গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মামলায় গ্রেফতার হাজতি কারাগারে মারা গেছেন। মারা যাওয়া হাজতির নাম ইলাহী সিকদার (২৫)। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাত দেড়টার দিকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারের সুপার আল মামুন ও গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বিচিত্র কুমার বিশ্বাস নিশ্চিত করেছেন।
ইলাহী সিকদার গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার ফলসি গ্রামের মহি সিকদারের ছেলে। তার বড় ভাই কুদরত সিকদার জানান, গত মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ফলসি গ্রামের বাড়ি থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। রাত দেড়টার দিকে পুলিশ কল দিয়ে জানায়, ভাইকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পর দিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। গতকাল রাতে জেলখানা থেকে কল দিয়ে জানানো হয়, ইলাহি সিকদার অসুস্থ। রাত ৩টার দিকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, তার ভাইয়ের লাশ পড়ে আছে।
জেলা কারাগারের সুপার আল মামুন জানান, গত ৪ সেপ্টেম্বর একটি মামলার আসামি হিসেবে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সে সময় তাকে অসুস্থ দেখানোয় হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে আবার কারাগারে নিয়ে আসা হয়। পরে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আবারও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত দেড়টার দিকে মারা যায়। আইনি কার্যাদি সম্পন্ন করে লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক বিচিত্র কুমার বিশ্বাস বলেন, ওই হাজতি কী কারণে মারা গেছেন, এখনও আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ ২৫০ বিশিষ্ট আধুনিক হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলে বোঝা যাবে, কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জিবিতষ বিশ্বাস বলেন, ইলাহি সিকদারকে তিন বার হাসপাতালে আনা হয়। প্রথমে ৩ সেপ্টেম্বর সেনাবাহিনীর সদস্যরা রাত ১১টা ২৪ মিনিটে এবং ৪ সেপ্টেম্বর পুলিশ সদস্যরা রাত ১টা ৩৭ মিনিটে এনে চিকিৎসা দিয়ে নিয়ে যায়, পরে ২টা ১১টা ভর্তি করে। তখন তার শরীরের নিচের অংশে আঘাতের চিহ্ন ছিল। গত রাতে ১টার দিকে তাকে জেলা কারাগার থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে এখানে আনার আগেই মৃত্যু হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণ আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ করে এর প্রতিবাদে ১০ আগস্ট বিকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে গোপালগঞ্জ সদরের গোপীনাথপুর বাসস্ট্যান্ডে দেশি অস্ত্র নিয়ে মহড়া ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে। খবর পেয়ে গোপালগঞ্জে কর্তব্যরত সেনাসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের মহাসড়ক ছেড়ে দিতে বলেন। তখন সেনাসদস্যদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীরা বাগবিতণ্ডায় জড়ান। একপর্যায়ে তারা সেনাসদস্যদের ওপর হামলা করেন।
এতে সেনাবাহিনীর ৪ কর্মকর্তাসহ ৯ জন আহত হন। এ ছাড়া সেনাবাহিনীর দুটি রাইফেল, ছয়টি ম্যাগাজিন ছিনিয়ে নিয়ে একটি গাড়িতে আগুন ও দুটি গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। পরে দুটি অস্ত্র ও তিনটি তিনটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।
এ ঘটনায় ২২ আগস্ট সকালে ১০ বেঙ্গল রেজিমেন্টের লেফটেনেন্ট কর্নেল মাকসুদুল আলম বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১০৬ জনের নাম উল্লেখ করার পাশাপাশি তিন হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন।
মামলায় বেআইনি জনতাবদ্ধে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা করার জন্য সরকারি কাজে বাধা দিয়ে হত্যার লক্ষ্যে সরকারি কর্মচারীদের মারধর করে গুরুতর জখম, অস্ত্র কেড়ে নিয়ে সরকারি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ করা হয়।
গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান বলেন, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ২১ জন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com