Saturday, June 28, 2025

পদ্মার ভাঙনে বিলীন বাড়িঘর, বাঁধ হুমকিতে 


ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ধলারমোড়ের নিকট পালডাডাঙ্গীতে পদ্মা তীরে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে একরাতের মধ্যেই শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন দশ-বারোটি বসতবাড়ি ধসে গেছে। তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধ।

এদিকে শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এসব বসতিরা ঘরবাড়ি হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। অনেকের টয়লেট ও রান্নাঘর বিলীন হওয়ায় তারা নিত্যকর্মও সারতে পারছেন না। বাড়িতে রান্নাবান্না করতে না পারায় এসব পরিবার সারাদিন নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়ে ঘরের মালামাল সরাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

এদিকে স্থানীয়রা ওই বালিদস্যুদের ব্যবহৃত এক্সকেভেটর তথা বেকু আটকে রাখে সড়কে। তারা এভাবে বালি উত্তোলনের প্রতিবাদ করলে তাদের অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হুমকি-ধামকি দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। নদীতে বসতভিটা ভাঙনের কবলে পড়ায় তারা চরম উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সরেজমিনে সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের পালডাঙ্গীতে গিয়ে দেখা যায়, শহররক্ষা বাঁধের সন্নিকটে পদ্মা নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। আর সেখানে সরকারি বালুমহাল না থাকলেও ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল মজুদ।

স্থানীয়রা জানান, প্রথমে বেকু দিয়ে শহররক্ষা বাঁধ ঘেঁষে প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ ফুট গভীর করে বালু তুলে বালুর ঢিবিতে মজুদ করা হয়। এরপর ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদী থেকে বালু তোলা হচ্ছিলো। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বেকু দিয়ে ওই বালু ট্রাকে করে বিক্রির সময় শহররক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এলাকায় পানির ঘূর্ণি স্রোতে তীব্র ভাঙন শুরু হয়। এতে মাঝরাত থেকে ভোর হওয়ার আগেই আফজাল শেখ, মজলু শিকদার, মো. হাসান মাস্টার, বাদশা শেখ, সাহেব শেখ, আলী, দেলোয়ার শেখ, সাদ্দাম শেখ, সালাম শেখ, জাহানারা বেগমের ঘরবাড়ি নদীর পানিতে ধসে যায়। বাড়িঘর ছাড়াও বাঁশবাগান ও বেশকিছু গাছপালাও পানিতে ধসে গেছে। পালডাঙ্গী মামুনের দোকানের কাছে ভাঙন একেবারে শহর রক্ষা বাঁধ পর্যন্ত চলে এসেছে।

ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো মো. হাসান মাস্টার বলেন, ৮৮ সালের বন্যার সময় পদ্মা নদীতে ঘরবাড়ি হারানোর পরে আমরা এই বেড়িবাঁধের পাশে সরকারি জমিতে এসে আশ্রয় নেই। এরপর স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আমরা এখানে ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করছি। কিন্তু স্থানীয় আজম নামে এক ব্যক্তি এখানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু তুলে বিক্রি করছে। শহর রক্ষা বাঁধ সংলগ্ন এলাকা থেকে বালু তোলার কারণে আমাদের বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করায় উল্টো হুমকি দিচ্ছে তারা।

আফজাল শেখ বলেন, রাতের বেলায় বেকু দিয়ে লেয়ার ধরে বালু তুলে নিয়ে যায়। তার জন্য আমাদের ঘর-দুয়ার সব ভাইঙ্গ্যা নিয়ে গেছে। পায়খানা-প্রস্রাব করবো সেই কায়দাও নাই। টিউবওয়েল নাই, পায়খানা নাই, রান্নার জায়গাও নাই। সব ভাইঙ্গ্যা নিয়ে গেছে।

মজনু শিকদার বলেন, বেড়িবাঁধ থেকে দেড়শো ফুট জায়গা সরকারের। আমরা প্রায় পঞ্চাশটি পরিবার এখানে বাড়িঘর তুলে বসবাস করি। এই সরকারি জায়গায় পঞ্চাশ ফুট গভীর করে বালু তুলে নিয়েছে। একারণে এভাবে ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এখন এই বেড়িবাঁধও ভাঙার উপক্রম হয়েছে।

ডিক্রিরচর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান মিন্টু ফকির বলেন, অনেকদিন ধরে তারা মানুষের ক্ষতি করছে। যখন আমরা অভিযোগ দেই, তারপর দুই তিনদিন হয়তো বন্ধ থাকে। তারপর আবার শুরু হয়। তবে এইবার তারা যা করছে তাতে বেড়িবাঁধে ভাঙন শুরু হয়ে যাবে। আর মাত্র চারপাঁচ ফুট ভাঙলেই শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন ধরে যাবে।

এব্যাপারে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, খবর পেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ভাঙন প্রতিরোধে জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলা হবে। আর সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles