Friday, March 14, 2025

উচ্চ আদালতের রায় মানছে না ভিকারুননিসা


রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক ফাতেমা জোহরা  হক। দীর্ঘদিন ক্যান্সার রোগের সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ আছেন। কিন্তু তার চিকিৎসা ব্যয় অনেক। এমন একজন শিক্ষককে আদালতের নির্দেশের পর চাকরিতে পুনর্বহাল করেনি ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে চাকরি করলেও তার বিষয়ে মানবিক বিবেচনাও করেনি প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, উচ্চ আদালতের পূর্ণাঙ্গ রায়ের পর রায়ের কপিসহ গত ২১ মার্চ অধ্যক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল প্রভাতী (সিনিয়র) শাখার ইংরেজি বিষয়ের সিনিয়র শিক্ষক ফাতেমা জোহরা হক। কিন্তু গত তিন মাসেও এই শিক্ষককে প্রতিষ্ঠানটিতে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তাকে কিছু জানানোও হয়নি।

এর আগেও গত জানুয়ারি মাসে হাইকোর্ট বিভাগ ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে রুল জারি করে ওই শিক্ষকদের বকেয়া বেতন প্রদান ও চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশনা দেন। তখনও আদালতের নির্দেশনা মানেনি ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘ভিকারুনসিনা কর্তৃপক্ষ আদালতের আদেশ বরাবরই মানতে চায় না। সরকারের নিয়োগ করা সভাপতি থাকার পরও এই অবস্থা দুঃখজনক।’

জানতে চাইলে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আগামী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে কী করা যায় আলোচনা করবো।’ এত দিন রায় বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি জানাতে চাননি।

জানতে চাইলে গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য ড. তাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফাতেমা জোহরা হক সিনিয়র শিক্ষক। তিনি ক্যান্সারে ভুগছেন। তিনি সারা বাংলাদেশে স্কুল পর্যায়ে ইংরেজির যত শিক্ষক আছেন তাদের মধ্যে অপ্রতিদ্বন্দ্বী। অত্যন্ত মেধাবী এই শিক্ষককে সুকৌশলে প্রতিষ্ঠানের বাইরে রাখা হয়েছে যা চরম অন্যায়। এই শিক্ষকের মান নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। তাকে বাইরে রেখে প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করা হচ্ছে। তিনি অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের খেসারত দিচ্ছেন। উচ্চ আদালতের রায়ের পর এমন অমানবিকতা মানা যায় না। তার ক্ষতি হলে এর দায় নিতে হবে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডিকে। এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থি।’

জানতে চাইলে গভর্নিং বডির সদস্য ড. তাজুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন,

গভর্নিং বডির সাবেক সদস্য তিন্নী খুরশিদ জাহান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ভিকারুনসিনা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ বরাবরই হাইকোর্টের রায় মানতে চায় না। আদালতের রায় দেখলে বিরক্ত হয়। অথচ সরকার নিয়োগ দেয় সভাপতি। সরকারি লোক সভাপতি থাকার পরও একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ হচ্ছে। বিষয়গুলো খুবই দুঃখজনক।’ 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অর্গানোগ্রামে পদ না থাকলেও ২০২০ সালে অবৈধভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি। ওই নিয়োগ পরীক্ষায় খাতা টেম্পারিংয়ের অভিযোগ ওঠে সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ফওজিয়া রেজওয়ান এবং সিনিয়র শিক্ষক ফাতেমা জোহরা হকের বিরুদ্ধে।

ঘটনার তদন্ত করে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা অধ্যাপক ফওজিয়া রেজওয়ানকে গত ৩০ জুন অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। অথচ অভিযোগ ওঠার পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিষ্ঠান থেকে সরাসরি চাকরিচ্যুত করা হয় ফাতেমা জোহরা হককে। তার গভর্নিং বডির সদস্যপদও (শিক্ষক প্রতিনিধি) বাতিল করা হয়। এই ঘটনার পর ফাতেমা জোহরা হক হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন। আদালত ২০২১ সালের ৪ মে চাকরিচ্যুতির আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। আদালত স্থগিতাদেশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পাঠালেও তাকে দায়িত্ব থেকে বাইরে রাখা হয়। এরপর ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুতির স্থগিতাদেশ আরও এক বছরের জন্য বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগ। তারপরও তাকে তার পদে ফেরার সুযোগ দেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ।

সর্বশেষ গত ১৩ মার্চ হাইকোর্ট বেঞ্চ চূড়ান্ত রায়ে শিক্ষক ফাতেমা জোহরা হককে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। এই রায়ের পরও ভিকারুননিসা কর্তৃপক্ষ এই শিক্ষককে চাকরিতে যোগদান করতে দেয়নি। এমনকি তার বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাও আর আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।

শিক্ষক ফাতেমা জোহরা হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বরখাস্তের আদেশ উচ্চ আদালত স্থগিত করার পর আমি ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে চাকরিতে যোগদানের জন্য চার বছরে ছয়বার লিখিত আবেদন করেছি। অথচ বেআইনিভাবে আমাকে যোগদান করতে দেওয়া হয়নি। একজন ক্যান্সার রোগী হিসেবে আমার চিকিৎসা এবং অন্যান্য খরচ চালিয়ে যাওয়া কঠিন। কিন্তু গভর্নিং বডি আমার বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি।

চূড়ান্ত রায়ের পর গত ২১ মার্চ আমি রায়ের কপিসহ চাকরিতে যোগদানের চিঠি জমা দিয়েছিলাম, গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান স্যারের সঙ্গে দেখা করে তাকে রায় ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করার অনুরোধ করেছিলাম। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে তিনি দেখবেন। কিন্তু গত তিন মাসের বেশি সময় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ আমাকে কিছুই জানায়নি।




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles