Tuesday, October 14, 2025

জবি ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ


সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হামলার ঘটনায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) এলাকায়। রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে।

এদিকে, ঢাবিতে হামলার প্রতিবাদে রাত ১০ টায় বিক্ষোভ সমাবেশের কথা থাকলেও তা হয়নি। যদিও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জবি শাখার সমন্বয়ক মেহেরুন্নেসা রিতা বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন তারা কোনও কর্মসূচির ঘোষণা দেননি। এর আগে, দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ঢাবি ক্যাম্পাসে চলা সংঘর্ষে জগন্নাথের ৫০ থেকে ৬০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার (১৫ জুলাই) রাত আটটা নাগাদ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে তারা ক্যাম্পাস থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের বেরিয়ে যেতে বলে। এক পর্যায়ে জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসাইনকে একটি চেয়ার ছুঁড়ে মারতেও দেখা যায়। এ সময় ক্যাম্পাসের মূল ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে নতুন করে কোনও শিক্ষার্থী ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। রাত ৯টার পর কয়েকজন মোটর সাইকেল আরোহীকে ক্যাম্পাসের ভেতর লাঠি, রড, হকি স্টিক হাতে ঘুরতে দেখা গেছে। তবে তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, সন্ধ্যার পর থেকেই ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের চলাচল কমতে থাকে। বিকেলে ঢাবি এলাকায় হামলার পর কিছু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে আসলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। উন্মুক্ত লাইব্রেরীতে পড়তে থাকা শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসে বেরিয়ে যেতে অনুরোধ করে।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের কিছু কর্মীকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে ঘুরাফেরা করতে দেখা যায়। এমনকি জবি ছাত্রী হলের সামনেও কিছু কর্মীর উপস্থিত লক্ষ্য করা যায়।

ক্যাম্পাসে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর ক্যাম্পাসে ফিরে আসি। এর পর সেখানে থেকে যে যার বাসার উদ্দেশ্যে চলে যায়।’

এদিকে, সন্ধ্যার পর থেকেই ঢাবিতে হামলার প্রতিবাদে রাত ১০ টায় জবিতে বিক্ষোভ মিছিলের আহ্বান জানিয়ে শিক্ষার্থীদের ফেসবুকে পোস্ট দিতে দেখা যায়। তবে অধিকাংশ আইডিই ফেক বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জবি শাখার সমন্বয়ক মেহেরুননেসা নিদ্রা জানান তারা এমন কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করেননি।

বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে মুঠোফোন আলাপে নিদ্রা বলেন, ‘আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। আমাদের অন্য কোনও এজেন্ডা নেই। আমাদের বৃহত্তর আন্দোলন অনুপ্রবেশকারী থাকতে পারে। তারা শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে ফেলতে আরেকটি কর্মসূচি দেওয়ার চেষ্টা করতে পারে। তবে আমাদের জগন্নাথের পক্ষ থেকে কোনও কর্মসূচি ছিল না।’

তাহলে কারা কর্মসূচি দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে মনে করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের ওপর হামলা করেছে তারাও হতে পারে। আমরা বিকালে হামলার মধ্যে পরেছি, সবাই এখন ক্লান্ত। ছোটো বড় আঘাত মিলিয়ে ৫০-৬০ জন আহত আমাদের। একজন গুরুত্বর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে আছে। আমি নিজেও পায়ে ব্যথা পেয়েছি। আমরা অনেকে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা নিতে পারিনি। পরে ক্যাম্পাসের পাশে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নিয়েছি।’

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপ পেজগুলোতে শাখা ছাত্রলীগের কয়েকটি মেসেঞ্জার চ্যাটের স্ক্রিনশর্ট ভাইরাল হয়েছে। ওই স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ‘জবি ছাত্রলীগ’ নামক গ্রুপে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির আইডির নাম ও প্রোফাইল পিকচার সম্বলিত আইডি থেকে লেখা হয়েছে, ‘সবাইকে দ্রুত ক্যাম্পাসে আসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো। আজকে যে আসবে না তার ছাত্রলীগ করার দরকার নাই। ওদের যেকোনও মূল্যে থামাতে হবে। জিনিসপত্র সব নিয়ে রেডি হও…’

অপর একটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ওই আইডি থেকে লেখা হয়েছে, ‘তোমরা সবাই রেডি থাকবা। যে বেশি কোপ দিতে পারবা সে ভাল পদ পাবা। আমি সবাইকে বলছি। এখন সময় এসেছে অর্জিনাল ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দেওয়ার। দা বডি সব নিয়ে ক্যাম্পাসে আসো।’

একই স্ক্রিননশটে ওই আইডি থেকে লেখা হয়েছে, ‘তোমরা মারবা, পিটাবা। বাকি দায়িত্ব আমার আর ইনান ভাইয়ের। পুলিশ তোমাদের কিছু করবে না।’

এ বিষয়ে কথা বলে হলে ইব্রাহিম ফরাজি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘স্ক্রিনশর্টগুলো মাস্টার এডিট। এমন কোনও নির্দেশনা দিইনি আমি কোথাও। গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’

এদিকে, পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার শঙ্কায় সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করছিল প্রক্টরিয়াল বডি। রাত ১২টা নাগাদ ক্যাম্পাস থেকে বের হওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘আমরা ক্যাম্পাসের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যথেষ্ট সর্তক আছি। ক্যাম্পাসের শান্তি যেন বিঘ্ন না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।’

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাতে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই।’




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles