Friday, February 7, 2025

বৃক্ষমেলায় একটি মাত্র গাছের দোকান


মূল ফটকের ব্যানারে বড় করে লেখা বৃক্ষমেলা-২০২৪। মেলায় বসা ৩৯টির মধ্যে একটি গাছের চারা বিক্রির দোকান। বাকি দোকানগুলো ফুসকা-চটপটি, কসমেটিকসসহ শিশুদের খেলনা ও রাইড দিয়ে সাজানো। বৃক্ষমেলার নামে এমন আয়োজন মানতে পারছেন না স্থানীয় বাসিন্দারা।

বৃক্ষমেলার মূল ফটকে আয়োজক হিসেবে বন বিভাগের নাম থাকলেও তারা বলছে, এ ধরনের কোনো আয়োজনই তারা করেনি। উপজেলা প্রশাসন বলছে, মেলাটি বন বিভাগের, তারা শুধু সার্বিক সহযোগিতা করছেন। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরীয়তপুরের গোসাইরহাটের বন বিভাগ ও উপজেলা প্রশাসনের ব্যানারে উপজেলা পরিষদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাঠে গত ১ জুলাই ১৫ দিনব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় ৩৯টি দোকান বসেছে। যার মধ্যে ৩৮টি দোকানই বিভিন্ন মুখরোচক খাবার, শিশুদের খেলনা ও রাইড এবং  দা-বটির দোকান দিয়ে সাজানো। মেলার এক পাশে রয়েছে মান্নান নার্সারি নামের একটি মাত্র গাছের চারা বিক্রির দোকান। 

শুক্রবার (৫ জুলাই) মেলা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের প্রধান অংশসহ পুরো জায়গা জুড়ে ফুসকা, চটপটি, আঁচার, কসমেটিকস, দা-বটির দোকান। মেলায় আসা অধিকাংশ দর্শনার্থীরা সেসব দোকানে ভিড় করে কেনাকাটা করছেন। গাছের চারা বিক্রির দোকানটিতে তেমন কোনো ভিড় ছিলো না। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ২ হাজার টাকার গাছের চারা বিক্রি না হলেও অন্যসব দোকানে মালিকদের গড় বিক্রি ছিলো ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। 

মো. আনোয়ার হোসেন নামের এক দা-বটি বিক্রেতা বলেন, ‘এখানে ১৫ দিন মেলা হওয়ার কথা রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমার কাছ থেকে কেউ দোকান ভাড়ার টাকা উঠায়নি। তবে তাদের ভাড়া দিতে হবে। রাইডের মালিকসহ কয়েকজন দায়িত্বে রয়েছেন। তারা আমাদের থেকে ভাড়া নিয়ে মেলার আয়োজকদের বুঝিয়ে দেবেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানি বলেন, বৃষ্টির কারণে আমাদের বেচা বিক্রি কম। মেলায় আয়োজক কমিটিকে প্রতিদিন ১ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। পণ্য বিক্রি না হলে, মেলায় দোকান ভাড়া দিয়ে আমাদের লাভ হবে না। 

শিশুদের বিনোদনের জন্য মেলার একপাশে রয়েছে ভূতের বাড়ি। দোকানটির কর্মচারী ফজল বলেন, ‘একটি টিকিট আমরা ৪০ টাকায় বিক্রি করছি। এখানে শিশুদের বিনোদন দেওয়া হয়। প্রতিদিন ১০ হাজার টাকার বেশি বিক্রি হয়। মেলার ভাড়ার বিষয়টি আমি কিছু জানি না। এটা মালিক পক্ষ ভালো জানেন।’

মেলায় বসা একমাত্র নার্সারিটির মালিক মো. মান্নান হাওলাদার বলেন, ‘আমার মূল নার্সারি মাদারীপুরে। একটি বাগান শরীয়তপুরের পশ্চিম কোটাপাড়া এলাকায় রয়েছে। বৃক্ষমেলায় একটি মাত্র গাছের চারা বিক্রির দোকান, বিষয়টি তেমন ভালো দেখায় না। অন্য নার্সারি মালিকদের আসতে বলা হলেও, তারা আসেনি বলে জেনেছি।’

মেলায় ঘুরতে আসা রাকিব খান বলেন, ‘বৃক্ষ মেলার কথা শুনে ভেবেছিলাম এখানে অনেক গাছের দোকান বসবে। কিন্তু, একটি মাত্র গাছের চারা বিক্রির দোকান বসেছে মেলায়। এখানে এসে মনে হচ্ছে, এটি বাণিজ্য মেলা।’

গোসাইরহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ঢালী বলেন, ‘আমি জানতাম না এখানে কিসের মেলা হবে। বৃক্ষমেলায় সাধারণত গাছের চারা বিক্রি হওয়ার কথা। মেলায় মাত্র একটি নার্সারির দোকান। এ কেমন বৃক্ষমেলা? বিষয়টি গোসাইরহাট উপজেলাবাসীর জন্য খুবই দুঃখজনক। এটা কখনোই বৃক্ষমেলা হতে পারে না।’

মেলার আয়োজনের বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা বন কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে গোসাইরহাটে কোনো বৃক্ষমেলার আয়োজন করা হয়নি। শুনেছি নার্সারি মালিক সমিতি উপজেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে মেলার আয়োজন করেছে। তাছাড়া মেলা আয়োজনের মতো আমাদের এখন কোনো বাজেট নেই।’

উপজেলা প্রশাসনের দাবি, মেলাটির আয়োজন করেছে বন বিভাগ। এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোসাইরহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আহমেদ সাব্বির সাজ্জাদ বলেন, ‘মেলাটি বন বিভাগ আয়োজন করেছে, তা মূল ফটকে লেখা রয়েছে। মেলাটিকে সার্বিক সহযোগিতা করছে উপজেলা প্রশাসন। মেলা থেকে ভাড়া নেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ সরকারি মাঠে মেলা করতে আবার কীসের ভাড়া?’ 




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles