Monday, October 13, 2025

মানুষের মস্তিষ্কে প্লাস্টিক কণার উপস্থিতি বাড়ছে: গবেষণা প্রতিবেদন


পানির বোতল থেকে শুরু করে বাজারের ব্যাগ, মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে ল্যাপটপ- সবকিছুতেই প্লাস্টিকের ছোঁয়া। এক কথায় বলা যায় প্লাস্টিকের জগতে আমাদের বাস। আজকাল বিভিন্ন খাবারেও মিলছে প্লাস্টিকের অস্তিত্ব। এতে মানুষের মস্তিষ্কে অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিকের কণার উপস্থিতি বাড়ছে। চলতি বছরের শুরুর দিকে বেশ কয়েকজন মানুষের শরীর ময়নাতদন্তের সময় সংগ্রহ করা মস্তিষ্কের টিস্যু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।

দেখা গেছে, আট বছর আগে মস্তিষ্কে যে পরিমাণ অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা ছিল, বর্তমানে তা অনেকটা বেশি। গবেষকরা মানব শরীরের ব্রেন, কিডনি আর লিভারের অটোপসি করেন। পরীক্ষা শেষে সবগুলো অঙ্গেই মিলেছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। দুর্ভাগ্যজনকভাবে ৯১টি ব্রেন স্যাম্পলে সারা শরীরের থেকে প্রায় ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছে।

সম্প্রতি অনলাইনে প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই গবেষণা প্রতিবেদনটি এখনো পিআর-রিভিউ এবং তা কোনো সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়নি। গবেষণা প্রতিবেদনটির মূল লেখক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন। তিনি যুক্তরাস্ট্রের নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক। এই গবেষণার জন্য ২০১৬ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ময়নাতদন্ত করা ৯২ জনের মস্তিষ্ক, কিডনি ও যকৃতের টিস্যু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকেরা।

ম্যাথিউ ক্যাম্পেন বলেন, ‘৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সী স্বাভাবিক মানুষের মস্তিষ্কের প্রতি গ্রাম টিস্যুতে আমরা ৪ হাজার ৮০০ মাইক্রোগ্রাম (১ গ্রাম সমান ১০ লাখ মাইক্রোগ্রাম) প্লাস্টিক কণা পেয়েছি। এটি মস্তিষ্কের মোট ওজনের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৬ সালে মস্তিষ্কে যে পরিমাণ প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছিল, ২০২৪ সালে তা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এর অর্থ আজকের দিনে আমাদের মস্তিষ্ক ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ, বাকিটা প্লাস্টিক।’

এই প্লাস্টিক আমাদের মস্তিষ্কের কতটুকু ক্ষতিসাধন করতে পারে, সে সম্পর্কে গবেষণা প্রতিবেদনে কিছু উল্লেখ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ফোয়েবে স্ট্যাপলেটন। এই গবেষণা প্রতিবেদনের সঙ্গে কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই তার।

ফোয়েবে স্ট্যাপলেটন বলেন, ‘এসব প্লাস্টিক কণা তরল কি না এবং সেগুলো মস্তিষ্কে যাচ্ছে আবার সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এগুলো স্নায়বিক টিস্যুতে পাওয়া যাচ্ছে কি না বা তা রোগের কারণ হচ্ছে কি না, তা–ও এই গবেষণায় স্পষ্ট করা হয়নি। কীভাবে মস্তিষ্কের কোষের সঙ্গে এসব কণার মিথস্ক্রিয়া ঘটে এবং এগুলো বিষক্রিয়া ঘটায় কি না, তা বুঝতে আরও গবেষণার প্রয়োজন।’

অধ্যাপক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন বলেন, ‘এই ন্যানো প্লাস্টিকগুলো কোনো না কোনোভাবে আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে এবং মস্তিষ্কে গিয়ে পৌঁছাচ্ছে। প্লাস্টিক ফ্যাট বা লিপিড পছন্দ করে। তাই একটি তত্ত্ব হলো, আমরা খাবারের মাধ্যমে যে ফ্যাট গ্রহণ করি, সেগুলোর সঙ্গে ন্যানো প্লাস্টিক আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। তারপর তা মস্তিষ্কসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গে যায়।’

গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, ময়নাতদন্ত করা যেসব মানুষের শরীর থেকে টিস্যু সংগ্রহ করা হয়েছে, তাঁদের কিডনি ও যকৃতের চেয়ে মস্তিষ্কে ৭ থেকে ৩০ গুণ বেশি প্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে বোস্টন কলেজের অধ্যাপক ফিলিপ ল্যানড্রিগান বলেন, গবেষণায় দেখা গেছে, মানুষের হৃৎপিণ্ড, ধমনি, ফুসফুস, যকৃৎসহ বিভিন্ন অঙ্গে ক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা পাওয়া যাচ্ছে। ২০২৪ সালে এসে কেউই প্লাস্টিক এড়িয়ে চলতে পারেন না। যেমন প্লাস্টিক নেই, এমন মুঠোফোন বা কম্পিউটার পাওয়া যাবে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর সংস্পর্শে আসা কমানো যেতে পারে, যেমন প্লাস্টিকের ব্যাগ ও বোতল।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles