ছাত্র সমাজের লড়াই জারি থাকবে বলে সাফ জানালেন পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের প্রধান সমন্বয়ক সায়ন লাহিড়ি। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শনিবার জেল থেকে ছাড়া পেয়ে সায়ন বলেন, ‘যতদিন না আরজি করের দোষিরা শাস্তি পাবেন ততদিন লড়াই জারি থাকবে।’ তবে উচ্চ আদালতের এই রায়ে সন্তুষ্ট নয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রায়টির বিরুদ্ধে এদিন সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন তারা। এর বিরুদ্ধে সায়নের পরিবারের পক্ষ থেকেও পাল্টা ক্যাভিয়েট দাখিল করা হচ্ছে।
কলকাতা হাইকোর্টে শুক্রবার জামিন পাওয়ার পর সায়নকে শনিবার বেলা ২টার মধ্যে জেল থেকে ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ। সেই নির্দেশ অনুসারে, এদিন বেলা ১ টা ৪১ মিনিটে সায়নকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জেল থেকে বেরিয়ে ‘পাশে থাকার জন্য শুভেন্দু অধিকারীকে ধন্যবাদ’ জানান সায়ন। এরপরই তিনি সাফ জানান, ‘যতদিন পর্যন্ত নির্যাতিতা দিদির বিচার না পাবেন ততদিন আন্দোলন চলবে। আর হাইকোর্টের রায়ে আমি খুশি।’
পুলিশের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছেন সায়ন লাহিড়ি। পুলিশ তার বিরুদ্ধে দমন-পীড়নের ধারা প্রয়োগ করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন। একইসঙ্গে নবান্ন অভিযানে আটক বাকিদের মুক্তির জন্য লড়াই জারি থাকবে বলেও জানান সায়ন।
পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ার অভিযোগ নিয়ে শনিবার প্রশ্ন করা হয়েছিল ছাত্র সমাজের প্রধান সমন্বয়কে। ওই ঘটনাকে ‘খুব দুর্ভাগ্যজনক’ বলে ব্যাখ্যা করেন সায়ন। তিনি বলেন, ‘যারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অশান্তির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছিলেন, পুলিশ তাদের চিহ্নিত করুক। আমাদের আন্দোলনকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছিলেন তারা।’
সায়নের জামিনে হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের যাচ্ছে রাজ্য সরকার। কলকাতার বাঙ্কশাল আদালতের বাইরে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কোনও প্রকার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান সায়ন। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
পরে অবশ্য সায়ন বলেন, ‘আমরা সাহস দেখিয়েছিলাম রাজ্যের দমন-পীড়ন নীতির বিরুদ্ধে। সেটা রাজ্য মানতে পারেনি। আদালতে তাদের মুখ পুড়ছে। তাই সুপ্রিমকোর্টে যাচ্ছে। আমরাও এটা মোকাবিলা করবো। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলছি। শুভেন্দুদা এগিয়ে এসেছেন। সব রাজনৈতিক দলকেই আমরা আহ্বান করেছিলাম। তবে আর কেউ আসেননি।’
সায়নের দাবি, ‘আরজি করের ঘটনায় রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দফতরের বড়ো কোনও দুর্নীতি সামনে চলে আসতে পারে। আর তাই সঠিক তদন্ত এখনও হয়নি। ওই ঘটনায় মাত্র একজন গ্রেফতার হয়েছেন। আর ঘটনার বিচার চাইতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন ৫০০ জন। আমাদের পেছনে কেউ ছিলেন না। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর দম্ভ আর অহংকারকে চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। তাই এরকম শান্তিপূর্ণ মিছিলের ওপর জলকামান চলেছিলো। আমরা প্রথমদিন থেকেই বলে এসেছি, গান্ধিজীর অহিংসা নীতিতে আন্দোলন করবো। তাই জাতীয় পতাকা ছাড়া ওইদিন আমাদের হাতে আর কিছুই ছিল না। আমরা আগেই বলেছিলাম, দুষ্কৃতীদের ঢুকিয়ে দিয়ে আমাদের কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হবে। সেটাই হয়েছে।’
শুক্রবারই ছাত্র সমাজের এই নেতার মুক্তির দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সায়নের মা অঞ্জলি লাহিড়ি। বিচারপতি অমৃতা সিনহার বেঞ্চ মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল সায়নকে। তার গ্রেফতারি নিয়ে গতকালই বিচারপতির সিনহা রাজ্যকে তুলোধনা করেছিলেন। ‘প্রভাবশালী’ যুক্তি দেখিয়ে সায়নের মুক্তি ঠেকাতে রাজ্য নানা যুক্তি দাঁড় করেছিলো। তবে কোনও যুক্তিই ধোপে টেকেনি।
রাজ্যের আইনজীবীরা যুক্তি সাজিয়েছিলেন, ওই কর্মসূচির কোনও পুলিশি অনুমতি ছিল না। তারপরও জমায়েত ও মিছিল হয়। ওই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ ছিল না বলেও আদালতে জানিয়েছিল রাজ্য। এমনকি ‘প্রভাবশালী’ তত্ত্বও জোড়ার চেষ্টা করা হয়। তবে উচ্চ আদালতে সেই যুক্তি টেকেনি। বিচারপতি সিংহ পর্যবেক্ষণে সাফ জানিয়েছিলেন, সায়ন কোনও ‘প্রভাবশালী’ নন।
এদিকে, সায়নের মুক্তির পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বাংলায় পরিবর্তনের ডাক দিয়ে বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ এগিয়ে চলো। তরুণী ও তরুণদের হাতেই পরিত্রাণ পাবে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যে অন্যায় অবিচার অরাজকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেই কারাগারে ঢুকিয়ে দিচ্ছে সরকার। লড়াই চালিয়ে যাও, আওয়াজ ওঠাও, পরিবর্তন অবশ্যম্ভাবী।’
এদিন সায়নের মা অঞ্জলি দেবী বলেন,‘আমি সায়নের মুক্তির জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আমি জানতাম, আমার ছেলে নির্দোষ। আদালতের এই রায়ে আমি খুশি। ও ছোট থেকেই প্রতিবাদী। বালিগঞ্জ রাষ্ট্রীয় বিদ্যালয়ে পড়তো। ভালো রেজাল্ট করেছিলো।’
এসময় তিনি আরও জানান, ‘মাত্র ৭ বছর বয়েসে সায়নের বাবা মারা যান। তারপর থেকেই আমি ওকে বড়ো করেছি। সিপিএমের আমলে আমাদের ওপর খুব অত্যাচার হয়েছিল। আমি টালিগঞ্জে একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে চাকরি করি। প্রথম থেকেই ওর পেছনে কেউ ছিল না। একটা সময় বিজেপি করতো। পরে ওসব ছেড়ে দিলো। তবে, সামাজিক কাজকর্ম করতো। মাঝে অরুণা্চল প্রদেশের দুর্গম অঞ্চলে একটা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিশুদের স্কুলে পড়াতো। পরে তীব্র ঠান্ডার কারণে কলকাতায় ফিরে আসে।’
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com