ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে গ্রেফতার আসামিকে ছিনতাইয়ের চেষ্টা চালানো হয়েছে। এতে ১০ পুলিশসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০/২৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়েছে। রবিবার (৯ জুন) বিকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
আহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য আব্দুস সালাম, ইকবাল হোসাইন ও তরিকুল ইসলাম মিনাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর এক পুলিশ সদস্যকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া বাকিদের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। যে আসামিকে ছিনিয়ে নিতে হামলা চালিয়েছে তার নাম মুস্তাক শিকদার। তিনি মারামারি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের মৃত আব্দুস সাত্তার শিকদারের ছেলে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী বলে জানা গেছে।
খবর পেয়ে ঝিনাইদহ থেকে পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) ইমরান জাকারিয়া শৈলকুপা থানায় ছুটে যান। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেন।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শৈলকুপা উপজেলার ধাওড়া গ্রামের মুস্তাক সিকদার মারামারি মামলার এজাহারনামীয় আসামি। রবিবার সকালে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর বিকালের দিকে ধলহারা গ্রাম এবং আশপাশের প্রায় পাঁচ শতাধিক লোকজন ঢাল, ভেলা, লাঠিসোঁটা, রামদা নিয়ে থানায় হামলা চালান। হামলাকারীরা চারদিক থেকে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। লাঠি ও ইটপাটকেলের আঘাতে ১০ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন। তাদেরকে দ্রুত ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে একজনকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।
ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় কমপক্ষে ১৫ হামলাকারী আহত হয়েছেন। সেসময় উত্তেজনা আরও ছড়িয়ে পড়ে। হামলাকারীরাও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। পরো থানা এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ ২০ থেকে ২৫ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কিছু লোকজন জানান, গত ৭ জুন সন্ধ্যায় শৈলকুপা কবিরপুরে ঝিনাইদহ-১ আসনের (উপনির্বাচনে) এমপি নায়েব আলী জোয়ারদারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল। ওই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, শৈলকুপা পৌরসভা মেয়র কাজী আশরাফুল আজম। তিনি বক্তৃতার এক পর্যায়ে শৈলকুপা থানার ওসি সফিকুল আজম চৌধুরীকে গলায় গামছা দিয়ে বিতাড়িত করার ঘোষণা দেন। তিনি বলেছিলেন, ‘এই দুর্নীতিবাজ ওসি সন্ত্রাস করছে। আমরা চাই, অতিসত্বর দুর্নীতিবাজ প্রশাসন বিশেষ করে এই ওসি এখান থেকে চলে যাক। তা না হলে গালায় গামছা বেঁধে তাকে আমরা বিতাড়িত করবো’।
তার ওই বক্তব্যের পর থেকেই শৈলকুপায় পুলিশ বিরোধী একটি মোর্চা গড়ে ওঠে। মারামারির মামলার আসামি ছিনতাই করতে পাঁচ শতাধিক মানুষের এই দুঃসাহস মেয়র আশরাফুল আজমের ওই বক্তব্যেরই জের বলে অনেকেই জানিয়েছেন। এ ছাড়া ওই বক্তব্যের জন্য মেয়র আশরাফুল আজমের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থায় নেওয়ার জন্য রবিবার ঝিনাইদহ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অন্যদিকে সম্প্রতি ঝিনাইদহ-১ আসনের উপনির্বাচন ও শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই শৈলকুপায় পরাজিত প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি ঘরে হামলা চালিয়ে লুটপাট করা হচ্ছে। প্রতিপক্ষ অনেক আওয়ামী লীগ কর্মী ভোটের পর বাড়ি ছাড়া রয়েছেন। তাদেরকে বাড়িঘরে ফিরতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা বাড়ি ওঠার দাবিতে এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করেছেন। শৈলকুপা থানার ওসি বাড়িঘরে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় তার বিরুদ্ধে এত ক্ষোভ বলে পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পুলিশ সুপার আজিম উল আহসান জানান, রবিবার মুস্তাক নামে গ্রেফতার একজন এজাহারনামীয় আসামিকে শৈলকুপা থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। বিকালের দিকে থানা ঘেরাও করে তাকে ছিনতাই করার চেষ্টা চালানো হয়। সে সময় হামলাকারীরা থানার ভেতরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। তাদেরকে থামাতে গেলে তারা ঢাল, ভেলা, রামদা, চড়কি নিয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। তখন কমপক্ষে ১০ পুলিশ গুরুতর আহত হয়। আহতদেরকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশি অভিযান চলছে। পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত আছে।
👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com