কলকাতার আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় তাকে গ্রেফতার করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। ওই হাসপাতালের নারী চিকিৎসকের নৃশংস পরিণতিতে তার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ বাড়ছিল। আরজি করের সেই সাবেক অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে এবার সপাটে চড় মারলেন এক বিক্ষোভকারী।
মঙ্গলবার কলকাতার আলিপুর আদালতে তোলা হয় সন্দীপ ঘোষকে। ওই সময় নারী ও পুরুষ আইনজীবীরা বিক্ষোভ করেন। সন্দীপ ঘোষের ফাঁসির দাবিতে সরব হন। তখন আদালত চত্বরে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা কম ছিল। সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে আদালতে প্রবেশ করতে বেগ পেতে হয় নিরাপত্তারক্ষীদের।
পরিস্থিতি দেখে আরও ফোর্স আনা হয়। কড়া নিরাপত্তার মধ্যে আদালত চত্বর থেকে বের করা হয় সন্দীপকে। তখন বিক্ষোভকারীদের ভিড় সেখানে। সন্দীপকে বের করে নিয়ে যাওয়ার সময়ই এক বিক্ষোভকারী চড় মারেন তাকে।
এদিন আলিপুর আদালতে নিয়ে যাওয়া হয় সন্দীপকে। আদালত চত্বরে তাকে ঘিরে বিক্ষোভ বাড়তে থাকে। সেই বিক্ষোভে শামিল হতে দেখা যায় আইনজীবীদেরও। আদালতের ভেতরে কোনোরকমে নিয়ে যাওয়া হয় সন্দীপকে। তাকে ৮ দিনের সিবিআই হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। তারপরই কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বের করে আনা হয় সন্দীপকে।
গত ৯ আগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা করা এক নারী চিকিৎসকের দেহ। এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে সরব হন সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টজনরা। ঘটনার পর হাসপাতালের সুপারকে সরানো হলেও পদে থেকে যান সন্দীপ। যা নিয়ে ক্ষোভ বাড়ে। চারদিনের মাথায় পদত্যাগ করেন তিনি। সেদিনই তাকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়। কলকাতা হাইকোর্ট সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয়। এরই মধ্যে আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। সেই মামলাতেই সোমবার সন্দীপকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। গ্রেফতার করা হয়েছে আরও তিনজনকে।
এদিকে, গতকাল থেকে রাতভর ধরনা-অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। একটানা ২২ ঘণ্টা কলকাতার বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট দখল করে বসে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। কখনও গানে-গানে। কখনও বা স্লোগান তুলে গোটা রাত কাটিয়েছেন। তবে দাবি থেকে সরেননি। রাতভর কার্যত ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ চলছিল দু’পক্ষের। বড় বড় ব্যারিকেডের একদিকে ঠায় বসে পুলিশ। অপর দিকে, অনড় চিকিৎসকরা। নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দুপক্ষই বসে রাস্তায়। তবে মঙ্গলবার বেলা গড়াতেই ফের আন্দোলনকারী ও জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশ। এই নিয়ে তৃতীয়বার বৈঠক। অবশেষে দু’পক্ষের আলোচনায় নমনীয় পুলিশ। ২২ ঘণ্টা পর ২২ জন ডাক্তারকে লালবাজারে যাওয়ার অনুমতি দিলো পুলিশ।
আন্দোলনকারী এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, আমরা পুলিশকে অনুরোধ করেছি সামনের যে ব্যারিকেড আছে তা তুলে দিন। তারপর যাব। আমরা আরও বলেছি, এরপর যেন কোনও ব্যারিকেড না থাকে। আমরা মানব বন্ধনী তৈরি করছি। আমরা কথা দিয়েছি এই মিছিল থেকে কোনও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হবে না।
কলকাতা পুলিশের অ্যাডিশনাল সিপি অনুমতি দেওয়ার পরই শুরু হয় লৌহ কপাট সরানোর কাজ। পুলিশের পক্ষ থেকে খোলা হয় ব্যারিকেড। অপরদিকে জুনিয়র ডাক্তাররাও শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল এগোনোর প্রস্তুতি শুরু করেন। আবার উঠতে শুরু করেছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান।
জানা গেছে, ব্যারিকেড তুলতেই জুনিয়র ডাক্তারদের মিছিল বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট ক্রসিং পর্যন্ত মিছিল এগোনোর পর চিকিৎসকদের ২২ জন প্রতিনিধি যান কলকাতা পুলিশের সদর দফতর লালবাজারে। জুনিয়র ডাক্তাররা বলেন, আমাদের দাবি যে কতটা ন্যায্য ছিল আজ ব্যারিকেড খোলা তারই প্রমাণ। তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে দেখে ভালো লাগছে। কাল থেকে যেভাবে পুলিশ আমাদের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের মতো আচরণ করলো, এত বড় বড় ব্যারিকেড লাগালো, আজ যখন সেটা খুলছে। প্রমাণ হচ্ছে আমাদের কালকের দাবি কতটা ন্যায্য ছিল।
কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবি নিয়ে ভেতরে ঢোকেন ওই ২২ জনের প্রতিনিধি দল। তাদের দাবি, সিপিকে তার সামনেই জুনিয়র চিকিৎসকরা পদত্যাগ করার আর্জি জানিয়েছেন। যার উত্তরে বিনীত গোয়েল জানিয়েছেন, নিজের কাজে সন্তুষ্ট তিনি।
লালবাজারের বাইরে এসে চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দলের সদস্য বলেন, আমরা আরজি করের ঘটনায় সিপির পদত্যাগের দাবি রেখেছি। বিনীত গোয়েলের সামনেই ডেপুটেশন পড়া হয়। এরপর আমরা বিস্তারিতভাবে পয়েন্ট অনুযায়ী আলোচনা করি। স্যার আপনাকে আমরা যা যা জানালাম তার প্রেক্ষিতে ইস্তফা দেওয়া নিয়ে কী ভাবছেন? বিনীত গোয়েল আমাদের জানিয়েছেন, তিনি তার কাজে সন্তুষ্ট তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, তার কাছে যদি নির্দেশ আসে তিনি পদত্যাগ করবেন। সিপি স্বীকার করেন ১২ ও ১৪ আগস্টের ঘটনায় পুলিশের ব্যর্থতা রয়েছে। পরবর্তীতে ৯ তারিখ কর্ডন অফ করার ঘটনা, তথ্য প্রমাণ নষ্ট নিয়ে আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করি।
আন্দোলনরতরা এদিন সাফ জানিয়েছেন, যেহেতু সিপি সদুত্তর দিতে পারেননি, তাই আমাদের আন্দোলন যেমন চলছিল তেমনই চলবে। পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন চলবে। এর মধ্যে তৃতীয় যে দাবি, সিপির পদত্যাগ। সেই দাবিও বহাল থাকবে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com