Monday, December 23, 2024

চট্টগ্রামে শিপইয়ার্ডে নয় বছরে ১২৪ মৃত্যু 


শনিবার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এনএস করপোরেশন নামে একটি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে বিস্ফোরণে ১২ জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। শিপইয়ার্ডে প্রায়ই এমন দুর্ঘটনায় হতাহত হচ্ছেন বহু মানুষ। গত নয় বছরে (২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত) দুর্ঘটনায় শিপ ইয়ার্ডগুলোতে নিহত হয়েছেন ১২৪ জন। আহত হয়েছেন অনেকে।

বেসরকারি সংস্থা লেবার রিসোর্স অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছরই শিপব্রেকিং ইয়ার্ডগুলোতে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পাশাপাশি আহত হওয়ার ঘটনা ঘটছে। প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা না রাখায় দুর্ঘটনার মূল কারণ বলেও মনে করছে সংস্থাটি। সংস্থাটির হিসেবে ২০১৫ সাল থেকে চলতি বছরের ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১২৪ জন। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ১৬ জন, ২০১৬ সালে ১৮ জন, ২০১৭ সালে ১৯ জন, ২০১৮ সালে ১৩ জন, ২০১৯ সালে ২৩ জন, ২০২০ সালে ১০ জন, ২০২১ সালে ৯ জন, ২০২২ সালে ৭ জন, ২০২৩ সালে ৭ জন এবং চলতি বছর ২০২৪ সালে দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে শিপ ইয়ার্ডগুলোতে ১২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ১২ জন আহত এবং একজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

সংস্থাটির কো-অর্ডিনেটর ফজলুল কবির মিন্টু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘শিপইয়ার্ডে শনিবারের দুর্ঘটনাটি খুব বেশি ভয়াবহ ছিল। ১২ জন আহতদের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা গুরুতর। গ্যাস দিয়ে জাহাজের ধাতব অংশ কাটতে গিয়ে আগুন গিয়ে পড়ে অয়েল ট্যাংকে। এতেই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যে শিপইয়ার্ডে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি গ্রিন শিপইয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত। এসব ইয়ার্ড ঝুঁকি এড়াতে অনেক নিয়ম-কানুন মেনে চলে। তাই গ্রিন শিপইয়ার্ডে এমন ভয়াবহ দুর্ঘটনা নতুন করে উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। বর্তমানে ৩০ থেকে ৩৫টি শিপইয়ার্ড আছে। সেগুলোর মধ্যে গ্রিন শিপইয়ার্ড আছে মাত্র চারটি। আরও ৫-৬টি শিপইয়ার্ড গ্রিন শিপইয়ার্ডে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে করোনা মহামারির আগে ১৫০টির বেশি শিপইয়ার্ড ছিল। করোনা মহামারির পর তা কমে হয়েছিল ৫৫ থেকে ৬০টি। দেশে ডলার সংকট শুরু হওয়ার পর এ ধকল সহ্য করতে না পেরে আরও বেশ কয়েকটি শিপইয়ার্ড বন্ধ হয়ে ১০ থেকে ১৫টিতে এসে ঠেকে। চলতি বছর শিপইয়ার্ড বেড়ে ৩০ থেকে ৩৫টিতে হয়েছে।’

জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের আহ্বায়ক তপন দত্ত বলেন, ‘শনিবার শিপইয়ার্ডে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত ভয়াবহ। আহত ১২ জনের মধ্যে ৮ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নিয়ম না মেনে কাজ করার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ দুর্ঘটনার জন্য যারাই দায়ী তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রিন শিপইয়ার্ডগুলোতে অনেক নিয়ম-কানুন মানার কথা। গ্রিন এবং সাধারণ ইয়ার্ডগুলোতে দেখা যায়, তারা সরাসরি শ্রমিক নিয়োগ না দিয়ে জাহাজ কাটার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করে। ওই ঠিকাদার আবার সাব-ঠিকাদার নিয়োগ দেয়।  ঠিকাদাররা তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করার জন্য কোনও নিয়ম মানছেন না। নিয়ম না মানার কারণেই এ দুর্ঘটনা।

‘ইয়ার্ডগুলোতে মজুরি বোর্ডের নির্ধারণ করা মজুরি দেওয়া হচ্ছে না শ্রমিকদের। মানা হচ্ছে না শ্রম আইন। রাত ৮টার পর জাহাজ না কাটার জন্য বলা হলেও সেই নির্দেশনাও মানছে না অনেক ইয়ার্ড।’

বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সহকারী সচিব নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘এনএস করপোরেশন শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে দুর্ঘটনায় ১২ জন আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি।’

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন বলেন, ‘শিপব্রেকিং ইয়ার্ডে দুর্ঘটনায় আজ ১২ জন আহত হয়েছেন। আমরা আমাদের মতো করে দুর্ঘটনার স্থান পরিদর্শন করেছি। কী কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তার প্রাথমিক কারণও আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’

এ ঘটনায় কেউ মামলা করলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওসি।




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles