Friday, June 20, 2025

ঈদে পর্যটক বরণে প্রস্তুত কক্সবাজার


রোজায় কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত ছিল পর্যটকশূন্য। তবে ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে লাখো ভ্রমণপিপাসুর সমাগম ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। তাদের বরণে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে সাড়ে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও গেস্ট হাউস এবং পাঁচ শতাধিক রেস্তোরাঁসহ পর্যটন-সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো। এ জন্য চলছে ধোয়া-মোছাসহ সাজসজ্জা ও অলংকরণের শেষ পর্যায়ের কাজ।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান, পুরো রমজান মাস সৈকতের পাড় পর্যটকশূন্য থাকায় ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তারা। ঈদের টানা ছুটি উপলক্ষে ৫০ শতাংশের বেশি হোটেল-মোটেলের কক্ষ ইতোমধ্যে বুকিং হয়ে গেছে। ঈদের আগে ও ছুটির দিনগুলোয় শতভাগ বুকিং হওয়ার আশা করছেন তারা। 

এর আগে বিগত কয়েক বছর করোনার কারণে সাগরের নোনাজল ও বিস্তৃত বালিয়াড়ির সৈকতে পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছিল। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট ব্যবসায়ীরা এ খাত থেকে ফিরে আসার কথাও বলেছিলেন। গত বছর থেকে সব সংকট পেরিয়ে তারা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় আছেন।

কক্ষ পেতে বিড়ম্বনায় যেন না পড়েন, তাই অনলাইনে আগাম খোঁজখবর নেওয়ার পরামর্শ প্রতিষ্ঠানগুলোর

চলতি বছর পর্যটন মৌসুমের শুরুতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও নির্বাচনি সহিংসতার কারণে অনেকটা ভাটা পড়ে কক্সবাজার পর্যটনশিল্পে। চলতি রমজান মাসও পর্যটকশূন্য ছিল প্রকৃতির এই নৈসর্গিক এলাকা। তাই ঈদ ও পয়লা বৈশাখের টানা পাঁচ দিনের বেশি ছুটিতে আবারও স্বপ্ন দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

পরামর্শ দিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায়ী মো. আবদুর রহমান বলেন, পর্যটকদের বরণে ইতোমধ্যে সার্বিক প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। টানা ছুটিতে আশানুরূপ পর্যটক কক্সবাজার ভ্রমণে আসবেন। আর অতিরিক্ত পর্যটকের চাপে যাতে হোটেল কক্ষের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং কক্ষ পেতে বিড়ম্বনায় না পড়েন, তাই অনলাইনে আগাম খোঁজখবর নেওয়ার পরামর্শ তাদের।

কক্সবাজার কলাতলী হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মৌখিম খান বলেন, ঈদের টানা ছুটির দিনগুলোয় প্রতিদিনই লাখো পর্যটকের সমাগমে মুখর থাকবে কক্সবাজার। তাই হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও রেস্তোরাঁগুলো সাজানো হয়েছে নতুন রূপে। পর্যটকদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে দোকানপাটগুলোয় তোলা হচ্ছে নতুন পণ্য। এরই মধ্যে আশানুরূপ সাড়া পেতে শুরু করেছে সাগরপাড়ের আবাসিক হোটেলগুলো।

ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কক্সবাজারের (টুয়াক) সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল কবির পাশা বলেন, মৌসুমের উত্তাল সময়ের কারণে পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকলেও কক্সবাজারে অন্য পর্যটন এলাকাগুলো ঘুরে দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পর্যটকদের সেবাদানে সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে আমাদের।

সবার নিরাপত্তায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ

বিচ বাংলা ট্যুরিজমের ব্যবস্থাপক মো. আবদুল্লাহ বলেন, চলতি বছরজুড়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে পর্যটনে তেমন ব্যবসা হয়নি। তাই এবারের ঈদে ইনানী বড়খাল বিচ কায়াকিংকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। পর্যটকদের দেওয়া হবে বাড়তি বিনোদন সেবা।

সারা বছর সমুদ্রসৈকতের পাড়ে পর্যটকদের না হয়রানির খবর পাওয়া যায়। অনেকে লাঞ্ছিত ও নির্যাতনের শিকার হন। ছবি তোলার বিড়ম্বনার পাশাপাশি সম্প্রতি বডি ম্যাসাজ নিয়ে নতুন বিড়ম্বনা দেখা দিয়েছে। তবে এবার সবার নিরাপত্তায় সার্বিক প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, আগামী ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা পাঁচ দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে প্রতিদিনই দেড় লাখের বেশি পর্যটক সমাগম ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে ঈদে এবারের টানা ছুটিতে অন্তত ৮ লাখ পর্যটক সমাগম ঘটতে পারে। সমুদ্রসৈকতে পেট্রোল টিমের পাশাপাশি অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন পয়েন্ট বসানো হয়েছে সিসি ক্যামরা।



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles