Wednesday, June 25, 2025

নববর্ষ-ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারে বিপুল পর্যটক সমাগম


বাংলা নববর্ষ এবং ঈদুল ফিতরের টানা পাঁচদিনের ছুটিতে সমুদ্রশহর কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম হয়েছে। সমুদ্রসৈকত ছাড়াও জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ভিড় করছেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা ভ্রমণপিপাসুরা। ফলে দীর্ঘদিন খরায় থাকা কক্সবাজারের পর্যটন খাত চাঙা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দেখছেন আলোর মুখ।

ঈদের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (১২ এপ্রিল) থেকে কক্সবাজারে পর্যটক আসতে শুরু করে। এই চাপ ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত থাকবে বলে জানিয়েছেন পর্যটক সংশ্লিষ্টরা।

এবার ঈদে সমুদ্রসৈকতে পর্যটকের আধিক্যতার কারণে অনেকেই নৈসর্গিক সুন্দর অবলোকনের জন্য ছুটছেন শহরের বাইরে।

কক্সবাজার শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে গেলেই প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য হিমছড়ি, পাহাড়ি ঝর্না, বিনোদন স্পট, বোটানিক্যাল গার্ডেন। সুউচ্চ পাহাড় থেকে পাখির চোখে সমুদ্র ও আশপাশের এলাকা দেখে বিমুগ্ধ হন পর্যটকরা। এছাড়া, রেজুর খালে ছোট বোটে কাইকিং, সোনারপাড়া সৈকত, ইনানী ও পাটোয়ারটেকের পাথররাণী বিচে হৈ হুল্লোড়ে মেতে উঠেন পর্যটকরা।

ঈদের তৃতীয় দিন শনিবার (১৩ এপ্রিল) সকাল থেকে সমুদ্রসৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা, লাবণী ও কবিতা চত্বর পয়েন্টে পর্যটকে মুখরিত ছিল। সমুদ্রস্নান, ওয়াটার বাইক (জেটস্কি), ঘোড়ায় চড়া ও বিচবাইক নিয়ে এক পয়েন্ট থেকে আরেক পয়েন্টে ঘুরে বেড়ানোয় ব্যস্ত ছিলেন পর্যটকরা।

গাজীপুর থেকে সপরিবারে বেড়াতে আসা সরকারি কর্মকর্তা সাইমুন আল মারওয়ান বলেন, কক্সবাজারে যতবার আসি না কেন, এর সৌন্দর্য প্রতিবারই মুগ্ধ করে। মন খারাপ থাকলে কখনো একা কখনো পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসি। এবার ঈদ ও নববর্ষে টানা ছুটি পেয়েছি, তাই আব্বা-আম্মা, স্ত্রী-সন্তান ও বড় ভাইয়ের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কক্সবাজারে এলাম।

ইনানীর পাটোয়ারটেক পর্যটন স্পটে বেড়াতে আসা ফারুক হোসেন বলেন, কক্সবাজার কথা উঠতেই সমুদ্রসৈকত ছাড়া কিছু কল্পনা করতে পারে না লোকজন। অথচ কক্সবাজারে সৈকত ছাড়াও অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে। সেখানেই ঘুরছি আমরা। সবুজ সুপারি বাগান আর সুউচ্চ পাহাড় দেখছি।

বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর ঐতিহ্যবাহী আদিনাথ মন্দির দেখতে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এই উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প দেখতেও লোকজনের সমাগম হচ্ছে। তবে ভেতরে ঢোকার অনুমতি না থাকায় মাতারবাড়ি সমুদ্রসৈকত থেকে এ প্রকল্প দেখছেন পর্যটকরা। 

এছাড়া, সাবরাং ট্যুরিজম স্পট, শামরাপুর নানা রঙের সাম্পানের সৈকত, জাহাজপুরা শতবর্ষী গর্জন ট্যুরিজম স্পট দেখতে পর্যটকরা ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

এদিকে হোটেল-মোটেল, গেস্টহাউস ও কটেজে ঈদের আগে ছাড় দিলেও এখন দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন পর্যটক। রেস্টুরেন্টে খাবারের দাম বেশি রাখা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেকে।

কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে ঈদের আগে পর্যটক শূন্য ছিল কক্সবাজার। ঈদের প্রথম দিনেও তেমন জনসমাগম ছিল না। কিন্তু ঈদের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে জনসমাগম বেড়েছে। হোটেল-মোটেলের কক্ষ প্রায়ই ৯০ শতাংশ বুকিং। তবে, কোনো হোটেলে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাইনি। যদি এমন অভিযোগ উঠে তবে ওই হোটেল আমাদের সমিতির অন্তর্ভুক্ত হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, ঈদের আগে থেকে পর্যটক বরণে প্রস্তুত ছিলাম আমরা। শুক্রবার থেকে বিপুলসংখ্যক পর্যটক এসেছে কক্সবাজারে। তাদের সর্বোচ্চ সার্ভিস দিচ্ছি। অতিরিক্ত দাম কোথাও রাখা হচ্ছে না। যদি এমন হয় তাহলে প্রতিটি রেস্টুরেন্টে আমাদের মোবাইল নম্বর আছে। ফোন করে অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজিয়নের প্রধান অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আপেল মাহমুদ বলেন, কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং সেবা দিতে সৈকত ছাড়াও অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের সার্বক্ষণিক নজরদারি রয়েছে। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকদের জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করেছি আমরা। যে কোনো সমস্যায় পর্যটকরা একটি বাটন চাপ দিয়েই আমাদের সেবা নিতে পারেন।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ঈদের আগে থেকে আশা করছিলাম পর্যটকে মুখরিত হবে কক্সবাজার। তা ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে হচ্ছে। পর্যটকের সেবা নিশ্চিতে জেলা প্রশাসন সজাগ রয়েছে। হোটেলে-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় অতিরিক্ত টাকা আদায়, অসাধু ব্যবসায়ীদের হয়রানি বন্ধসহ পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিতে সমুদ্রসৈকত এবং আশপাশের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে রয়েছে। ভ্রমণ শেষে পর্যটকরা নিরাপদে ফিরুক এটাই আমাদের কামনা।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles