Friday, July 5, 2024

তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে ঝুঁকিতে স্বাস্থ্য ও কৃষি: গবেষণা


বাংলাদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির চলমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে। ইতোমধ্যেই ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ তাপপ্রবাহের কারণে অনেকে স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগছেন। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা কৃষি খাতেও উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করছে। এমন তথ্যই উঠে এসেছে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) গবেষণায়।

মঙ্গলবার (২ জুন) উইমেন’স ভলান্টারি অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউভিএ) অডিটোরিয়ামে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জলবায়ু পরিবর্তন এবং বাংলাদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ তুলে ধরে এসডো।

সংস্থাটির গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে চারটি প্রধান কারণ দায়ী। ১. বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান ২. জলবায়ুর পরিবর্তন ৩. জীবাশ্ম জ্বালানি এবং শিল্পকারখানা থেকে কার্বন নির্গমন বৃদ্ধি, যা গ্রিন হাউজ গ্যাস বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং ৪. এল নিনো ইভেন্টের মতো মহাসাগরীয় প্রভাব। এই কারণগুলো সম্মিলিতভাবে সাম্প্রতিক তাপপ্রবাহকে আরও তীব্র করে তুলেছে।

গবেষণায় বলা হয়, মানুষের পরিবেশবিরোধী কার্যকলাপের কারণে দ্রুত গতিতে জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রতিদিন তাপ প্রবাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে, ফলে পৃথিবী দ্রুত শীতল থেকে উষ্ণতর হচ্ছে। বাংলাদেশে এই পরিবর্তনের ফলে প্রায়ই তীব্র তাপপ্রবাহ হচ্ছে, যেখানে দৈনিক সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশেষ করে শীতকালে। যদি এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তবে ভবিষ্যতে মানবজাতির জন্য তা অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে। বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্য দায়ী কার্যকলাপগুলো কমিয়ে এবং কার্যকর ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে এর প্রভাব হ্রাস করা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে পরিবেশবান্ধব কৃষি উৎপাদন ও নগর পরিকল্পনা করা এবং উচ্চ তাপমাত্রার হুমকি থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য স্বাস্থ্য সেবা জোরদার করা। এই তীব্রতর অবস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অবস্থান শক্ত করতে আন্তর্জাতিক সমর্থন এবং তহবিল জরুরি।

গবেষণাটি বাংলাদেশে একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা তুলে ধরেছে। ২০০০ সালের শুরু থেকে তাপমাত্রা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পূর্ববর্তী তথ্যানুসারে, ১৯৯৪, ২০০৪ এবং ২০২৪ সালে চরম তাপপ্রবাহ বাংলাদেশে আঘাত হানে। এই প্যাটার্নটি থেকে বোঝা যায় যে এই ধরনের তীব্র তাপপ্রবাহের ঘটনা প্রায় প্রতি দশকে পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এই প্রবণতা অনুসরণ করে, অনুমান করা যায় যে ২০৩৪ সালের দিকে আরেকটি চরম তাপপ্রবাহ ঘটতে পারে। যদিও জলবায়ু পরিবর্তন আগে থেকে অনুমান করা যায় না, তবে অনুমানটি আমাদের প্রস্তুতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারনা দেয়।

গবেষণায় ১৯৭২ সাল থেকে তাপপ্রবাহের রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়েছে, যা সেই সময় প্রায় ২৭ ডিগ্রি ছিল। বর্তমানে ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে তা ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে দাঁড়িয়েছে।

গবেষণায় আরও জানা গেছে যে, ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় উচ্চ তাপপ্রবাহের কারণে অনেকেই স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন কিন্তু এই সমস্যা মোকাবেলার বিষয়ে তাদের সচেতনতার অভাব রয়েছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা ইতোমধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে কৃষি খাতে ক্ষতিসাধন করছে, যেমন ২০২১ সালের তাপপ্রবাহে ২১ হাজার হেক্টরের বেশি ধান নষ্ট হয়েছে।

এসডোর চেয়ারপারসন ও সরকারের সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, এসডো পূর্ববর্তী তথ্যের উপর ভিত্তি করে এই গবেষণাটি করেছে এবং যদি তাপপ্রবাহের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকে তবে ভবিষ্যতে তাপমাত্রা আমাদের জন্য অসহনীয় হবে। গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর মাধ্যমে তাপপ্রবাহ প্রবণতা কমানো সম্ভব এবং এই লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদী নীতি বাস্তবায়ন করা জরুরি।

এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, “বাংলাদেশে বর্তমানে যে চরম তাপপ্রবাহ চলছে, যার তাপমাত্রা ইতোমধ্যে ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে। এর ফলে লাখ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সমস্যাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলো গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব নগর পরিকল্পনা গ্রহণ করার ব্যাপারেও তিনি জোর দেন।

এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা বলেন, “বাংলাদেশে চলমান তাপপ্রবাহ স্বাস্থ্য, কৃষি এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। চলমান পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে এবং আমাদের ভবিষ্যতকে সুরক্ষিত করার জন্য বর্তমান উচ্চ তাপমাত্রাকে কমিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।”

 




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles