জর্জিয়ার স্কুলে বন্দুক হামলায় জড়িত প্রধান আসামি কোল্ট গ্রের বাবা কলিন গ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ফলে অভিভাবকদের দায়িত্বের পরিধি নিয়ে মার্কিন বিচার ব্যবস্থা নতুন প্রশ্ন উত্থাপন করছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
গত বড়দিনে কলিন তার ছেলেকে অ্যাসল্ট রাইফেল উপহার দিয়েছিলেন। ১৪ বছর বয়সী কোল্ট বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) এই অস্ত্র দিয়েই তার স্কুলে এলোপাতারি গুলি চালায় বলে তদন্ত কর্মকর্তা সন্দেহ করছেন। হামলায় ২ শিক্ষার্থী ও ২ শিক্ষকসহ মোট ৪ জন নিহত এবং ৯ জন আহত হয়েছেন।
এই ঘটনায় বাবা-ছেলে দু’জনের বিরুদ্ধেই হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৫৪ বছর বয়সী কলিনের বিরুদ্ধে ‘সেকেন্ড ডিগ্রি’ হত্যার ২টি, অনিচ্ছাকৃত হত্যার ৪টি ও শিশুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার ৮টি মামলা করা হয়েছে। সবগুলো অভিযোগ প্রমাণিত হলে কলিনের সর্বোচ্চ ১শ’ ৮০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
জর্জিয়া ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পরিচালক ক্রিস হোসে বলেছেন, ‘সজ্ঞানে ছেলেকে অস্ত্র রাখতে দেওয়ার কারণে কলিন হত্যাকাণ্ডে দায়ী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন।’
বন্দুক হামলার ২৪ ঘণ্টা পার না হতেই অভিযোগগুলো দায়ের করা হয়। তবে, সব তথ্য উপাত্ত এখনও সামনে আসেনি বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া, কলিনের বিরুদ্ধে ঠিক কি আইনি বিতর্ক উত্থাপিত হবে, সেটা এখনও পরিষ্কার নয়।
নর্দার্ন ইলিনয় ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক ইভান বেরনিক বলেছেন, ‘হত্যাকাণ্ডে শিশুদের প্রতি নিষ্ঠুরতার উপাদান রয়েছে। তবে এই নিষ্ঠুরতা ঠিক কোথায় হয়েছে বলে আমরা ধরে নেব? বন্দুক হামলায়? নাকি নিজের ছেলের প্রতি এমন কোনও আচরণ যা শিশুটিকে এমন কাজের দিকে ধাবিত করেছিল? আমাদের কাছে এর কোনও উত্তর নেই।’
কোল্টকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে বিচারের আওতায় আনা হবে। অর্থাৎ আইন অনুযায়ী, এখন কৃতকর্মের জন্য সে পুরোপুরি নিজেই দায়বদ্ধ। তবে, তার বাবারও রেহাই মিলবে না।
কলিনকে হামলায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার জন্য অভিযুক্ত করা হবে না। বরং, ছেলের কাজে ‘হস্তক্ষেপ করতে ব্যর্থতার’ কারণে তাকে তাকে অপরাধী বলে বিবেচনা করা হবে।
এর আগে, ২০১৮ সালে স্কুলে হওয়া এক বন্দুক হামলায়, প্রধান আসামি ১৪ বছর বয়সী ইথানের অভিভাবকদের বিরুদ্ধে সন্তানের প্রতি অবহেলার অভিযোগ আনা হয়। ইথানের মা-বাবাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
তবে, এবারের ঘটনা সেটিকেও ছাড়িয়ে যাচ্ছে। কারণ, এবার অভিভাবকের ব্যর্থতাকে হত্যাকাণ্ডের সমতুল্য হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
এই বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব নেবরাসকা লিংকনের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ইভ ব্র্যাঙ্ক বলেছেন, ‘সন্তানরা সবসময় কেবল পরিবারের দ্বারা প্রভাবিত হয় না। পারিপার্শ্বিক কোন ঘটনা তাদের মনোজগতে কীভাবে প্রভাব ফেলবে, তা নির্ণয় করা মুশকিল। অথচ বিচার ব্যবস্থা পরিবারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরিসরেও হস্তক্ষেপ করছে। কিন্তু আমাদের প্রয়োজন ছিল, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কঠোর হওয়া।’
‘জন হপকিন্স সেন্টার ফর গান ভায়োলেন্স সল্যুশনস’-এর বিশেষজ্ঞ টিম ক্যারি বলেছেন, ‘আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে দুর্বলতার প্রতিফলন হচ্ছে অভিভাবকদের দোষী প্রমাণের চেষ্টা করা।’
কিন্তু সমস্যার গোড়ায় হাত না দিলে ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে অনেক আইন বিশেষজ্ঞ অভিমত দিয়েছেন।
ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের আইন ও দর্শনের অধ্যাপক একোও ইয়ানকাহ বলেছেন, ‘আমাদের সমাজে বন্দুক সহিংসতার সমস্যাটি অনেক মারাত্মক। কিন্তু এটি আইন অনুযায়ী সঠিক রাস্তায় মোকাবিলা না করে আমরা অদ্ভুত সব মামলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছি।’
আইনজীবীদের হাতে এখন একটা ‘হাতুড়ি’ এসে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক ইয়ানকাহ। আর এর ‘বাড়ি’ পড়তে পারে দরিদ্র বা সমাজের অপেক্ষাকৃত দুর্বলদের মাথায়, এমনটাই সতর্ক করেছেন তিনি।
এদিকে, ছেলেমেয়ের অপরাধে মা-বাবাকে বিচারের আওতায় আনার ঝুঁকি বৃদ্ধি পেলেও, আসল সমস্যার দিকে ততোটা মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে না। যেমন, দেশে আগ্নেয়াস্ত্রের সহজলভ্যতা ও শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তার ব্যবস্থা।
এর সমালোচনা করে অধ্যাপক বেরনিক বলেছেন, ‘দেশের গভীরে শেকড় গেড়ে থাকা সমস্যার মূলোৎপাটন করতে আমরা ফৌজদারি আইন নিয়ে মাঠে নামছি।’
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com