ঈদকে সামনে রেখে সালাদ তৈরির সবজির দাম শতকের ঘর পেরিয়েছে। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে টমেটো, গাজর, শসা। যদিও টমেটো-গাজর আগেই শতক ছুঁয়েছে। এবার শতকের ঘর পার করেছে শসা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এক লাফে শসার দাম ৪০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় গিয়ে পৌঁছেছে। বিক্রেতারা বলছেন, টমেটো-গাজর এই সিজনের সবজি না হওয়ায় এগুলোর দাম বাড়তি। আর শসার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়েছে। তবে ক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, ঈদে সালাদের সবজির চাহিদা বেশি থাকে বলে আগে থেকেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
অপরদিকে পেঁয়াজের দাম এখনও শতকের ঘরে না পৌঁছালেও রয়েছে কাছাকাছি অবস্থানে আছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচ টাকা বেড়ে আজকে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। একইসঙ্গে ঈদে চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়েছে আদারও। সপ্তাহ ঘুরতেই কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ভারতীয় আদার দাম হয়েছে ২৮০ টাকা।
শুক্রবার (৭ জুন) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরে সরেজমিন দেখা যায় কাঁচাবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি। এদিকে গতকাল ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার পর আজ কাঁচাবাজারে এর কোনও প্রভাব পড়েনি। বাজার পরিস্থিতি অন্যান্য সময়ের মতোই।
আজকের বাজারে কয়েকটি ছাড়া সব সবজির দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। দাম বেড়েছে শসা, বরবটি, লম্বা বেগুন, কাঁকরোল ও লাউয়ের। এসব সবজির দাম বেড়েছে ১০ টাকা থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহে একলাফে শসা ও বরবটির দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা করে। গত সপ্তাহে শসা ও বরবটির দাম ছিল যথাক্রমে ৮০ টাকা ৬০ টাকা। আর কাঁকরোল ও লম্বা বেগুনের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ২০ টাকা ও ১০ টাকা।
আজকের বাজারে টমেটো ১০০, দেশি গাজর ৯০, চায়না গাজর ১২০, লম্বা বেগুন ৮০, সাদা গোল বেগুন ৭০, কালো গোল বেগুন ৭০, শসা ১২০, উচ্ছে ৬০, করলা ৬০, কাঁকরোল ৮০-১০০, পেঁপে ৫০, ঢেঁড়স ৬০, পটল ৫০-৮০, চিচিঙ্গা ৬০, ধুন্দল ৫০, ঝিঙা ৬০, বরবটি ১০০, কচুর লতি ৮০, কচুরমুখী ১২০, মিষ্টি কুমড়া ৩০, সজনে ১২০, কাঁচা মরিচ ২০০, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৮০, চাল কুমড়া ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা করে।
সালাদের সবজির দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে দোকানি আবু কালাম বলেন, টমেটো ও গাজর শীতকালীন সবজি। এগুলোর এখন সিজন না, তাই দাম বাড়তি। আর শসার চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়েছে। ঈদ আসছে বলে বেড়েছে এমনটা না।
বাজার করতে আসা শরিফুল ইসলাম বলেন, টমেটো-গাজর শীতকালীন সবজি হলেও এখন সারা বছরই পাওয়া যায়। শসার দামও বাড়লো; আসলে ঈদে সালাদের চাহিদা বেশি থাকে, তাই ব্যবসায়ীরা আগে থেকেই দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সিজন হচ্ছে একটা উছিলা। শসার তো এখন সিজন চলে, তাহলে দাম বাড়লো কেন?
বাজেটে সবজির বাজারে কোনও প্রভাব পড়েছে কিনা জানতে চাইলে বিক্রেতা আব্দুল বলেন, বাজেটে সবজির কিছু হয়নি। যদি কোনও কিছু আমদানি হয় তখন দাম কমে যায়। আর এমনিতেই সবজির দাম প্রতিদিনই ওঠানামা করে, যেহেতু এটা কাঁচামাল।
বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী তবারক হোসেন বলেন, বাজেটে দাম আর কত বাড়াবে, কী-ই বা বাড়াবে। এমনিতেই তো সব কিছুর দাম বেশি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা এমনিতেই কমে এসেছে৷ তবে এবার একটা জিনিস দেখলাম, প্রতিবার বাজেট হলেই বাজারে একটা প্রভাব পরে, মানে দাম বেড়ে যায়। আজকে দেখলাম আগে যে দাম ছিল সেরকম দামই আছে। তেমন কিছু পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে সবজির অপরিবর্তিত থাকলেও বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ ও আদার দাম। আজকের বাজারে মানভেদে ক্রস জাতের পেঁয়াজ ৮০, দেশি পেঁয়াজ ৯০, লাল আলু ৬০, সাদা আলু ৬০, বগুড়ার আলু ৭০, নতুন দেশি রসুন ২২০, চায়না রসুন ২২০-২৩০, চায়না আদা ২৬০, ভারতীয় আদা ২৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানেই দেশি পেঁয়াজের দাম ৫, লাল আলুর দাম ৫ আর ভারতীয় আদার দাম ২০ টাকা বেড়েছে।
ঈদ আসছে বলে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে কিনা জানতে চাইলে বিক্রেতা শরীফ বলেন, এগুলোর দাম তো আগে থেকে বাড়তি ছিল। ঈদ উপলক্ষে বাড়ছে এমন না।
বাজেটে আলু-পেঁয়াজের দামের ওপর প্রভাব পড়া নিয়ে বিক্রেতা মো. ইউসুফ বলেন, বাজেটে যখন কোনও কিছুর দাম কমার কথা বলে, সেটি শুরু হতে অনেক সময় লাগে। কিন্তু যেসব জিনিসের দাম বাড়বে বলে সেগুলো পরের দিনই বেড়ে যায়।
এছাড়া আজকের বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী, ১৯০০-২২০০, রুই ৩৬০-৫৫০ , কাতল ৪০০-৪৫০, কালিবাউশ ৪৫০-৫০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০-১৪০০, কাচকি ৫০০, কৈ ২৬০-৩০০, পাবদা ৫০০-৬০০, শিং ৪৫০-৬০০, টেংরা ৬০০-৭০০, বেলে ৬০০-১৩০০, বোয়াল ৭০০-১০০০, রূপচাঁদা মাছ ১২০০-১৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, আজকে ব্রয়লার মুরগির দাম আরও কমে এসেছে। একইসঙ্গে কমেছে কক মুরগি ও লেয়ার মুরগির দাম। আজকে ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৭৮-১৯০, কক মুরগি ২৮৩-২৯৫, লেয়ার মুরগি ৩৪০, দেশি মুরগি ৬৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, আজকে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ৫ থেকে ৭ টাকা। লেয়ারের কমেছে ৫ ও ককের কমেছে ২২ থেকে ৩৫ টাকা।
বিক্রেতা শাহজাহান বলেন, মুরগির দাম আরও কমে যাবে। ব্রয়লার মুরগির দাম কয়েক দিনের মধ্যেই ১৬০ টাকায় নেমে আসবে।
বাজেটের প্রভাব নিয়ে বি.বাড়িয়া চিকেন হাউজের বিক্রেতা মো. সুলতান বলেন, গতবার বাজেট করার পর থেকে ব্যবসা খারাপ হওয়া শুরু হইছিল, এবারও সেটাই মনে হচ্ছে। ব্যবসা ভালো হবে না। কারণ, মানুষের কাছে পয়সা নাই। পয়সা থাকলে না ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হবে।
অপরদিকে, মুরগির দাম কমলেও গরুর মাংস ও ডিমের বেশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আজকে গরুর মাংস ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ টাকা কেজি দরে। মুরগির লাল ডিম ১৫০ এবং সাদা ডিম ১৪৫ টাকায় ডজন বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে সাদা ডিমে ডজনে বেড়েছে ৫ টাকা করে।
এদিকে আজকে কয়েকটি মুদিপণ্যের দাম কমেছে। ছোট মসুর ডালের দাম কমেছে ৫, খেসারি ডালের দাম কমেছে ২০, প্যাকেটজাত চিনির দাম কমেছে ১০, আটা দুই কেজির প্যাকেটের দাম কমেছে ১৫ টাকা। আর ছোলার দাম বেড়েছে ৫ টাকা।
আজকে প্যাকেট পোলাওর চাল ১৫৫, খোলা পোলাওর চাল মানভেদে ১১০-১৪০, ছোট মসুর ডাল ১৩৫, মোটা মসুর ডাল ১১০, বড় মুগ ডাল ১৬০, ছোট মুগ ডাল ১৮০, খেসারি ডাল ১০০, বুটের ডাল ১১৫, ডাবলি ৮০, ছোলা ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০, খোলা ঘি ১২৫০, প্যাকেটজাত চিনি ১৩৫, খোলা চিনি ১৩০, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১১৫, খোলা সরিষার তেল প্রতিলিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেলিম জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো. সেলিম বলেন, বাজেটে শুধু কাজু বাদামের দাম বাড়ানো হলেও বাজারে সব ধরনের বাদামের দামই বেড়ে গেছে। আর এমনিতে অন্যান্য প্রোডাক্টের দাম স্বাভাবিকই আছে। স্বাভাবিক বলতে যেমন ছিল তেমনই আরকি। তবে চিনির দাম কমেছে। আর সয়াবিন তেলের দাম কোম্পানি থেকেই কমানো হয়েছে। এর কারণ হচ্ছে সয়াবিনের চাহিদা কমে গিয়েছে, তাই কোম্পানি দাম কমিয়ে দিয়েছে।
এক সপ্তাহ আগে কাজু বাদাম ছিল ১৩০০, আজকে হয়েছে ১৪০০ টাকা। পেস্তা বাদাম ছিল ২৭০০, আজকে হয়েছে ২৮০০ টাকা। কাঠবাদাম ছিল ১১৮০, আজকে হয়েছে ১২৫০ টাকা।
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com