সিন্ডিকেট করে চামড়ার বাজারে কেউ যেন অস্থিরতা তৈরি করতে না পারে সেজন্য চামড়া ব্যবসায়ীদের নজরদারির মধ্যে রাখবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পাশাপাশি লবণ ব্যবসায়ীদেরও নজরদারিতে রাখা হবে। লবণ সিন্ডিকেটের কারণেও চামড়ার বাজার অস্থির হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে কোরবানির ঈদের সময় চামড়ার বাজারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় চামড়ার বাজার স্থিতিশীল রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রতিবছর এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর কারণে চামড়ার বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। কোরবানির চামড়া নিয়ে মুনাফালোভী ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের সিন্ডিকেটের কারণে দানের চামড়ার উপর নির্ভরশীল অনেক দুস্থ ব্যক্তি, মাদ্রাসা ও এতিমখানা বিপাকে পড়ে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, প্রতি বছর দেশে যে পরিমাণ চামড়া উৎপাদন হয়, তার অর্ধেকের বেশি পাওয়া যায় কোরবানির ঈদে। এসময়ে চামড়া সংগ্রহ করে এর বিক্রির টাকার ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে দেশের অনেক মাদ্রাসা ও এতিমখানা। আর এই কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে চামড়ার দাম কমিয়ে দিতে কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন পর্যায়ে একটি অসাধু সিন্ডিকেট কাজ করছে। ফলে চামড়ার প্রকৃত দাম পাওয়া যায় না। সিন্ডিকেটের কারণে অনেক চামড়া পচে নষ্টও হয়ে যায়।
জানা গেছে, চলতি বছর ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় জানানো হয়, কোরবানির সময় উৎপাদিত প্রায় এক কোটি পশুর চামড়া ট্যানারিগুলো প্রক্রিয়াজাত করতে পারে না। এসময় উৎপাদিত বিপুল পরিমাণ কাঁচা চামড়ার যথাযথ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বেশ চ্যালেঞ্জিং। চাহিদার তুলনায় চামড়ার উৎপাদন বেশি হওয়ায় বাজার স্থিতিশীল রাখায়ও বেশ চ্যালেঞ্জের।
সভায় শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি বলেন, যথাযথভাবে পশু থেকে চামড়া ছাড়ানোসহ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে লবণ লাগানোর বিষয়টি নিশ্চিতে তারা কাজ করবে। সেই সঙ্গে সারাদেশের এতিমখানাগুলোতে বিনামূল্যে লবণ সরবরাহের জন্য এই মন্ত্রণালয় কাজ করছে।
সভায় বিসিকের প্রতিনিধি বলেন, চলতি বছর দেশে সর্বোচ্চ পরিমাণে লবণ উৎপাদন হয়েছে। কাঁচা চামড়ায় ব্যবহারের অপরিশোধিত লবণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ টাকা থেকে ১৭ টাকা ৫০ পয়সা। চাহিদামতো এক লাখ মেট্রিক টন লবণ সরবরাহ করা হবে। তবে বিসিক মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও মজুতদাররা লবণের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে বলেও তিনি জানান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছরও বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি লবণ উৎপাদন হয়েছিল। তবে বাজারে এর প্রভাব ছিল না। কোরবানির আগে লবণের দাম কমার বদলে, উল্টো কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা বেড়ে গিয়েছিল। কোরবানির আগে হঠাৎ করে লাফিয়ে লাফিয়ে দাম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটকে দায়ী করেন সাধারণ চামড়া ব্যবসায়ীরা। এভাবে লবণের দাম বাড়লে এর প্রভাব পড়ে কাঁচা চামড়ার উপর। তাদের মতে, কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্য দাম নিশ্চিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় লবণের বাড়তি দাম। চামড়ার সরকার নির্ধারিত দাম কার্যকর রাখতে তারা লবণের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেওয়ার উপর গুরুত্ব দেন।
সভায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, লবণের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা ও চামড়ার সঠিক মূল্য নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ঈদের পর সক্ষমতার চেয়ে ট্যানারিগুলো বেশি চামড়া কেনে। গত বছর প্রায় ৩০ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়েছিল। ট্যানারিগুলো সক্ষমতা অনুযায়ী চামড়া কিনতে পারলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে। এছাড়া গত বছর ঈদের পরের সাতদিন ঢাকা থেকে কোনও চামড়া বাইরে যায়নি এবং ঢাকাতেও কোনও চামড়া ঢুকেনি। এই ব্যবস্থায় সফলতা পাওয়া গেছে। তবে গত বছর বিদ্যুতের ভোল্টেজ ওঠা-নামার কারণে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণে সমস্যা হয়েছিল। চলতি বছর তিনি তিন মাস নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ জানান।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সিন্ডিকেট তৈরি করে কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ন্ত্রণ করতে কেউ যেন না পারে সেটি নিশ্চিতে কাজ করছে মাঠ পর্যায়ের সদস্যরা। অসাধু সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে তারা কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেবে। লবণের সিন্ডিকেট ও অধিক মূল্যে বিক্রির বিষয়গুলোও তারা মনিটরিং করবে। সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচার রোধে বিজিবির সঙ্গে একাধিক সংস্থা কাজ করবে।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ীদের আমরা সতর্ক করতে চাই। চামড়া ব্যবসা নিয়ে কোনও সিন্ডিকেটকে আমরা বরদাশত করবো না। চামড়ার ব্যবসা নিয়ে যাতে কোনও এলাকার মধ্যে গোলমালের সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমাদের গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com