Tuesday, October 14, 2025

চিকিৎসা সংকটে বন্যাদুর্গতরা, চার চিকিৎসক ছুটিতে, দুজন বিদেশে


লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে উপকূলীয় মেঘনার চরাঞ্চল এলাকা থেকে নামতে শুরু করেছে বন্যার পানি। বেরিয়ে আসছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। সঙ্গে দেখা দিচ্ছে নানা রোগব্যাধি। ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ জ্বর, সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষ। অনেকের হাতে-পায়ে ঘা, খোসপাঁচড়া দেখা দিয়েছে। 

গত ১২ দিন ধরে বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করায় রায়পুরে বয়স্ক ও শিশুরা জ্বর, সর্দি-কাশি ও ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তরা বলছেন, চারদিক এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। ডাক্তার এবং পর্যাপ্ত ওষুধপত্র ও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

রায়পুর উপজেলায় প্রায় চার লাখ মানুষের বসবাস। ১৯৭২ সালে রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির কার্যক্রম শুরু হলেও ডাক্তারদের ৩১টি পদের মধ্যে আছেন ১৭ জন। এর মধ্যে চার জন ছুটিতে আছেন। বাকি সাত জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, ছয় চিকিৎসক আছেন উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। দুই চিকিৎসক ছুটি না নিয়ে গত ১২ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। এই সংকটের মধ্যেও পাঁচ জন চিকিৎসককে সাবেক এমপি ও সিভিল সার্জনের সুপারিশে সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে রাখা হয়েছে। কিন্তু তারা বেতন তুলছেন রায়পুর থেকে। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক-নার্সের সংকটে চিকিৎসাসেবাবঞ্চিত হচ্ছেন প্রতিদিন ৫-৬শ রোগী। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, গত ১২ দিনের ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের কারণে সৃষ্ট বন্যায় বুধবার (২৮ আগস্ট) পর্যন্ত ১০ জন সাপে কাটা রোগী এবং প্রায় শতাধিক ডায়রিয়া, ঠান্ডা-শ্বাসকষ্টের রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। পাশাপাশি বন্যায় ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরান খান বলেন, ‘পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও ১০টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভবন আছে। বরাদ্দও ঠিক আছে। কিছু চিকিৎসা সরঞ্জামও থাকলেও চিকিৎসক না থাকায় সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। বন্যার পানি মাড়িয়ে চলাফেরা করায় পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বন্যার্ত মানুষজন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিসংখ্যান বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে ১৩ জন চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করছেন। গাইনি, শিশু ও মেডিসিন ছাড়া কোনও বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। ৩৬ জন নার্সের মধ্যে ১০ জন নেই। ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ডাকাতিয়া ও মেঘনার উপকূল অঞ্চলের লক্ষ্মীপুর-২ আসনে প্রায় চার লক্ষাধিক লোকের বসবাস। এ অঞ্চলের বাসিন্দারা চিকিৎসাসেবার জন্য ১০০ শয্যার হাসপাতালের আবেদন করলেও আজও অনুমোদন হয়নি। সামান্য রোগেও সরকারি চিকিৎসাসেবা অপ্রতুল। নির্ভর করতে হয় রায়পুর শহরের ১৫টি প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসার ওপর। উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটতে হয় জেলা সদর নয়তো রাজধানীতে।

রায়পুর উপজেলার চরবংশী ইউপির চরকাছিয়া এলাকার বানভাসি মাজেদা বেগম (৪৮) বলেন, ‘আমাদের গ্রামের অনেক বসতভিটা পানিবন্দি ছিল। পানির ভেতরে আমাদের চলাচল করতে হয়েছে। এতে আমার হাতে-পায়ে চর্মরোগ দেখা দিয়েছে। গ্রামের সব পরিবারেই কোনও না কোনও রোগ দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেও সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছি না। ডাক্তার নেই, আছে ওষুধ সংকট।’

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. বাহারুল আলম বলেন, ‘প্রতিদিন জরুরি বিভাগে ৫-৬শ রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। এখানে চিকিৎসক থাকার কথা ৩১ জন, আছেন ১৭ জন। এর মধ্যে চার জন ছুটিতে। সিভিল সার্জনের সুপারিশে পাঁচ জন ডাক্তার সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনে আছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা নৌকায় করে দুর্গম এলাকায় বানভাসিদের খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিচ্ছেন।’

লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আহাম্মদ কবীর জানিয়েছেন, বানভাসিদের চিকিৎসা দিতে ৬৩টি ও একটি বিশেষ মেডিক্যাল টিম কাজ করছে। ইউনিয়ন পর্যায়ের ৪০টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও তিনটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র পানিতে ডুবে গেছে। আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন স্থানে বন্যার্তদের চিকিৎসা দিতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তারা।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles