Friday, February 21, 2025

কোন কাজটা ঝুঁকিপূর্ণ না


রাস্তায় সিগন্যালে হাসিমুখে ফুল বিক্রি করছে যে মেয়েটি, সিগন্যাল ছেড়ে দিলে চলন্ত গাড়ি এড়িয়ে দৌড়ে ফুটপাতে উঠে যায় প্রতিবার। একবার রাস্তা থেকে ফুটপাতে উঠতে গিয়ে পিছলে পড়ে যায় রাস্তায়। পায়ের ওপর দিয়ে চলে যায় রিকশা। আট বছরের সেই শিশু চার মাস আর হাঁটেনি। এরপর আবারও পথে ফিরে এসেছে। সরকারের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় পথভিত্তিক কাজও আছে। এতে বলা হয়েছে, চরম রোদে, ধুলোবালির পরিবেশে কাজ করবে না শিশুরা। কিন্তু ঢাকার সিগন্যালগুলোতে শত শত শিশু কাজ করে, আহত হয়। বড় সহকর্মী, এমনকি পথচারীদের নির্যাতনেরও শিকার হয়।

আবার, আপনার শিশু যেন সঙ্গী পায়, সহযোগী পায়— সে কারণে যে শিশুটিকে বাসায় কাজে রাখছেন, তার পরিচয় গৃহকর্মী। কিন্তু নিরাপদে বাসাবাড়িতে আশ্রয় পাবে ভেবে এই শিশুরা নেই ঝুঁকির তালিকায়। যদিও হিসাব বলছে ভিন্ন কথা। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম (বিএসএএফ) পরিচালিত ‘হিডেন স্লেভারি: চাইল্ড ডোমেস্টিক ওয়ার্কার্স’ শীর্ষক এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু গৃহকর্মীদের ৮৩ শতাংশই মেয়েশিশু। আর এদের প্রায় ৬০ শতাংশ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার।

শিশু অধিকারকর্মীরা বলছেন, বাংলাদেশে শিশুরা অদৃশ্য। তাদের জন্য আলাদা করে ভাবার কেউ নেই। আর শ্রমজীবী শিশুরা নিপীড়িত। এদের জন্য সবাই কাজ করে গেলেও তাদের ভাগ্যের উন্নতি ঘটে না। প্রশ্ন হলো, শিশুর জন্য আদৌ এমন কোনও কাজ আছে কিনা, যা ঝুঁকিপূর্ণ নয়! কাগজে-কলমে যে গৃহকর্মকে ঝুঁকির তালিকায় ফেলা হয়নি, সে কাজটিও তার শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের কারণ। গৃহকাজে শারীরিক ও মানসিক ঝুঁকি উল্লেখ করে আইনজীবী সালমা আলী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বারবার ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় গৃহকর্ম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। গৃহকর্মীর কোনও কর্মঘণ্টা নেই, তাকে যেকোনও এক ধরনের কাজ করতে হয়, তা নয়। পানি গরম করা থেকে শুরু করে রান্নাঘরের কাজ, সবখানে এই শিশুদের সারা দিন কাজে লাগানো হয়। এর আইনি প্রতিকার দরকার।’

সরকারের ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় ৪৫ ধরনের কাজের উল্লেখ আছে। এর মধ্যে রয়েছে—আবর্জনা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, ইটের কাজ, দর্জি ও পোশাক খাত, পথভিত্তিক কাজ, শুঁটকি উৎপাদন, বন্দরে ও জাহাজে মালামাল হ্যান্ডলিং, কামারের কাজ, কসাইয়ের কাজ, কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি, সিরামিক কারখানা, বেকারি, ইলেক্ট্রিকের কাজ, তাঁতের কাজ, ট্রাক ও টেম্পোর হেল্পারের কাজ, সোনার দোকানের কাজ, আতশবাজি তৈরি, কীটনাশক তৈরি, স্পিরিট অ্যালকোহল প্রক্রিয়াকরণ, মেটালের কাজ, চামড়ার কাজ, কাপড়ের রঙ ব্লিচিং ও ওয়েল্ডিং। এখানে নেই গৃহকর্মীর কোনও কাজের বিবরণ।

শ্রমিক শিশুর হিসাব আছে?

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) সংশ্লিষ্ট কনভেনশন ১৩৮ এবং জাতিসংঘের শিশু অধিকার-সংক্রান্ত কনভেনশনে অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ সরকার। এই কনভেনশনে শিশুকে সব ধরনের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে মুক্ত রাখার কথা বলা হয়। এ প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনের কথাও বলা আছে। যদিও এটাকে কল্পনা ছাড়া কিছু ভাবতে নারাজ শিশু অধিকারকর্মীরা। এখন পর্যন্ত কোন শিশু কোথায় কাজ করে, তারই ঠিকঠাক তথ্য নেই বলে মনে করেন তারা। সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রকাশিত জরিপ প্রতিবেদন বলছে, দেশে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৩০ লাখ ৫৪ হাজার। তাদের মধ্যে ১০ লাখ ৭ হাজারই ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে নিয়োজিত।

বাসাবাড়ি থেকে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করে শিশুরা (ছবি: প্রতিবেদক)

গৃহের আড়ালে চলে কাজ

জাতীয় শিশুশ্রম নিরসন নীতি অনুযায়ী, ২০১৩ সালে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকা প্রকাশ করা হয়।

এই তালিকায় ৩৮টি কাজকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সম্প্রতি আরও ৫টি কাজ তালিকায় যুক্ত হলেও সেখানে গৃহকর্মকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

অথচ দেশে কর্মরত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সংস্থা এবং জাতিসংঘের বিশেষায়িত শিশু অধিকার সংস্থাগুলো গৃহকর্মকে শিশুদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছে।

পরপর একাধিক ঘটনা বিশ্লেষণ করে অধিকারকর্মীরা বলছেন, ঘরের কাজে শিশুর যে কায়িক শ্রম তা চোখে দেখা যায় না। এই শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও ভাবা দরকার উল্লেখ করে মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক মেখলা সরকার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, তারা ছোট বলে বাসার সবার হুকুম তামিল করতে হয়। তাদের কর্মঘণ্টা নেই, বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। ১০ থেকে ১৬ বছরের শিশুদের খুব মনোযোগ দরকার হয়। সেখানে এই শিশুদের আমরা প্রতিযোগিতার মধ্যে ফেলে দিয়ে আরেক শিশুর সামনে দাঁড় করিয়ে রাখছি।’

রাস্তার শিশুদের জীবন

সমাজসেবা অধিদফতর, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও ইউনিসেফ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও সুইডিস ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সির সহযোগিতায় বাস্তবায়নাধীন ‘চাইল্ড সেনসিটিভ সোশ্যাল প্রোটেকশন ইন বাংলাদেশ’ ফেইজ-টু প্রকল্পের অধীনে পথশিশুদের পরিস্থিতি নিয়ে ‘বাংলাদেশে পথশিশুদের পরিস্থিতি-২০২৪’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারা দেশে ৩৪ লাখের বেশি পথশিশু বাবা-মায়ের যত্ন ছাড়াই জীবনযাপন করছে।

চরম দারিদ্র্য, পারিবারিক অস্থিরতা এবং শারীরিক বা মানসিক নির্যাতনের পটভূমি থেকে বেড়ে ওঠা শুরু হয় পথশিশুদের। অর্থনৈতিক চাপ প্রায়ই এসব শিশুকে শ্রমে বাধ্য করে, তাদের শিক্ষার সুযোগ কমিয়ে দেয় এবং দারিদ্র্যের একটি চক্রকে স্থায়ী করে।

ইউনিসেফের সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ‘সার্ভে অন স্ট্রিট চিলড্রেন ২০২২’ শীর্ষক জরিপের তথ্য অনুযায়ী, এই শিশুদের বেশিরভাগই ছেলে (৮২ শতাংশ) এবং তাদের বেশিরভাগ দারিদ্র্যের কারণে বা কাজের সন্ধানে রাস্তায় আসে। প্রায় ১৩ শতাংশ শিশু তাদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এবং ৬ শতাংশ শিশু এতিম, অথবা তাদের বাবা-মা বেঁচে আছে কিনা, তাও তাদের জানা নেই।

জরিপে অংশ নেওয়া শিশুদের এক-তৃতীয়াংশ শিশু কাজ করার সময় আহত হওয়ার কথা জানায়। আর অর্ধেক শিশু জানায় সহিংসতার শিকার হওয়ার কথা। কর্মরত শিশুদের প্রায় অর্ধেকই ৯ বছর বয়স থেকে কাজ করতে বাধ্য হয়। এসব শিশুর বেশিরভাগই সপ্তাহে এক হাজার টাকা বা ১০ ডলারের কম অর্থের জন্য প্রতি সপ্তাহে ৩০ থেকে ৪০ ঘণ্টা কাজ করছে।

এই শিশুদের নিয়ে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি উল্লেখ করে পথশিশুদের নিয়ে কর্মরত ও তাদের জন্য গঠিত ‘মজার ইশকুল’-এর প্রতিষ্ঠাতা আরিয়ান আরিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘যে শিশুদের নিয়ে কাজ করা জরুরি বলে আমরা বলে আসছি, তাদের নিয়ে কাজের ধারাবাহিকতা নেই বলে আমার অভিজ্ঞতা বলছে। এই শিশুদের কাজ থেকে সরাতে হলে তার বেঁচে থাকার পথ দেখাতে হবে। সে জীবনের ঝুঁকি ছাড়া কীভাবে টিকে থাকবে, তার পরিবারের প্রতি যে দায়িত্ব তা পালন করবে, সেটা তাকে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিতে হবে।’

শিশুদের এমন কাজ প্রতিদিনের দৃশ্য (ছবি: প্রতিবেদক)

আবর্জনার বোঝা টানা শিশুদের কথা

সকালে ঘুম ঘুম চোখে ঘরের ময়লার ঝুড়িটা যখন সংগ্রহকারীর হাতে তুলে দেন, তখন চোখ তুলে তাকিয়ে দেখেছেন কি তার সঙ্গে একজন শিশু সহযোগী থাকে। যার কাজ সিঁড়ি দিয়ে আবর্জনার ড্রামটা নামানো থেকে শুরু করে ভ্যানে আবর্জনা বাছাই করা পর্যন্ত।

জীবিকা নির্বাহের জন্য, কখনও বাবাকে যেন বাইরে থেকে হেলপার নিয়োগ দিতে বাড়তি টাকা খরচ করতে না হয়, সেই বিবেচনায় শিশুরা কাজে নেমে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বর্জ্য সংগ্রহ, ভিক্ষাবৃত্তি বা চায়ের দোকানে, কারখানা ও ওয়ার্কশপে কাজ করতে বাধ্য হওয়া এই শিশুরা প্রতিদিন আঘাত ও সহিংসতার শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এবং ইউনিসেফের যৌথ সমীক্ষা ‘পথ শিশু জরিপ-২০২২’ অনুযায়ী, ৯০ শতাংশ ছিন্নমূল শিশুশ্রমে জড়িত। ছেলেদের মধ্যে ৯২ শতাংশ এবং মেয়েদের মধ্যে ৮৪ শতাংশ বিভিন্ন কাজে জড়িত। সমীক্ষার তথ্য বলছে, প্রতি ৫ জনে একজন ছিন্নমূল শিশু ভাঙারি-সামগ্রী সংগ্রহ ও বিক্রির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে। এরপর সবচেয়ে বেশি জড়িত ভিক্ষাবৃত্তিতে। এছাড়া ১৫ শতাংশ শিশু দোকান, রেস্তোরাঁ, চায়ের দোকানে কাজ করে এবং ৯ শতাংশ শিশু পথেঘাটে ফেরি করে বেড়ায়।

প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করে শিশুরা

ঝুঁকিপূর্ণ কাজের তালিকায় স্পষ্ট বলা আছে, আলো-বাতাস নেই এমন বদ্ধ জায়গায় কাজ করবে না শিশুরা। আরও বলা হয়েছে, ধুলো উৎপাদন করে, বাতাসে রাসায়নিক ভাসমান এমন কিছুর সংস্পর্শে আনা যাবে না তাদের। কিন্তু প্লাস্টিক টোকানো ও সেটা আবারও পণ্য উপযোগী কাঁচামালে পরিণত করার সব কাজে উপস্থিতি আছে শিশুদের।

লালবাগ ও কেরানীগঞ্জের আটটি কারখানা ঘুরে দেখা যায়, এগুলোতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা নেই। টিনের বেড়া ও চালার কারখানায় কাজ করছে শিশু শ্রমিকরা। কোনও কোনোটার আন্ডারগ্রাউন্ডে মেশিন বসানো। কেউ কাঁচামাল পৃথকের কাজ করছে, কেউ চুলায় প্লাস্টিক গলাচ্ছে, কেউ মাপামাপিতে সহায়তা করছে। এদের কাজে একাধিক ঝুঁকি থোকে। প্লাস্টিক শেপ নেওয়ার সময় মেশিন থেকে বাতাসে যা ছড়ায়, তা কাশি ও শ্বাসকষ্টের সমস্যা তৈরি করে। আলো-বাতাসহীন জায়গায় তাকে কাজ করতে হয়। এখানে আগুন লাগলে নিজেকে বাঁচানোর রাস্তা তারা জানে না। চর্মরোগে ভুগতে থাকে বছরের পর বছর।

টুপির কারখানায় কাজ করছে এক শিশু (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

শিশু অধিকারকর্মী নঈম গওহার ওয়ারা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এই শিশুদের কাজ থেকে বিরত রাখার বাস্তবতা না থাকলে, সে কীভাবে বাঁচবে সেই পরিকল্পনা তো থাকতে হবে। আমাদের দেশে শিশু হচ্ছে অদৃশ্য জিনিস। এত বড় একটা জনগোষ্ঠী, কিন্তু তাদের কথা কেউ শোনে না। বড়রা নিজেদের মতো করে শিশুদের জন্য প্রকল্প করে এবং কাগজে-কলমে তা বাস্তবায়ন করে ফেলে। শিশুটি কীভাবে চায়, তার কতটা দরকার—সেসব নিয়ে তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়ার কথা আমরা কখনও ভাবি না। এই যে শুরুটাই হয় এক ধরনের নেগলিজেন্সি নিয়ে, তাতে ভালো কিছু আশা করা যায় না।’

অটোমোবাইল নিষেধ হলেও বেশি শিশু এখানেই

রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় ছোট বড় গ্যারেজে মোটরবাইক বা গাড়ি নিয়ে দাঁড়ালে দুই-একজন করে শ্রমিক শিশুর দেখা মিলবে। ছোটখাটো কাজগুলো তারা দেখে দেখে শিখছে। বড়রা তাদের সামনে বড়দের আলাপ করছে। শারীরিক শ্রম দিচ্ছে ১২ ঘণ্টা। পাশাপাশি বয়ঃসন্ধির আগে রগরগে গল্পের মধ্যে বসবাস তাদের।

বিবিএসের তথ্য বলছে, বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে স্বীকৃত খাতগুলোর মধ্যে পাঁচটি খাতে ‘শিশুশ্রম জরিপ-২০২৩’ পরিচালনা করেছে। এর মধ্যে অটোমোবাইল ওয়ার্কশপে সবচেয়ে বেশি ২৪ হাজার ৯২৩টি শিশু কাজ করে।

জরিপ বলছে, পাঁচ খাতে শ্রমজীবী মোট শিশুর সংখ্যা হলো যথাক্রমে—শুঁটকি মাছ উৎপাদনে ৮৯৮ জন, চামড়ার তৈরি পাদুকা শিল্পে ৫ হাজার ২৮১ জন, ওয়েল্ডিং বা গ্যাস বার্নার মেকানিকের কাজে ৪ হাজার ৯৯ জন, অটোমোবাইল ওয়ার্কশপে ২৪ হাজার ৯২৩ এবং অনানুষ্ঠানিক ও স্থানীয় টেইলারিং বা পোশাক খাতে ২ হাজার ৮০৫ জন। এই তথ্য থেকে স্পষ্ট যে পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ খাতের মধ্যে শ্রমজীবী শিশুদের সবচেয়ে বড় অংশ নিয়োজিত রয়েছে অটোমোবাইল খাতে।

ঝুঁকিপূর্ণ তালিকায় থাকা অটোমোবাইল কাজে নিয়োজিত এক শিশু (ছবি: সাজ্জাদ হোসেন)

এই শিশুরা যদি ঝুঁকির মধ্যে না থাকে, তাহলে ঝুঁকিতে কারা? এই শিশুরা মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে থেকে যে জীবন শুরু করছে, তার পরিণতি ঝুঁকিপূর্ণ না হয়ে উপায় আছে কি? ২০২৫ সালের মধ্যে যদি ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম বন্ধই করতে হয়, তাহলে রাজধানীতে চোখের সামনে এরা কীভাবে রয়েছে, প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা জরুরি বলে মনে করেন উন্নয়নকর্মী আব্দুল্লা আল মামুন।

তিনি বলেন, আমরা জানি ২০২৫ সালের মধ্যে সারাবিশ্ব থেকে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসনের জন্য এসডিজি ৮.৭ এ অঙ্গীকার করা হয়েছে। বাংলাদেশও সেই আলোকে ২০১০ সালে জাতীয় শিশুশ্রম নীতির আলোকে যে কর্মপরিকল্পনা করে এবং সর্বশেষ কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২০২৫ করা হয়েছে সেটা সেই লক্ষ্যকে হাতে নিয়ে করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ২০২২ এর জাতীয় জরিপ যেটা ২০২৩ এ প্রকাশিত হয়েছে সেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি শিশুশ্রম বেড়েছে। এর যৌক্তিক কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেন কোভিডকালীন যে অর্থনৈতিক দুরবস্থা সেটির কারণে। যেহেতু ২০২৫ এ বিশ্বে কোনও দেশে সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না, বাংলাদেশেও সেটি অর্জন সম্ভব নয়। কিন্তু এসডিজির অন্য সকল লক্ষ্যমাত্রা ২০৩০ সাল পর্যন্ত সময় আছে।

এই মুহূর্তে ২০২৫ এর জায়গায় এই লক্ষ্যমাত্রাকেও ২০৩০-এ নিয়ে যাওয়া সময়ের দাবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাশাপাশি বাংলাদেশকেও সে লক্ষ্য করে পুরো বিষয়কে ঢেলে সাজাতে হবে। যে কর্মপরিকল্পনা ২০২১-২৫ নেওয়া হয়েছিল সেটাকেই ২০২৬-৩০ নিলে হবে না। ২০১৬-২০ এর কর্মপরিকল্পনাকে প্রায় অপরিবর্তিত রেখে ২০২১-২৫ নেয়া হয়েছিলো। যারা শ্রমে চলে গেছে তাদের জন্য পুনর্বাসন কিন্তু নতুন করে একটি শিশুও যেন শ্রমে যুক্ত না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। সেটি পরিচালিত যে সামাজিক সুরক্ষা আছে তার বাইরে গিয়ে এই শিশুদের টার্গেট করে করতে হবে। আর পাশাপাশি কোনো এলাকার একটা শিশুও যেন প্রাইমারি শিক্ষার বাইরে না থাকে সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles