Sunday, February 23, 2025

ঈদ বিনোদনে প্রস্তুত গাজীপুরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো


ঈদ উদযাপন করতে মানুষ বিভিন্ন সামনে রেখে গাজীপুরের সরকারি-বেসরকারি উদ্যানগুলোয় নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্যানগুলোর ভেতরে ঘুরে বেড়ানোর ওয়াকওয়ে, ফুলের বাগান, থাকার ঘর, রেস্টুরেন্ট প্রভৃতি জায়গাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে।

শিশুদের বিনোদনের জন্য উদ্যানগুলোর বিভিন্ন রাইড, দর্শনীয় স্থানগুলো ঘষামাজা ও পরিষ্কার করা হচ্ছে। আবার দর্শনার্থীরা উদ্যান পরিবেশের আগাম খবরও নিতে এসেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে দর্শনার্থী, প্রাণী ও পরিবেশের নিরাপত্তার জন্য পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে।

এক মাস সিয়াম সাধনার সময় জেলার এসব বিনোদনকেন্দ্র ছিল ফাঁকা। দর্শনার্থী না থাকায় অনেকটা অব্যবহৃত অবস্থায় ছিল উদ্যানগুলোর বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। দর্শনার্থী সমাগম না থাকায় কিছুটা ভুতুড়ে পরিবেশ হয়ে উঠেছিল। রমজানের শেষ সাত দিন ধরে বিনোদনকেন্দ্রগুলো ব্যবহার উপযোগী হিসেবে আগের পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছে কর্তৃপক্ষ। ঈদের আগের দিনও পরিচ্ছন্নতা করতে দেখা গেছে।

দ্রুতগতিতে সংস্কারের কাজ চলছে, যাতে সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারে

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের আগাছা পরিষ্কার করছিলেন দিনমজুর নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, ঈদের সময় অনেক দর্শনার্থীর আগমন উপলক্ষে পরিবেশ-পরিচ্ছন্নতার জন্য আগাছা ও ঘোরাঘুরির জন্য যাতায়াতের রাস্তা পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রতিদিন ১৫ থেকে ১৬ জন ওয়ার্কার দলবদ্ধভাবে পার্কের বিভিন্ন জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছেন। ঈদের আগের দিন বুধবারও সর্বশেষ পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলেছে। দ্রুতগতিতে সংস্কারের কাজ করছি। মানুষ এসে যাতে সুন্দরভাবে ঘুরতে পারে, উপভোগ করতে পারে।

গাজীপুর সদর উপজেলার পিরুজালী এলাকার নুহাশ পল্লীর পরিচ্ছন্নতাকর্মী ফজলু মিয়া বলেন, নুহাশ পল্লীতে হুমায়ূন স্যারের মৃত্যু ও জন্মবার্ষিকীতে মাঠ-ঘাট-ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। বছরের দুই ঈদেও পার্কের ভেতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। আগামী দুদিনে আরও লোক নিয়ে বাকি অংশ পুরোপুরি পরিচ্ছন্ন করে রাখবো। ঈদে যারা ঘুরতে আসবেন, তারা একটি পরিপাটি পরিবেশ পাবেন নুহাশ পল্লীতে।

নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী দীপ চক্রবর্তী বলেন, ঈদের আগে ভিড় সামলাতে সবান্ধব সাফারি পার্ক ঘুরতে এসেছেন। সাফারি পার্কটি প্রাকৃতিকভাবে অনেক সুন্দর ও মনোমুগ্ধকর। প্রাণীর সংখ্যা আরও বাড়িয়ে সৌন্দর্য বাড়ানো যেতে পারে। লেক ও পাড় বাঁধাই ও সংস্কার করা প্রয়োজন। ঈদ বা পূজা, পার্বণে এ জায়গাগুলো ভালোভাবে উপভোগের সুযোগ হয়। শিশুদের ভবিষ্যৎ সুগঠনের জন্য এটি প্রয়োজন।

নটরডেমের অপর শিক্ষার্থী মাধুর্য বিশ্বাস বলেন, সাফারি পার্ক আমাকে দারুণ অভিজ্ঞতা দেয়। প্রাকৃতিক পরিবেশটার বিশেষত্ব রয়েছে। প্রাণিজগতের উপস্থিতি আমাদের দারুণভাবে চিত্তাকর্ষক করে তোলে। প্রাণীগুলোর বাসযোগ্য পরিবেশ মনোমুগ্ধকর। এ উদ্যান শিশুদের পরিবেশবিদ হতে সাহায্য করবে।

সব উৎসব সামনে রেখে সবাইকেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসা উচিত

নরসিংদী সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক দুলাল চক্রবর্তী বলেন, ঈদ উৎসবের জন্য বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে সপরিবার দর্শনার্থীরা আসতে পারে। সব উৎসব সামনে রেখে সবাইকেই প্রকৃতির সান্নিধ্যে আসা উচিত।

অপর দর্শনার্থী মিতা গোস্বামী বলেন, সদ্য বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় সাফারি পার্কের প্রাকৃতিক পরিবেশটা বেশ সুন্দর হয়ে উঠেছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ কাটানোর জন্য সুন্দর একটি পরিবেশ এটি। গাজীপুরে বেসরকারি উদ্যোগেও অনেক উদ্যান রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে মানুষের ইতিবাচক বিনোদনের নানামুখী উদ্যোগও রয়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের সহকারী বন সংরক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রচুর দর্শক সমাগম হবে। সিংহ বেষ্টনী, আফ্রিকান সাফারিসহ সব বেষ্টনী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। কিছুটা আধুনিকায়ন করে নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন স্পট সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। দর্শনার্থীরা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যভাবে ঘুরে দেখতে পারেন, সে জন্য গাড়ি পার্কিং ও অন্যান্য স্পট সাজানো হয়েছে।



Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles