প্রতিবাদীদের হাতের মোমবাতি নিভিয়ে হামলা, চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠলো পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের মাথাভাঙায়। গোটা পশ্চিমবঙ্গ যখন পথে নেমে আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে, তখন মাথাভাঙায় মুছে দেওয়া হলো রাস্তায় লেখা স্লোগান ও ছবি। অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে।
ছবি এঁকে, গান গেয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন সাধারণ মানুষ। আচমকা একদল লোক এসে জল ঢেলে সব অঙ্কন মুছে দেন বলে অভিযোগ। প্রতিবাদীরা রীতিমতো চমকে যান এই আকস্মিক হামলায়। এই বিষয়ে কথা বলার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি কলকাতায় আছেন। এই বিষয়ে কিছু জানেন না, তাই কথা বলবেন না।
তৃণমূলের শহর সভাপতির আঁকা মোছার কথা স্বীকার করে নেন। শুধু তাই নয়, যুক্তি দিয়ে বোঝান, কেন এমন করা হলো। তিনি বলেন, তিলোত্তমার ছবি রাস্তায় যে আঁকা থাকবে, এই রাস্তা দিয়ে অনেকে হাঁটাচলা করবে। তার ওপর পা পড়বে। যারা এঁকেছে, তাদের কোনও কাণ্ডজ্ঞান নেই। আমরাও জাস্টিস চাই। কিন্তু এই জাস্টিসের নাম করে সিপিএম ও বিজেপির দালালরা অন্য খেলা খেলতে চাইছে। তার প্রতিবাদ জানাই। শুধু ছবি আঁকাই নয়, রীতিমতো ধস্তাধস্তির ছবিও দেখা যায় মাথাভাঙায়।
বুধবার রাতে বারাসত ডাকবাংলা মোড় থেকে প্রতিবাদ মিছিলে শেষের কিছুটা আগেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন দুই নারী। তাদের মধ্যে একজনের ছেলে নিতে আসেন। যুবকের দাবি, তিনি এসে দেখেন এক মদ্যপ্য অশ্লীল ভাষায় কটূক্তি করছে তার মা ও সঙ্গে থাকা আরও এক নারীকে। প্রতিবাদ করেন যুবক। অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তি মারধর করে তাকে। পরে দুই নারী প্রতিবাদ করতে গেলে তাদেরও বেধড়ক মারধর করা হয়। পাশাপাশি পরিবারের সদস্যরা ঠেকাতে গেলে তাদেরকেও গায়ে হাত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপরে ছুটে গিয়ে পুলিশকে অভিযোগ জানান ওই যুবক। পুলিশ এসে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বারাসত থানায় নিয়ে যায়। অভিযুক্তের উপযুক্ত শাস্তির দাবি। গোটা ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে বারাসত থানার পুলিশ।
গতবারের মতো এবারও যাদবপুরে অবস্থান হয়। আন্দোলনকারীরা গান, পথ নাটকে প্রতিবাদের সুর তুলছিলেন। সেখানেই ছন্দ কাটে এক ব্যক্তির অভব্য আচরণে। অভিযোগ, ওই ব্যক্তি জমায়েতের মাঝে নারীদের সঙ্গে অসভ্যতামি করছিলেন। সে এক নারীকে যৌন হয়রানির চেষ্টা করে। এরপরই প্রতিবাদীরা তাকে পাকড়াও করে এবং পুলিশের কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশের বিরুদ্ধেই অভিযোগ ওঠে যে ধৃত ব্যক্তিকে নানাভাবে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। পরে ধৃতকে যাদবপুর থানায় আনা হয়। অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেও, তাকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তুমুল উত্তেজনা ছড়ায়।
মাঝরাতেই যাদবপুর থানার সামনে বসে বিক্ষোভ। পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে যান আন্দোলনে শামিল হওয়া অভিনেত্রী সোহিনী সরকার, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, পরিচালক বিরসা দাশগুপ্তর মতো মুখ।
উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচড়াপাড়ায় মেয়ের বিচার চাইতে গিয়ে আক্রান্ত আরও এক মেয়ে। অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় একদল যুবক প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যাওয়া এক নাবালিকার হাতের মাইক কেড়ে নেয়। হাত মুচড়ে দেয় বলে অভিযোগ। এরা সকলে তৃণমূলের দলবল বলে জানিয়েছেন নাবালিকার বাবা। গোটা ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে থানায়।
আহত নাবালিকার নাম মৌ সরকার। সে কাঁচরাপাড়া সারদা দেবী উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বর্তমানে সে কল্যাণী জওহরলাল নেহেরু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানা যাচ্ছে, গতকাল রাত্রিবেলা কাঁচরাপাড়া সকল নারী বিন্দু গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ‘রাত দখলের’ কর্মসূচি চলছিল। ওই কর্মসূচিটির নেতৃত্ব দিচ্ছিল মৌ।নাবালিকার দাবি, আচমকাই মদ্যপ অবস্থায় একদল যুবক এসে তাদের ভাড়া করা মাইকটি দখল করে নেয়। সেটি চাইতে গেলে অভিযুক্তদের মধ্যে একজন একাদশ শ্রেণির নাবালিকার হাত মুচকে দেয়। অভিযোগ, তাকে ঘুষিও মারা হয়। এমনকি, তার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় আতঙ্কিত ছাত্রীর পরিবার। পরে ওই ছাত্রীর পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
আক্রান্ত ছাত্রী বলে, আমি ওদের পরিচয় জানি না। হঠাৎ করে এসে মাইক কেড়ে নেয়। আমি সেই মাইক চাইতে গেলে ঘিরে ধরে। আমায় ঘিরে ধরে। ওরা সকলে মদ্যপ অবস্থায় ছিল।
অপরদিকে, আহত নাবালিকার বাবা সাংবাদিকদের ফোনে জানান, আমার মেয়ে মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলো। স্লোগান দিচ্ছিলো। হঠাৎ করে গান্ধী মোড়ে তৃণমূলের মিছিল থেকে আসা একটি ছেলে ওর হাত মুচড়ে দেয়। ওর মা আমায় ডেকে নিয়ে গেলো। আমি যাই ওইখানে। ছেলেটাকে জিজ্ঞাসা করি এই কাজটা কি ভালো হলো? একটা মেয়ের হাত মুচড়ে দিলেন। আবার আপনারাই বলছেন জাস্টিস চাই? সঙ্গে সঙ্গে আমায় মারতে এলো। যদিও, এই ঘটনায় তৃণমূলের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
যাদবপুরেও বিশাল জমায়েত হয়েছিল বিচার চেয়ে। গান, পথ নাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ চলছিল। মোমবাতি, মশাল থেকে মোবাইলের আলো জ্বালিয়েও প্রতিবাদের সুর চড়ান সকলে। সেই প্রতিবাদ অবস্থানেই যোগ দিতে এসেছিলেন যাদবপুর কেন্দ্রের তৃণমূলের সাবেক সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। আন্দোলনে যোগ দিতে এসে ‘গো ব্যাক’ স্লোগানের মুখে পড়তে হলো সাবেক সাংসদকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই যাদবপুর ছেড়ে চলে যান মিমি।
শ্যামবাজারে গিয়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে। টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী গাড়ি থেকে নামতেই শোনা গেলো ‘গো ব্যাক… গো ব্যাক’। তারপরও তিনি প্রতিবাদে অংশ নেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে দ্রুত অভিনেত্রীকে গাড়িতে তোলেন তার দেহরক্ষীরা। শ্যামবাজারে এদিনও ছিল প্রচুর মানুষ। তাদের হাতে মোমবাতি, প্ল্যাকার্ড। হঠাৎ অভিনেত্রী এসেছেন শুনেই চিৎকার করে ওঠেন মানুষজন। কালো কাঁচের গাড়িতে গিয়ে তারা ধাক্কা মারতে থাকেন।
ঋতুপর্ণা জানান, একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে এদিন আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছেন তিনি। কিন্তু কেন এমন বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল তাকে, তা তার কাছে স্পষ্ট নয়।
বিক্ষোভের মাঝে তাকে গাড়িতে তোলা হলে, গাড়ি থেকে কিছু বলার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু তার কথা কেউ শোনেনি।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com