Wednesday, July 3, 2024

ঈদের আনন্দ দ্বিগুণ করে দিলেন সাকিব-মোস্তাফিজরা 


২১ বছর আগের কথা। ঈদের আগের দিন ‘ডাবল’ আনন্দের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পুরো বাংলাদেশ। কিন্তু ২০০৩ বিশ্বকাপে কানাডার কাছে টাইগাররা হেরে যাওয়ায় পুরো ঈদ আনন্দটাই হয়ে মাটি! সহজ প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ৬০ রানের ব্যবধানে হেরে যায় লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। ২০১৯ বিশ্বকাপেও ছিল একই পরিণতি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঈদের দিন মাঠে নেমে হতাশ করে মাশরাফির দল। দুই রানের ওই হারটি না হলে বাংলাদেশ হয়তো কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতো। আজ ঈদুল আজহার দিন আবারও পুরোনো শঙ্কা উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত তানজিম হাসান সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমানের দারুণ বোলিংয়ে নেপালের বিপক্ষে অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ জিতে নিলো বাংলাদেশ।

২১ রানের এই জয়ে সুপার এইটে ওঠার সঙ্গে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও সরাসরি অংশ নেওয়া নিশ্চিত হয়েছে শান্তদের। ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করে দলকে জিতিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন তানজিম হাসান সাকিব। 

এখন অব্দি সবগুলো বিশ্বকাপই বাংলাদেশ খেলেছে। বাংলাদেশের সেরা সাফল্য গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাওয়া দুটি জয়। সোমবার আগের সব সাফল্যকেও শান্তর দল ছাড়িয়ে গেছে। এবার সুযোগ সেমিফাইনাল খেলার। অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগামী ২১ জুন থেকে শুরু হবে সেমিফাইনালে যাওয়ার মিশন। এখন দেখার অপেক্ষা প্রত্যাশাহীন এই বিশ্বকাপ কতটা রাঙাতে পারে শান্তর দল! 

তবে শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো! হুট করে ঘুম ভেঙে যারা টিভি স্ক্রিনের সামনে বসেছিলেন, তাদের ছিল ‘হার্ড-অ্যাটাক’ হওয়ার মতো অবস্থা! সহযোগী সদস্য দেশটির বোলারদের বিপক্ষে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। নেপাল যে বাংলাদেশের ব্যাটারদের কঠিন সময় দেবে, এটা অনুমেয়ই ছিল। টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর বাংলাদেশ দল কোনওরকমে ১০৬ রানের স্কোর গড়তে পারে। 

কিংসটাউনে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের আত্মসমর্পণের পর হারের গল্পই লেখার কথা। কিন্তু তানজিম সাকিব বল হাতে নিয়েই চিত্রনাট্যটাই পাল্টে দিয়েছেন। পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই অসাধারণ বোলিং করেছেন এই তরুণ। তবে আজ যা করলেন, এই গল্প সাকিবতো বটেই, ক্রিকেটপ্রেমীরাও দীর্ঘদিন করতে পারবেন। ৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে নেপালের ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদণ্ডটাই ভেঙে দিয়েছেন তিনি। তবে নিজের প্রথম ওভারে বল হাতে নিয়ে ৫ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন। পরের ওভারে নেন জোড়া উইকেট। পাওয়ার প্লেতে আরও দুই ওভার বোলিং করে রান না দিয়ে তুলে নেন আরও দুটি। সবমিলিয়ে পাওয়ার প্লেতে সাকিবের এমন বোলিং আক্রমণে ধস নামে নেপালের ব্যাটিং লাইনআপে। দারুণ ছন্দে বোলিং করা সাকিবকে টানা চার ওভার বোলিং করিয়েছেন অধিনায়ক শান্ত। খুব ভালো করেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তিনি। শেষ ওভারে ২ রান দিয়ে নিজের কোটা শেষ করে দলকে দারুণ একটি অবস্থানে পৌঁছে দিতে পেরেছেন। সাকিবের সঙ্গে সমান তালে সাপোর্ট দিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমানও। নিজের প্রথম ওভারে এসে কাটার মাস্টারও তুলে নেন আরও একটি উইকেট।

বোল্ড হয়েছেন জাকের আলী। সবমিলিয়ে ২৬ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কঠিন চাপে পড়ে যায় নেপাল। তবে ৬ষ্ঠ উইকেটে কুশল মাল্লা ও দীপেন্দ্র সিং এইরি মিলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেন। ৫৮ বলে ৫২ রান করে জয়ের সুবাসও পাচ্ছিল হিমালয়ের দেশটি। ২৪ বলে নেপালের জিততে প্রয়োজন ছিল ৩০ রানের। এই সময় বোলিং আসেন মোস্তাফিজ। নিজের তৃতীয় ওভারে তৃতীয় বলে অধিনায়ক শান্তর দুর্দান্ত ক্যাচে ফিরতে হয় মাল্লাকে। এই ব্যাটার আগের ওভারে মাহমুদউল্লাহ এক চার ও এক ছক্কা মেরে ব্যবধান কমিয়ে এনেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৪০ বলে ২৭ রান করে মাল্লা ফিরতেই ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। পরের ওভারে তাসকিন এইরির হাতে ছক্কা খেলেও উইকেট নিয়েছেন যদিও।  

তার পর নেপালের শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ছিল ২২ রানের। কিন্তু মোস্তাফিজের ১৯ তম ওভারে একটি রানও নিতে পারেনি নেপাল। উল্টো চাপে পড়ে এইরিকে হারায় দলটি। ৩১ বলে ২৫ রান আসে এই ব্যাটারের কাছ থেকে। শেষ ওভারে সাকিব আল হাসান পর পর দুই উইকেট তুলে নিলে ৪ বল আগেই অলআউট হয় নেপাল। আর তাতে ২১ রানের জয়ে দ্বীপরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকদের জন্য চলে আসে ঈদ উপহার। 

শুরুতে টস হেরে হতশ্রী ব্যাটিং করেছে বাংলাদেশ। শান্তর বদলে এদিন ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেন লিটন দাস। নন স্ট্রাইকার প্রান্তে দাঁড়িয়ে প্রথম বলেই উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যেতে দেখেন তিনি। তানজিদের আউটে ইনিংসের প্রথম বলে শুরু হওয়া বিপর্যয় পুরো ইনিংস জুড়েই অব্যাহত থাকে। ৭৫ রানে ৮ উইকেট হারানোর পর ১০০ পার হওয়া নিয়ে ছিল সংশয়। শেষ দিকে রিশাদের ৭ বলে ১৩ ও তাসকিন আহমেদের ১৫ বলে অপরাজিত ১২ রানের ইনিংসে দাঁড়িয়ে কোনও রকমে একশ রান পেরুতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান এসেছে সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে। তিনি ২২ বলে ১৭ রান করেছেন। 

নেপালের তারকা খেলোয়াড় সন্দীপ লামিচানে এদিন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় দ্রুততম ১০০ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়েছেন। আজ তার শিকার ছিল দুটি উইকেট। এছাড়া দুটি করে উইকেট পান সোম্পাল কামি, দীপেন্দ্র সিং এইরি ও রোহিত পাওডেল। 

গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের টপ অর্ডার যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, তাতে করে সুপার এইটে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও নেপালের বিপক্ষে বাংলাদেশকে কঠিন চাপেই থাকতে হবে। আগামী ২১ জুন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে তারা। আগের কয়েকটা দিন কাজে লাগিয়ে ব্যাটারদের ফর্মে ফেরা জরুরি। নয়তো এই ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়া-ভারত কিংবা আফগানিস্তানকে হারানো কঠিনই হবে। সাকিব-তাসকিন-মোস্তাফিজরা প্রতিদিন ম্যাচ জেতাতে পারবেন না, কোন না কোন দিন ব্যাটারদেরও দায়িত্বটা কাঁধে নিয়ে নিতে হবে।

 




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles