবে পেঁয়াজ বিক্রির অন্যতম কেন্দ্র ঢাকার শ্যামবাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন, গত ফেব্রুয়ারিতে বৈরি আবহাওয়ার কারণে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রাক্কলনের চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কম পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।

শ্যামবাজার পেঁয়াজ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও পাইকারি বিক্রেতা মোহাম্মদ আবদুল মাজেদ বলেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজের সংকট রয়েছে।

এছাড়া ভারত, পাকিস্তান, তুরস্কসহ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি কম হওয়ায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

বাংলাদেশে পেঁয়াজ রোপণের মৌসুম শুরু হয় অক্টোবরে এবং এপ্রিলের শেষ থেকে জুনের মাঝামাঝি পর্যন্ত তোলা হয়।

কিন্তু দাম বেশি হওয়ায় মৌসুম শুরুর আগেই অনেক কৃষক পেঁয়াজ বিক্রি শুরু করেন বলে জানান তিনি।

মোহাম্মদ আবদুল মাজেদ বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পাশাপাশি অপরিপক্ব ফসল তোলার কারণে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অনুমানের তুলনায় প্রায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ উৎপাদন কমেছে।

তিনি আরও বলেন, দাম বেশি থাকায় অনেক ব্যবসায়ী আরও দাম বৃদ্ধির আশায় পেঁয়াজ আটকে রেখেছেন। এ কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় হঠাৎ করে দাম বেড়ে গেছে।

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরের ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরোয়ার্ডিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক দীপংকর ঘোষ বলেন, ভারত থেকে চার থেকে পাঁচ মাস পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। তবে ভারত মে মাসে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে এই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল ভারত। অবশ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর দেশটি রপ্তানির ওপর ৪০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে।

তিনি জানান, উৎপাদন কম হওয়ায় ভারতেও পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। তাই বাংলাদেশে এখন আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেশি।

এতে দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বেড়েছে।

পেঁয়াজ উৎপাদনের অন্যতম এলাকা ফরিদপুর কৃষি বিপণন বিভাগের সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, বর্তমানে ঘন ঘন বৃষ্টির কারণে অনেক পেঁয়াজ পচে যাচ্ছে। তাই পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় নতুন পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। মার্চে দাম ১২০ টাকা ছাড়িয়ে যায়, তারপর আবার কিছুটা কমলেও এপ্রিল থেকে বাড়তে শুরু করে। গত মাসে কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে পেঁয়াজের দাম ১২০ থেকে ১২৫ টাকায় উঠেছিল।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবিটি




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles