Wednesday, June 26, 2024

কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে শঙ্কিত হেফাজত ও ইসলামি দলগুলো


পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে শঙ্কিত হেফাজতে ইসলাম ও দেশের ইসলামি দল-সংগঠনগুলো। হেফাজতে ইসলাম মনে করে, চামড়ার দাম নিয়ে দেশে নৈরাজ্য চলছে। ইসলামি দলের নেতাদের অভিযোগ, চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের সকল আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে।

পবিত্র ঈদুল আজহা (১৭ জুন) উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে হেফাজত আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক বছর থেকে আমরা দেখছি, চামড়া শিল্প নিয়ে দেশে নৈরাজ্য চলছে। কাঁচা চামড়া রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকার পাচারকারী সিন্ডিকেট হোতাদের নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে সহযোগীর ভূমিকা পালন করছে। যে কারণে প্রকৃত দামও পাচ্ছেন না মালিকরা।’

হেফাজতে ইসলাম কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক একটি সংগঠন, যেটি ২০১১ সালে নারী উন্নয়ন নীতিমালার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে আহমদ শফীর নেতৃত্বে কর্মসূচি পালন করে। পরবর্তীতে ২০১২ সালে ইসলামি রাজনীতির দুই সামনের সারির নেতা শায়খুল হাদিস আজিজুল হক ও মুফতি ফজলুল হক আমিনীর মৃত্যুর পর হেফাজত ঢাকায় সক্রিয় হয়।

২০১৩ সালে ৫ এপ্রিল ও ৫ মে শাপলা চত্বরে শক্তি জানান দেয় সংগঠনটি। দেশের প্রায় প্রতিটি কওমি মাদ্রাসাতেই হেফাজতের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে। প্রতি বছর কোরবানির সময় কওমি মাদ্রাসাগুলো তৎপর হয়ে উঠে। বিশেষ করে মাদ্রাসার লিল্লাহ ফান্ডের আয় বৃদ্ধির জন্য কোরবানির চামড়া সংগ্রহ, কম দামে কিনে থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে চামড়ার দামে লোকসান হচ্ছে বলে কওমি মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টরা বলছেন।

এ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে হেফাজতের আমির মুহিব্বুল্লাহ ও মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন,  ‘চামড়ার ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় হাজার হাজার কওমি মাদরাসা, এতিমখানা এবং সমাজের গরিব দুস্থ মানুষ মারাত্মকভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। সরকার কোনোভাবে এর দায়ভার এড়াতে পারবে না।’

তাদের দাবি, জাতীয় অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে হলে অবশ্যই চামড়া শিল্পে উন্নয়ন ঘটাতে হবে। জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হল চামড়া।

হেফাজত মনে করে, স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার।

সংগঠনটির দাবি, ‘অসাধু কতিপয় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশের সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে যারা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে তাদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।’

হেফাজতের মতো কওমি মাদ্রাসায় প্রতিনিধিত্ব রয়েছে এমন ইসলামি দলগুলোর নেতারাও চামড়ার মূল্য নিয়ে উদ্বিগ্ন। ২০২২ সালে জাতীয় সংসদে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানান,  ১৯ হাজার ১৯৯টি কওমি মাদ্রাসা রয়েছে দেশে।

কওমি মাদ্রাসাগুলোর সরকার অনুমোদিত কর্তৃপক্ষ ‘আল হাইআতুল উলইয়া লিল-জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’। ২০১৭ সালে স্বীকৃতির পর প্রতি বছর কয়েকটি শ্রেণিতে এই কর্তৃপক্ষের অধীনে কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৬টি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। চলতি বছরের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় ২২১৯টি মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেয়।

এসব কওমি মাদ্রাসায় হেফাজত ও কওমি রাজনীতির সমান্তরাল অবস্থান রয়েছে। এদের মধ্যে অন্যতম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেছেন, কোরবানির পশুর চামড়ার বিক্রয়লব্ধ অর্থের মালিক এতিম-গরিব ও মিসকিনসহ সমাজের প্রান্তিক দরিদ্রজনগোষ্ঠী। প্রতি বছর চামড়ার দরপতনে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন দরিদ্র জনগোষ্ঠী। এতে বিঘ্নিত হয় দারিদ্র্য বিমোচন প্রক্রিয়া।’

ইসলামি দলের এই নেতা মনে করেন, একটি ইসলামবিরোধী গোষ্ঠী কওমি মাদ্রাসাকে ধ্বংসে মরিয়া হয়ে উঠছে।

দলের মিডিয়া সমন্বয়ক আহমদ আবদুল কাইয়ূমের সই করা বিবৃতিতে ইউনুছ আহমাদ বলেন, ‘কওমি মাদ্রাসায় দেশের লাখ লাখ এতিম, গরিব ও অসহায় মানুষ বিনা বেতনে ও বিনা খরচে পড়ালেখা করে, যার অধিকাংশ কোরবানির পশুর চামড়া থেকে ব্যয়ভার নির্বাহ করা হয়। এজন্য কওমি মাদ্রাসাগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সেজন্য একটি সিন্ডিকেট চামড়ার দাম কমিয়ে গরিব ও বঞ্চিতদের হক নষ্ট করছে।’

‘কোরবানি পশুর চামড়ার ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতে সরকারকে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে’ বলে মত দিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের।

 

ইসলামি রাজনীতিকদের শুভেচ্ছা

ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাণী ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামি দলের নেতারা। এক শুভেচ্ছা বার্তায় ইসলামী আন্দোলনের সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ‘ঈদুল আজহা আমাদেরকে ত্যাগ ও কোরবানির আদর্শে উজ্জীবিত করে। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আল্লাহর উদ্দেশ্যে সবকিছু বিলীন করে দেওয়ার চেতনা জাগ্রত করে ঈদুল আজহা। সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণ, শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় কোরবানি আমাদেরকে অনুপ্রেরণা দেয়। ত্যাগ ও কোরবানির মানসিকতা নিয়ে ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে অনুসরণ করতে হবে।’

ইসলামী আন্দোলনের সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলে বারী মাসউদ এক বিবৃতিতে নগর ও নগরবাসীকে সুস্থ ও নিরাপদ রাখতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে’র দাবি জানিয়েছেন।

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশবাসী ও মুসলিম উম্মাহকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের।

কেন্দ্রীয় প্রচার ও তথ্য সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরু স্বাক্ষরিত তারা বলেন, ‘এবারের ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের জনগণ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের উচ্চমূল্যের চরম কষাঘাতের শিকার। পশুখাদ্যের উচ্চমূল্য ও চাঁদাবাজির কারণে কোরবানি পশুর চড়াদাম ও বিদ্যুৎ সংকটের কারণে এবার অনেকের ঈদ আনন্দ পূর্ণতায় পৌঁছবে না। দরিদ্র-অসহায় মানুষও যাতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে সামর্থ্যবানদের এক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে।’

তারা আরও যোগ করেন, ‘সড়ক ও ঘর-বাড়ির নিরাপত্তায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।’




👇Observe extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles