তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
রাজশাহীর পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি বয়স বাড়িয়ে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত পপি খাতুন! নির্বাচন কমিশনে (ইসি) যেদিন বয়স সংশোধনের আবেদন করেন, তার পরের দিনই বয়স বাড়িয়ে দেয়া হয়! অথচ জাতীয় পরিচয়পত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদ, পাসপোর্ট, ভোটার তালিকা, ফেসবুক- সবকিছুতেই দেয়া জন্ম তারিখ অনুযায়ী পপি খাতুনের বয়স ২২।
কিন্তু উপজেলা নির্বাচনের আগে রাতারাতি তার বয়স বেড়ে হয়ে গেছে ২৬। এর দুদিন পর রাজশাহীর পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন পপি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। গত ২৯ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে পপি বিজয়ীও হন।
নির্বাচনে পপি খাতুন ২৪ হাজার ২৭৯ ভোট পেয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত ৪ জুন পবা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পপিসহ বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন গেজেট প্রকাশ করে। পপি এখন শপথ গ্রহণের অপেক্ষায় রয়েছেন। পপি খাতুনের বাড়ি পবা উপজেলার দারুশা গ্রামে। হতদরিদ্র একটি পরিবারের মেয়ে পপির হঠাৎ নির্বাচনে এসে বিজয়ী হওয়ায় হতবাক এলাকার লোকজন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে পপি পঞ্চম শ্রেণি পাশ করেন। সনদে তার জন্ম তারিখ ২০০৩ সালের ১২ জানুয়ারি। ২০১৭ সালে এসএসসি পাশ করেন তিনি। এই সনদে তার জন্ম তারিখ ২০০২ সালের ১২ জানুয়ারি। স্কুলের টেবুলেশন শিটেও একই জন্ম তারিখ। চলতি বছর সর্বশেষ ভোটার তালিকাতেও তার জন্ম তারিখ ২০০২ সালের ১২ জানুয়ারি।
তবে নির্বাচনের আগে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে পপি তার সব সনদে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে ১৯৯৮ সালের ১২ জানুয়ারি করার আবেদন করেন। চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল শিক্ষা বোর্ডের নাম ও বয়স সংশোধন কমিটির সভায় তা পাশ হয়। শিক্ষা সনদের বয়স সংশোধনের পর গত ২০ মার্চ জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ সংশোধনের আবেদন করেন পপি। ৩ এপ্রিল এ আবেদন বাতিল হয়ে যায়।
পরে ২৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনে আরেকটি আবেদন করেন তিনি। এবার রহস্যজনকভাবে পপির আবেদন গ্রহণ করা হয়। বদলে যায় জন্ম তারিখ। নতুন তারিখ অনুযায়ী- ভোটের দিন তার বয়স ছিল ২৬ বছর ৪ মাস ১৭ দিন। আগের জন্ম তারিখ অনুযায়ী ২৫ বছর পূর্ণ না হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারতেন না তিনি।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, জন্ম তারিখ পরিবর্তনের জন্য পপি নির্বাচন কমিশনে যে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন তাতে ভয়াবহ জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী, জন্ম তারিখ সংশোধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজের সঙ্গে নিজের এসএসসি সনদ সংযুক্ত করার কথা; কিন্তু হযরত আলী নামে একজন শিক্ষার্থীর সনদ সংযুক্ত করেছেন পপি। হযরত আলী ২০১৭ সালে নওহাটা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেছেন। হযরত আলীর জন্ম তারিখ ২৯ জুন, ২০০১।
অথচ এমন ত্রুটিপূর্ণ আবেদন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় গ্রহণ করে পরদিনই জাতীয় পরিচয়পত্রটি পরিবর্তন করে দেয়। নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পেয়েই পপি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন গত ২ মে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন জমা দেন। তিনি রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের অর্থনীতির শিক্ষার্থী। পদ-পদবি ছাড়াই নিজেকে ছাত্রলীগের নেত্রী দাবি করেন পপি খাতুন।
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আইন অনুযায়ী, ২৫ বছর বয়সের কম কেউ প্রার্থী হতে পারেন না। জন্ম তারিখ সংশোধনের পর ভোটের আগে পপির বয়স বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ বছর। এর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এসব সংবাদের সূত্র ধরে ইসি পপির জাতীয় পরিচয়পত্র কিভাবে সংশোধন হয়েছে তার তদন্ত শুরু করেছে। এ জন্য তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (প্রবাসী ও নিবন্ধন) মো. আব্দুল মমিন সরকার। কমিটির সদস্য সচিব জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মুদ্রণ ও বিতরণ শাখার উপপরিচালক (চ.দা) এএসএম ইকবাল হাসান। এছাড়া জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের সহকারী প্রোগ্রামার (উপাত্ত ব্যবস্থাপনা শাখা) মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে তদন্ত কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে।
গতকাল (বুধবার) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. ফরহাদ হোসেন এক চিঠিতে এ কমিটি করে দেন। চিঠির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও শাখায় দেয়া হয়েছে। রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বৃহস্পতিবার (২০ জুন) এ চিঠি হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন। তবে তদন্তের কোনো বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেননি। কমিটির সদস্যদের এই চিঠি প্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত শেষ করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ জার্নাল/কেএইচ
👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com