Saturday, June 28, 2025

জার্মানিকে ঘরের মাঠে দর্শক বানিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন


স্বাগতিক হওয়ার সুবাদে এবারের ইউরোতে হট ফেভারিট ছিল জার্মানি। একে একে গ্রুপ পর্ব ও শেষ ষোলোর বাধা পেরিয়ে মেজর টুর্নামেন্টে হতাশার সময় কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিয়েছিল তারা। ২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপে গ্রুপ থেকে বিদায়, মাঝে ইউরোতে শেষ ষোলোতে ছিটকে যাওয়ার দুঃসহ স্মৃতি মুছে ফেলে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে ডাই ম্যানশাফট। কিন্তু ১৬ বছর আগে স্পেনের কাছে ফাইনাল হারের পুনরাবৃত্তি হলো। ২০০৮ সালে শিরোপা নির্ধারণী মঞ্চে ফার্নান্দো তোরেসের একমাত্র গোলে তাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। এবার শেষ মুহূর্তে গোল করে তারা ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়েছিল। কিন্তু ম্যাচের অন্তিম মুহূর্তে গোল খায় স্বাগতিকরা। তাতে ২-১ গোলে হেরে ঘরের মাঠে দর্শক হতে হলো জার্মানদের। আর ষষ্ঠবার ইউরোর সেমিফাইনালে উঠলো তাদের সঙ্গে যৌথভাবে সর্বোচ্চ তিন শিরোপা জেতা স্পেন। 

স্টুটগার্ট এরেনায় দ্বিতীয় মিনিটে স্পেন ম্যাচের প্রথম শট নেয়। পেদ্রির নিচু দুর্বল শট ম্যানুয়েল ন্যয়ার সহজে রুখে দেন। ষষ্ঠ মিনিটে টনি ক্রুসের কড়া ফাউলের শিকার হয়ে হাঁটুতে চোট পান পেদ্রি। প্রাথমিক চিকিৎকার পর মাঠে ফিরলেও অষ্টম মিনিটে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। তার বদলে মাঠে নামেন ড্যানি ওলমো।

লিড এনে দেন ওলমো

১৩ মিনিটে বক্সের ঠিক বাইরে ওলমোকে ফাউল করে রুডিগার হলুদ কার্ড দেখেন। তাতে করে পরের ম্যাচে নিষিদ্ধ হন জার্মান ডিফেন্ডার। ওই ফ্রি কিক থেকে নেওয়া ইয়ামালের শট ডানপাশের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে আসে। ১৭ মিনিটে দারুণ সুযোগ পেয়েও ফ্যাবিয়ান রুইজ ক্রসবারের ওপর দিয়ে বল উড়ান। ২১ মিনিটে জোশুয়া কিমিখের ক্রসে জার্মান তারকা কাই হ্যাভার্জের শট স্পেনের কিপার উনাই সিমনের হাতে জমা হয়।

২৩ মিনিটে স্পেনের সেন্টার ব্যাক আইমেরিক লাপোর্তের ২৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শট সরাসরি ন্যয়ারের হাতে।

৩৫ মিনিটে কাই হ্যাভার্জের একটি প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেন সিমন, যদিও অফসাইডের পতাকা ওড়ান সহকারী রেফারি। পাঁচ মিনিট পর জার্মান কিপার ন্যয়ার কোনোমতে ওলমোর শট ফিরিয়ে দেন।

বিরতি থেকে ফিরে দারুণ একটা সুযোগ নষ্ট করে স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধের দ্বিতীয় মিনিটে নিকো উইলিয়ামসের ভাসানো বল পেয়ে ইয়ামাল দেন আলভারো মোরাতাকে। স্প্যানিশ স্ট্রাইকার বক্সের মধ্যে থেকে শট নিলেও ক্রসবারের ওপর দিয়ে যায়। ৫১ মিনিটে ইয়ামালের বক্সের ভেতরে বাড়ানো বল ডান পায়ের শটে জালে জড়ান ওলমো।

উইর্টজ সমতা ফেরান

৬৩ মিনিটে ইয়ামালের বদলি হয়ে মাঠে নামেন ফেরান তোরেস। সাত মিনিট পর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া রবার্ট আন্দ্রিখের শক্তিশালী শট চমৎকারভাবে রুখে দেন সিমন। যদিও শট বিল্ডআপের সময় অফসাইডে ছিলেন নিকলাস ফুলক্রুগ। তিন মিনিট পর বক্সের মধ্যে হ্যাভার্জের শট ব্লক করে স্পেনের লিড ধরে রাখেন দানি কারভাহাল।

৭৭ মিনিটে স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জের মুখে ফুলক্রুগের নেওয়া শট পোস্টে আঘাত করলে হতাশায় ভাসে জার্মান গ্যালারি।

চলতি আসরের যৌথ সর্বোচ্চ গোলদাতা জামাল মুসিয়ালা ৮১তম মিনিটে গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে বল মারেন। দুই মিনিট পর সিমনের ভুল কিকে বল পেয়ে যান হ্যাভার্জ। দূর থেকে নেওয়া তার বাতাসে ভাসানো শট স্প্যানিশ কিপারের মাথার ওপর দিয়ে গোলপোস্টের দিকে ছুটতে থাকে। কিন্তু বল ক্রসবারের উপর দিয়ে মাঠের বাইরে যায়। ৮৬তম মিনিটে হ্যাভার্জের লাফিয়ে নেওয়া হেড মাটিতে লেগে গোলপোস্টে ঢোকার আগে সিমনের দারুণ সেভ।

হাই প্রেসিং ফুটবল খেলে শেষ পর্যন্ত সফল হয় জার্মানি। সেমিফাইনাল থেকে নির্ধারিত সময়ের এক মিনিট বাকি থাকতে কপাল পোড়ে স্পেনের। ৮৯তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে সতীর্থের ক্রসে কিমিখ হেড করে ফ্লোরিয়ান উইর্টজের সামনে বল বাড়ান। ২১ বছর বয়সী জার্মান ফুটবলারে শট মাটিতে লাফিয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জালে জড়ায়। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা ফরোয়ার্ডের গোলে স্টুটগার্ট এরেনা যেন উৎসবের নগরীতের পরিণত হয়।

ইনজুরি টাইমের শেষ মিনিটে কিমিখের ক্রসে থমাস মুলারের শট গোলপোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়।

১-১ গোলের ড্রয়ে শেষ হয় নির্ধারিত সময়ের খেলা।  

গোল করে মেরিনোর উদযাপন

অতিরিক্ত সময়ে ব্লক করে নাচো ও কুকুরেল্লা জার্মানদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান। অন্যদিকে ওয়েরজাবালের শট গোলপোস্টের পাশ দিয়ে গিয়ে হতাশ করে স্পেনকে। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে উইর্টজ দারুণ সুযোগ পেয়েও গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে বল মারেন। বিরতির পর মুসিয়ালার শট কুকুরেল্লার হাতে লাগলে পেনাল্টির আপিল করে জার্মানি। কিন্তু স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের হাত শরীরের কাছাকাছি থাকায় তা বাতিল করেন রেফারি। ভিএআরেও মাঠের সিদ্ধান্ত বহাল থাকে। 

১১৭ মিনিটে কিমিখ বক্সের মধ্যে ফুলক্রুগকে ক্রস দেন। বল স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে সিমনের হাতে পড়ে। দুই মিনিট পর ওলমোর ক্রস থেকে বদলি নামা মিকেল মেরিনো অসাধারণ হেডে জাল কাঁপান। নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে জার্মান গ্যালারি।

ম্যাচসেরা ওলমো

শেষ মুহূর্তে ফুলক্রুগের হেড কাছের পোস্ট ঘেষে বেরিয়ে গেলে হারের যন্ত্রণায় কাতর হয় জার্মানি। তাদের কাউন্টার অ্যাটাক থামাতে মুসিয়ালাকে ইচ্ছা করে টেনে ধরে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন কারভাহাল। ১০ জন হয়ে গেলেও কোনও সমস্যা হয়নি স্পেনের। ইউরোর ইতিহাসে প্রথমবার কোনও স্বাগতিক দল কোয়ার্টার ফাইনালে খেলতে নেমে হারের তিক্ত স্বাদ পেলো। 

পুরো ম্যাচে বল ছাড়াও শারীরিক লড়াইও হয়েছে বেশ। জার্মানির ২২টি ফাউলের বিপরীতে স্পেন করেছে ১৭টি। পুরো ম্যাচে রেফারি হলুদ কার্ড দেখান ১৪টি!

আগামী মঙ্গলবার সেমিফাইনাল খেলবে স্পেন, তাদের প্রতিপক্ষ ফ্রান্স। আর দুটি ম্যাচ জিতলেই রেকর্ড চতুর্থ ইউরো জিতবে লা রোহারা। কারভাহাল ও রবিন লে নরম্যান্ড কার্ডের কারণে সেমিফাইনালে খেলতে পারবেন না।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles