রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির ‘অবৈধ নির্বাচন’ স্থগিতের দাবি উঠেছে। ‘সরকারি নীতিমালা না মেনে’ ভোটের আয়োজন, ভোটার লিস্টে নাম থাকার পরও সদস্য পদের মনোনয়ন ফরম কিনতে না দেওয়া এবং ১৮ জন দাতা সদস্যের নাম বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা করার অভিযোগ এনে নির্বাচনি তফসিল স্থগিতের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার (২৪ মার্চ) ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) ও ‘গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০১৪’ কমিশনের প্রিজাডিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন আজীবন দাতা সদস্য মো. কাজী তৌহিদুজ্জামান। অন্যদিকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে সমাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাকসুদা আক্তারকে ফরম কিনতে না দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে।
আজীবন দাতা সদস্য মো. কাজী তৌহিদুজ্জামান জানান, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০২৪’ এর দাতা ভোটার তালিকা হাল নাগাদের জন্য আবেদনকারী ১৮ জন অজীবন দাতা সদস্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাদ দেওয়ার বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বোর্ড ঢাকা দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি গত ১৩ মার্চ অধ্যক্ষকে তদন্তের বিষয়ে জানানোর পরও তিনি নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার উদ্দেশে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ভোটার তালিকা পাঠিয়েছেন। গত ২০ মার্চ তদন্ত কমিটি সরেজমিন তদন্তের জন্য স্কুলে উপস্থিত থেকে অধ্যক্ষ ও তিন জন সহকারী প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নিয়েছেন। এরপর ১৮ জন দাতা সদস্যকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে যদি কোনও তথ্য উপাত্ত থাকে তাহলে সেগুলো নিয়ে অধ্যক্ষকে আগামী ২৫ মার্চ শিক্ষা বোর্ডে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়েছে। অথচ তার আগেই গত ১৯ মার্চ তড়িঘড়ি করে নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
আজীবন দাতা সদস্য মো. কাজী তৌহিদুজ্জামান বলেন, ‘২০০২ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত আমরা আজীবন দাতা সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। ২০০৪ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত যতবার ভোটার তালিকা হয়েছে ততবারই আমরা দাতা সদস্য হিসেবে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ২০২১ সালে আমি দাতা সদস্য পদে নির্বাচন করেছি। অথচ ২০২৪ সালে এসে অন্যয়ভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে আমাদের বাদ দিয়ে ভোটার তালিকা করা হয়েছে। এই ১৮ জন ভোটারের মধ্য থেকে ৩/৪ জন ভোটার দাতা সদস্য হিসেবে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাও করবেন। অথচ আমাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। একাধিকবার অধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো সহযোগিতা পায়নি। সে কারণেই তফসিল স্থগিত করে দাতা সদস্য হিসেবে নাম অন্তর্ভুক্ত করে ভোটার তালিকা প্রণয়ে করে নতুন করে তফসিল ঘোষণা করতে অনুরোধ জানিয়েছি।
এদিকে, ভোটার তালিকায়নাম থাকার পরও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক মাকসুদা আক্তারকে মনোনয়ন ফরম দেওয়া হয়নি। সাময়িক বরখাস্ত থাকার কারণে তাকে ফরম দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে। যদিও উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় এক মাসের মধ্যে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে, তারপরও তাকে মনোনয়ন ফরম দেওয়া হয়নি।
মাকসুদা আক্তার আদালতের নির্দেশনার বিষয়টি উল্লেখ করে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ((শিক্ষা ও আইসিটি) ও ‘গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০১৪’ কমিশনের প্রিজাডিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করলে তাদে দিন দিন ঘরিয়ে সদস্য পদের মনোনয়ন ফরম দেওয়া হয়নি।
মাকুসুদা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভোটার তালিকায় নাম থাকার পরও আমাকে সদস্য পদের মনোনয়ন ফর দেওয়া হয়নি। কোনও দেওয়া যাবে না সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি অধ্যক্ষ। আমি হাইকোর্টের রায়ের বিষয়টি উল্লেখ করে ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ((শিক্ষা ও আইসিটি) ও ‘গভর্নিং বডির নির্বাচন-২০১৪’ কমিশনের প্রিজাডিং অফিসারের কাছে লিখিত আবেদন করেছি। তারপরও আমাকে ফেরম দেওয়া হয়নি।
অভিভাক ঐক্য ফেরামের সভাপতি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা না মেনে শাখা ক্যম্পাস আলাদা না করে তপসিল ঘোষণা করা হয়েছে। সে কারণেই তপসিল স্থগিত করে নতুন করে আলাদা ভোটার তালিকা তৈরি করে নির্বাচন করার দাবি জানিয়েছি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে একাধিকবার ফোন দিলেও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এমাম হোসেন ফোন রিসিভ করেননি।