Tuesday, October 7, 2025

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন দখল করে হিন্দ হল নামকরণ বিক্ষোভকারীদের


নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবন বিক্ষোভকারীরা মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভোরে দখল করে নিয়েছে। বিক্ষোবকারীরা দখল করা ভবনের প্রবেশপথ আটকে দেয় এবং ভবনের জানালা দিয়ে ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন করে। যুক্তরাষ্ট্রব্যাপী ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর সর্বশেষ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দখলের খবর এলো। বিক্ষোভকারীরা হ্যামিল্টন হলের নতুন নাম রেখেছে ‘হিন্দ হল’। ছয় বছরের নিহত ফিলিস্তিনি শিশু হিন্দ রজবের স্মরণে তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের বহিষ্কার করার হুমকি দিয়েছে বলে খবর প্রচারিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৮ সালে নাগরিক অধিকার এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভের সময় বিক্ষোভকারীরা যে কয়েকটি হল দখল করেছিল, তার অন্যতম ছিল এই হ্যামিল্টন হল।

একটি এক্স পোস্টে বিক্ষোভকারীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সিইউএডির তিনটি দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা হলটিতে থাকার পরিকল্পনা করেছেন। দাবিগুলো হলো : ইসরাইল থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহার, আর্থিক স্বচ্ছতা ও দায়মুক্তি।

এক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার ভোরে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানহাটন ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীরা হ্যামিল্টন হলের সামনে হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছে, এবং আসবাবপত্র ও ধাতব ব্যারিকেড ভবনটিতে নিয়ে যাচ্ছে। প্রবেশ করে বন্ধ করে দেয়।

এর আগে ক্যাম্পাসে ১৯৬৮ সালে নাগরিক অধিকার এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধবিরোধী প্রতিবাদের সময় দখল করা বেশ কয়েকটি ভবনের মধ্যে এটি একটি। সামাজিক মাধ্যম ইন্টসাগ্রামের একটি পোষ্টে মধ্যরাতের পরপরই বিক্ষোভের আয়োজকরা অন্যদের হ্যামিল্টন হলে তাদের সাথে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার দিনের শুরুতে সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) সিইউ অ্যাপারথাইড ডাইভেস্ট পোস্ট করে, ‘একটি স্বায়ত্বশাসিত গ্রুপ হিন্দ’স হলের দখল ফিরিয়ে নিয়েছে (আগে ‘হ্যামিলটন হল’ নামে পরিচিত)। শহীদ হিন্দ রজবের সম্মানে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়, যিনি গণহত্যাকারী ইসরাইলি রাষ্ট্রের হাতে ছয় বছর বয়সে নিহত হয়েছিলেন।’

ছাত্রদের রেডিও স্টেশন, ডব্লিউকেসিআর-এফএম হল দখলের প্রতি মিনিটের ধারা-বর্ণনা প্রচার করে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, সোমবার দুপুর ২টার মধ্যে তাদের লাগানো ১২০টি তাঁবু তুলে নিতে হবে, না হয় তাদের সাময়িক বহিষ্কার করা হবে। হল দখল করা হয় সময়সীমা পার হবার ১২ ঘণ্টা পর।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিদের কাছে মঙ্গলবার সকালে মন্তব্যের অনুরোধে ই-মেইলে জানতে চাইলে তারা তাত্ক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি। তবে জননিরাপত্তা বিভাগের এক বিবৃতিতে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এড়াতে পরামর্শ দেয়া হয়। তবে জরুরি কর্মীদের কাজে রিপোর্ট করার জন্য বলা হয়েছে।

সমস্ত যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানের দিন এগিয়ে আসার সাথে সাথে বিক্ষোভকারীদের তাবুশিবির গুলো খালি করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিছু সংখ্যক আলোচনা অব্যাহত রাখলেও অন্যরা জোরপূর্বক উচ্ছেদের আল্টিমেটামের দিকে ঝুঁকছে। এর ফলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে।

সোমবার টেক্সাস, ইউটাহ এবং ভার্জিনিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভের সময় অনেককে গ্রেফতার করা হয়। অন্যদিকে হ্যামিল্টন হল দখলের কয়েক ঘণ্টা আগে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় জানায়, তারা শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিস্কার শুরু করেছে।

ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ এবং এতে ক্রমবর্ধমান মৃতের সংখ্যা নিয়ে ক্ষুদ্ধ বিক্ষোভকারীদের গ্রেফতারের সংখ্যা প্রায় এক হাজারে পৌঁছেছে। ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশের ফলে কলেজগুলোকে ইসরাইলের সাথে তাদের আর্থিক সম্পর্কের পাশাপাশি বাকস্বাধীনতার প্রতিও তাদের সমর্থনের বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে।

কিছু ইহুদি শিক্ষার্থী বলেছেন, এই বিক্ষোভ ইহুদিবিদ্বেষে পরিণত হয়েছে। ফলে ক্যাম্পাসে আসতে ভয় পাচ্ছেন বলেও জানায় তারা।

অস্টিনের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অ্যাটর্নি জানায়, সোমবার অন্তত ৪০ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে ইউটাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের সামনে তাঁবু শিবির তৈরি করার পর বিকেলে কয়েক ডজন দাঙ্গা পুলিশ ছাত্রদের সেখান থেকে টেনেহিঁচড়ে সরানোর সময় তাঁবুর খুঁটি ভেঙে দেয়। যারা সরতে রাজি হয়নি, তাদের হাত বেঁধে ফেলা হয়। মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়, কাম্পাসে তাঁবু গাড়া নিয়মের লঙ্ঘন এবং পুলিশ ডাকার আগে ছাত্রদের সরে যাবার জন্য সতর্ক করা হয়েছিল।

কলাম্বিয়ার প্রথম বিক্ষোভের পর থেকেই টেক্সাসের প্রতিবাদ শুরু হয়। কানাডা এবং ইউরোপ সহ অন্যান্য স্থানেও তা চলতে থাকে।

ইহুদি শিক্ষার্থীদের পক্ষে দায়ের করা একটি মামলায় দ্রুত আদালতের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়, যাতে কলাম্বিয়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে বাধ্য হয়। মামলায় সশরীরে ক্লাস নেয়া থেকে সরে আসার ঘোষণা চালেঞ্জে করে দাবি করা হয়, নীতি ও প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপদ শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে কলাম্বিয়া ব্যর্থ হয়েছে।

এদিকে, ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী একটি আইনি দল যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিভাগের নাগরিক অধিকার অফিসের প্রতি, কলম্বিয়ার ১৯৬৪ সালের নাগরিক অধিকার আইন মেনে চলার বিষয়টি তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক মুখপাত্র।

সূত্র : আল জাজিরা

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএস




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles