Thursday, June 26, 2025

আম আছে, ক্রেতা নেই


রাজশাহী অঞ্চলে এখনও বাগানে গাছে গাছে প্রচুর আম রয়েছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও কারফিউর কারণে আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, বাগানে আম পুরোপুরি পুষ্ট হয়ে গেছে। তাই রসে গাছে কিছু আম ফেটে গেছে। আরেক ধরনের মাছিপোকাতেও নষ্ট হচ্ছে আম। এ ছাড়া কিছু ক্ষতি হয়েছে বাদুর ও পাখিতে। তবে যত দিন আম নামানো বন্ধ ছিল, বাড়তি পরিচর্যা করে ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়েছে।

বুধবার (২৪ জুলাই) রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার সবচেয়ে আমের বড় বাজার বানেশ্বর হাটে গিয়ে দেখা যায়, এখানে আমের সরবরাহ প্রচুর। কিন্তু চলমান পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত ক্রেতা নেই। বুধবার এই হাটে ফজলি সাড়ে তিন হাজার টাকা থেকে চার হাজার টাকা, আশ্বিনা এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা, আম্রপালি চার হাজার টাকা থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছে।

শুধু বানেশ্বর হাটে নয়, রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার, শালবাগান, হড়গ্রাম বাজারের একই দৃশ্য। নগরীর শালবাগান এলাকার আম বিক্রেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এবার এমনিতে আমের ব্যবসা ভালো করতে পারিনি। এর মধ্যে মৌসুমের শেষ মুহূর্তে চলমান এই পরিস্থিতিতে অবস্থা আরও খারাপ হয়ে পড়েছে।’

দাম নেমেছে অর্ধেকের নিচে (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)

এদিকে ক্রেতাসংকটে নওগাঁয় বন্ধ আম বেচাকেনা। তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় বাগানে দ্রুত পেকে যাচ্ছে আম। সরবরাহ করতে না পারায় পাকা আম বাগানেই নষ্ট হচ্ছে। বাগান মালিকেরা জানান, এ অবস্থায় বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে তাদের।

মৌসুমের শেষ সময় তারপরও বিস্তৃত বাগানে বিপুল আমের সমারোহ। হলুদ আভায় দ্যুতি ছড়ানো এসব আম জানান দিচ্ছে গাছ থেকে দ্রুত নামানোর। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে নওগাঁর বরেন্দ্র এলাকার বাগান থেকে শুরু হয় আম নামানো।

তবে বাণিজ্যিক জাতের আম্রপালি, বারিফোর, কাটিমোন গৌড়মতি জাতের আমের জমজমাট কারবার শুরু হয় জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে। চলমান এ কারবারে হঠাৎ কারফিউ ঘোষণায় বন্ধ হয়ে গেছে আম বেচাকেনা।

কারফিউ ও পরিবহন জটিলতাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)

চলমান কারফিউ আর পরিবহন জটিলতায় এসব আম বাজারজাত করতে পারছে না বাগান মালিকেরা। ফলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কথা বলছেন তারা। নওগাঁর রামভদ্রপুর এলাকার আমচাষি সাহিদুজ্জামান ও সাপাহারের ফায়সাল শেখ জানান, গত ৪ দিন কোনও আম বেচাকেনা করা যায়নি। ফলে অনেক আম বাগানে নষ্ট হয়ে গেছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার লাউঘাট্টা এলাকার আমচাষি মিজানুর রহমান মিজান বলেন, ‘চলমান পরিস্থিতিতে দেশের অন্য এলাকার ব্যবসায়ীরা তেমন আসছেন না। এতে করে আম বিক্রিও করতে পারছি না। আম তো পচনশীল পণ্য। তাই এই আম নিয়ে অনেকটা বিপাকে রয়েছি। আমরা চাই, দ্রুত এর সমাধান হোক।’

নওগাঁ সদরের আম বিক্রেতা ফারুক হোসেন বলেন, ‘যে আম ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হয়েছে তা নেমে এসেছে ৬০ টাকায়। অনেক বেশি দিয়ে আম কিনে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে অনেকে। কারণ দ্রুত পেকে নষ্ট হচ্ছে। আড়তেও বিপুল আম স্তূপাকারে পড়ে রয়েছে। গত ৪ দিনে এসব আড়তে ক্রেতাশূন্য থাকায় নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আম। পাঁচ হাজার টাকা প্রতিমণ বিক্রি করা আমের দর নেমে এসেছে অর্ধেকেরও নিচে।’

বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা (ছবি: বাংলা ট্রিবিউন)

নওগাঁয় প্রতিমণ আমের দাম কারফিউর আগে ও পরে আম্রপালি পাঁচ হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ২০০ টাকা, বারি-৪ চার হাজার টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা, ফজলি পাঁচ হাজার টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা, গৌড়মতি সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ৬০০ টাকা ও কাটিমন পাঁচ হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ৪০০ টাকায় নেমে এসেছে।

চলতি মৌসুমে জেলায় ৩২ হাজার হেক্টর জমির বাগান থেকে সাড়ে চার লাখ মেট্রিক টন আম পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। আর উৎপাদিত আমের বাজার ধরা হয়েছিল প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, চলমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজশাহীতে প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত কারফিউ থাকছে। তবে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত শিথিল থাকছে। সেনাসদস্যরা প্রতিদিন তিনবার টহল দিচ্ছেন। পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব সদস্যরাও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে আছেন। কারফিউ কত দিন থাকবে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এখনও বলা হয়নি। মানুষ যেন জীবিকার তাগিদে কাজ করতে পারেন এবং নিরাপত্তাও যেন থাকে সেজন্য কারফিউ থাকছে।




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles