Sunday, June 29, 2025

‘যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করছে সামাজিক কুসংস্কার’


যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টায় সামাজিক কুসংস্কার বা স্টিগমার প্রভাব অনেক। যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা বিভিন্নভাবে সামাজিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিপি) ও আইসিডিডিআর,বি ‘বাংলাদেশে যক্ষ্মা-সম্পর্কিত স্টিগমার অবস্থা’ শীর্ষক একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। সেই গবেষণার তথ্য ও ফলাফল নিয়ে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকায় আইসিডিডিআর,বি সাসাকাওয়া মিলনায়তনে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। গ্লোবাল ফান্ডের অর্থায়নে দেশে প্রথমবারের মতো যক্ষ্মা ও স্টিগমা নিয়ে এই গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করা হয়েছে।

গবেষকেরা জানান, স্টিগমাকে প্রায়ই এমন একটি সামাজিক আচরণ হিসেবে দেখা হয়— যেখানে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। । অপমানজনক ও নেতিবাচক আচরণের শিকার হয় যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তি। গবেষণার মাধ্যমে যক্ষ্মারোগী ও তাদের পরিবারের সদস্য, সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ যারা স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছেন, তাদের মধ্যে স্টিগমার উপস্থিতি ও মাত্রা সম্পর্কে অনুসন্ধান করা হয়।

২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং ঢাকা শহর ও গ্রামীণ এলাকায় পরিচালিত এই সমীক্ষায় স্টপ টিবি পার্টনারশিপের ‘টিবি স্টিগমা অ্যাসেসমেন্ট ডেটা কালেকশন টুল’ ব্যবহার করা হয়। অংশগ্রহণকারীরা ছিলেন গত পাঁচ বছরের মধ্যে যক্ষ্মায় আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারের সদস্য, সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিরা।

ডা. সায়েরা বানুর অধীনে আইসিডিডিআর,বি-র পাবলিক প্রাইভেট মিক্সের টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার নাদিম রেজা, সিনিয়র স্ট্যাটিস্টিক্যাল অফিসার তানজিনা রহমান ও আইসিডিডিআর,বির রিসার্চ অফিসার তামান্না সুলতানা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রায় ২৮ শতাংশ যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তি তাদের চিকিৎসা গ্রহণ ও সেবাচক্রের প্রথম তিনটি পর্যায়ে স্টিগমার প্রভাব অনুভব করেন। তাদের পরিবারের প্রায় ২২ শতাংশ সদস্য স্টিগমার সম্মুখীন হন। আর ১৪ ভাগ যক্ষ্মা রোগী ও তাদের পরিবারের ১১ ভাগ সদস্য বাড়িতেও স্টিগমা অনুধাবন করেন। গবেষণার ফলাফলে আর্থ-সামাজিক বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরে হয়েছে। গবেষণা থেকে জানা যায়, যক্ষ্মাসংক্রান্ত স্টিগমা নারীদের বেশি প্রভাবিত করে। এতে সামাজিকভাবে অসম্মান, হয়রানি ও আর্থিক অসুবিধায় পড়েন তারা।

সেমিনারে অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ড. মো. মাহাফুজার রহমান সরকার, এবং আইসিডিডিআর,বি-র সিনিয়র সায়েন্টিস্ট ড. সায়েরা বানুসহ প্রমুখ।

আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ‘একসময় মানুষ যক্ষ্মা নিয়ে কথা বলতে ভয় পেতো,  তবে এখন দেশের যেকোনও প্রান্তে গেলেই যক্ষ্মা নাম শোনা যায়। এটা হয়েছে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সফল উদ্যোগ, সরকারের বলিষ্ঠ ভূমিকা এবং পাশাপাশি আইসিডিডিআর,বি-তে যারা যক্ষ্মা নিয়ে কাজ করছেন, তাদের একনিষ্ঠতার কারণে। যক্ষ্মার কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করতে হলে আমাদের এভাবেই যৌথভাবে কাজ করে যেতে হবে।’

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.  মো. টিটু মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর মো. মাহাফুজার রহমান সরকারসহ অন্যান্য অতিথি গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর আলোকপাত করেন। সমাজের স্টিগমা কাটিয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান গবেষক ও বক্তারা।

গবেষণাটি বাংলাদেশে যক্ষ্মা-সংক্রান্ত স্টিগমার ব্যাপক প্রভাবকে তুলে ধরে এটিকে যক্ষ্মার সেবা গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। স্টিগমার কাঠামোগত এবং সামাজিক কারণগুলো মোকাবিলা করার জন্য জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে, যার লক্ষ্য মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা এবং জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করা।




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles