Friday, February 21, 2025

‘কাঠমান্ডুর শিরোপাতে দেশের ফুটবলের চেহারা পাল্টাবে না’


কাঠমান্ডুর আনফা কমপ্লেক্সের মাঠে নতুন ইতিহাস রচিত হয়েছে। স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ট্রফি নিয়ে দেশে ফেরার অপেক্ষায়। মাত্র দুই সপ্তাহের অনুশীলনে এমন সাফল্যের পেছনে কোচ মারুফুল হকের অবদান কম নয়। ৫৪ বছর বয়সী কোচের ক্যারিয়ারে প্রথম আন্তর্জাতিক সাফল্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট থেকে বিমানে উঠার আগে বাংলা ট্রিবিউনের কাছে টুর্নামেন্টে সাফল্যের পেছনের গল্প শুনিয়েছেন ময়মনসিংহ থেকে উঠে আসা উয়েফা ‘এ’ ও পরবর্তীতে এএফসি প্রো লাইসেন্সধারী এই কোচ।

প্রশ্ন: শুরুতে আপনাকে অভিনন্দন। প্রথমবারের মতো সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপে ট্রফি জিতেছেন।

মারুফুল হক: আসলে ধন্যবাদ প্রাপ্য খেলোয়াড়দের। ওরা মাঠে খেলেছে। আমি শুধু দিক নির্দেশনা দিয়েছি।

প্রশ্ন: কোচরা তো মাঠের বাইরে থেকেই দিক নির্দেশনা দেন। কিন্তু আপনি মাত্র দুই সপ্তাহের প্রস্তুতিতে দলকে চ্যাম্পিয়নের স্বাদ এনে দিলেন।

মারুফুল হক: হ্যাঁ, অল্প সময়ে শিরোপা এসেছে। এটা তো সত্যি। এই সময়ে দলকে যতটুকু পারি গুছিয়ে নিয়ে খেলার চেষ্টা করেছি। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে এই শিরোপা এসেছে। সবাই নিজেদের নিংড়ে দিয়েছে। যার কারণে ট্রফি জিততে সহায়ক হয়েছে।

প্রশ্ন: আপনি সব সময় বলেন ম্যাচ জিততে ভাগ্যও লাগে। এবার কাঠমান্ডুতে গ্রুপ পর্বে নেপালের কাছে হারলেন। সেমিফাইনালে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিপক্ষে চাপে থেকেও জিতলেন। ফাইনালে প্রথমার্ধে নেপাল আধিপত্য দেখালো। সব মিলিয়ে ভাগ্য তো মনে হয় এবার বাংলাদেশ দলের পাশে ছিল?

মারুফুল হক: তা বলতে পারেন। ভাগ্যের বেশ সহায়তা পেয়েছি। পাশাপাশি খেলোয়াড়রা নিজেদের উজাড় করে খেলেছে। গ্রুপ পর্বে নেপাল কিন্তু আমাদের ওপর পুরোপুরি আধিপত্য দেখাতে পারেনি। নিজেদের ভুলে গোল খেতে হয়েছিল। সেমিফাইনালে ভারত অনেক ভালো খেলেছে। বলতে পারেন আমরা শেষ মিনিট পর্যন্ত ওদের আটকে রেখে টাইব্রেকারে ম্যাচ জিতেছি। আর ফাইনালে কী হয়েছে তা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রশ্ন: টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কি ভেবেছিলেন চ্যাম্পিয়ন হতে পারবেন? মানে আত্ববিশ্বাস কেমন ছিল?

মারুফুল হক: আমি কিন্তু ঢাকা ছাড়ার আগে বলেছিলাম চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। কেননা আমি জানি দলের শক্তি কেমন। খেলোয়াড়দের নিয়ে কতদূর যাওয়া যাবে, সেই ভরসা থেকে আমরা ফাইনাল খেলেছি। এরপর তো ইতিহাস।

প্রশ্ন: শুনেছি মাত্র দুই সপ্তাহ আগে এই দলটির দায়িত্ব নিতে পিছপা হননি। কেন?

মারুফুল হক: দেখুন এটা সাফের টুর্নামেন্ট। এই অঞ্চলের দলগুলোর শক্তি কেমন। তা আমার আগে থেকে জানা। এছাড়া বাংলাদেশ দলের প্রায় সব খেলোয়াড়দের আমার চেনা-জানা। তাই সাহস করে দায়িত্ব নিতে কুণ্ঠাবোধ করিনি। শুধু তাই নয়, এতো স্বল্প সময়ে হয়তো অনেকেই দায়িত্ব নিতে চাইতো না। বা নেয়নি। আমার কাজ হলো কোচিং করানো। তা যে কোনও পর্যায়ে হোক না কেন। আর এটা তো দেশের জন্য কাজ করা। দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। তাই কাঠমান্ডুর আসরটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। এই অল্প সময়ে যতদূর পারা যায় ফিটনেস, ট্যাকটিস ও টেকনিক নিয়ে কাজ করেছি। নিজের মেধার সর্বোচ্চ ঢেলে দিয়েছিলাম।

প্রশ্ন: এখন তো চ্যালেঞ্জ জিতে সফল কোচের তকমা আবার জুড়লো। রাতে নিশ্চয়ই ভালো ঘুম হয়েছে। অভিনন্দন বার্তা পাচ্ছেন…

মারুফুল হক: নাহ আগে যেমন ঘুম হয় কাল রাতে তেমনই হয়েছে। তবে জেতার পর যেন ব্যস্ততা বেড়েছে। অভিনন্দন তো সবাই জানাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রশ্ন: আপনি তো ঘরোয়া ফুটবলে কোটি টাকার সুপার কাপ, ট্রেবল জয় সহ অনেক সাফল্য পেয়েছেন। এবার সাফের এই শিরোপা জয় কি আপনার ক্যারিয়ারে সেরা অর্জন বলতে পারবো…

মারুফুল হক: হ্যাঁ বলতে পারেন(একটু ভেবে)। ঘরোয়া ফুটবলে অনেক সাফল্য আছে। সাফ পর্যায়ে এমন সাফল্য প্রথম। তাই এটাকে এগিয়ে রাখা যায়।

প্রশ্ন: এই পর্যায়ে এমন সাফল্য কি দেশের ফুটবলে চেহারা পরিবর্তন করে দিতে পারবে?

মারুফুল হক: আমার মনে হয় না কাঠমান্ডুর শিরোপাতে দেশের ফুটবলের চেহারা পাল্টাবে। এ নিয়ে কয়েক দিন হইচই হবে। তারপর সব কিছু থেমে যাবে। আসলে দীর্ঘমেয়াদে পরিকল্পনা না করলে উন্নতি করা কঠিন।

প্রশ্ন: সামনে তো এএফসির অনূর্ধ্ব-২০ গ্রুপ পর্যায়ের খেলা রয়েছে। কী ভাবছেন…

মারুফুল হক: এখন থেকেই অনুশীলন চালিয়ে নিতে হবে। বিরতি দেওয়া যাবে না। দিলেও পিছিয়ে পরতে হবে। সবাইকে নিয়ে নিবিড় অনুশীলন করতে হবে।

প্রশ্ন: আপনার দল থেকে মিরাজুলসহ আরও দুয়েজকন কাবরেরার দলে জায়গা পেতে যাচ্ছেন। আপনি কী মনে করছেন..

মারুফুল হক: আমার দলের সবারই মূল দলে খেলার মতো যোগ্যতা আছে। তবে আমার মনে হয় ওদের নিয়ে অনেক কাজ করা বাকি। আরও ঘষা-মাজা করলে ওরা আরও পরিণত হবে। তখন জাতীয় দলে ভালো সার্ভিস দিতে পারবে।

প্রশ্ন: জাতীয় দলের কথা যখন উঠলোই…আপনাকে অদূর ভবিষ্যতে যদি আবার দায়িত্ব দেওয়া হয়, তাহলে কী করবেন?

মারুফুল হক: দায়িত্ব নিতে আমার আপত্তি নেই। তবে জাতীয় দলে দায়িত্ব নিতে হলে দীর্ঘমেয়াদে দিতে হবে। খণ্ডকালীন নিয়ে কিছু করা কঠিন। দীর্ঘমেয়াদে হলে তখন ভাববার অবকাশ থাকবে।

প্রশ্ন: আমরা শেষ পর্যায়ে চলে এসেছি। ঘরোয়া ফুটবলে গতবার আপনার ভালো সময় কাটেনি। শুনেছি দেশের ঐতিহ্যবাহী আবাহনী লিমিটেডের হয়ে ডাগ আউটে দাঁড়াতে যাচ্ছেন…

মারুফুল হক: আসলে বড় কিংবা ছোট দল নয়, সুযোগ পেলে যে কোনও দলে কোচিং করাই। আমার কাজই হলো কিছু শেখানো। আর এবার কোন দলের হয়ে কোচিং করাবো তা জানি না। আবাহনীর কথা বলছেন, এই বিষয়ে এখনই কিছু বলতে চাই না। আমার কাছে কোনও খবর নেই। ঢাকায় আগে ফিরি তারপর দেখা যাক কী হয়। আবার সময় কোন দিকে নিয়ে যায় তা বলাও যায় না।




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles