Monday, June 16, 2025

আবেদন করার আগেই শিক্ষার্থীদের কলেজে ‘অটো ভর্তি’


চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় পছন্দের কলেজে ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। কারণ তাদের ভর্তির আবেদন আগেই দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ‘অটোভাবে’ করে রেখেছেন অজ্ঞাতরা। এতে শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তারা। হতাশ অভিভাবকরাও। তাদের অভিযোগ, এক বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংশ্লিষ্টরা ভর্তি কারসাজির সঙ্গে জড়িত।

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীর অজান্তে তাদের পছন্দের কলেজ হিসেবে দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তির আবেদন করা হয়েছে। কীভাবে এই আবেদন করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেননি শিক্ষার্থী ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীদের অগোচরে এ ধরনের ভর্তি জালিয়াতির প্রতিকার চেয়ে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা ও জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

হাইমচর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাতেমা আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘২০২৪ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেছি। ২৬ মে থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। সেদিন বিকালে আবেদন করতে গিয়ে দেখি, দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তির আবেদন অটো হয়ে আছে। যেখানে ভর্তির চয়েজ দেওয়া হয়েছে, সেখানে পড়তে চাই না। আমার পছন্দের কলেজ আছে। সেখানে ভর্তির জন্য আবেদন করতে চাই। ভর্তি হবো এক জায়গায়, আবেদন করা হয়েছে অন্য জায়গায়। আমি জানি না, এই আবেদন কারা করলো, কীভাবে করলো? কোথায় গিয়ে এর সমাধান পাবো, তাও বুঝতে পারছি না।’

ভুতুড়ে আবেদনে বিপাকে পড়ার কথা জানিয়ে আরেক শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছি। আশা করেছি চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে ভর্তি হবো। কিন্তু আবেদন করতে গিয়ে দেখি, দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে আবেদন হয়ে আছে। আমাকে না জানিয়ে ওই কলেজে ভর্তির আবেদন করা হয়েছে। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এ ঘটনা কলেজ জীবনের শুরুতে আমার জন্য বড় ধাক্কা। আমার জন্য যে ভর্তির আবেদন করা হয়েছে, তা বাতিল করা হোক। ২৬ মে থেকে বিষয়টি নিয়ে অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছি। কোনও উপায় না পেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে গেছি। যারা কলেজের ভর্তির বিষয়টি নিয়ে এমন ভুতুড়ে কাজ করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’

দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ

হাইমচরের কেভিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফরোজা বলেন, ‘এটি কীভাবে সম্ভব হয়েছে, তা আমরা জানি না। আমি ওই কলেজে ভর্তি হতে চাই না। আমার পছন্দের কলেজে পড়াশোনা করতে চাই।’

এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক মোহাম্মদ ইউসুফ ক্ষোভ প্রকাশ করে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বহু কষ্ট করে সন্তানরা এসএসসি পাস করেছে। আমাদের স্বপ্ন তারা ভালো প্রতিষ্ঠানে পড়ুক। কিন্তু কে বা কারা তাদের ইচ্ছেমতো প্রতিষ্ঠান চয়েজ দিয়ে ভর্তি আবেদন করে রেখেছে। শিক্ষার্থীদের না জানিয়ে কলেজ চয়েজ দিয়ে আবেদন করেছে। ভর্তি হতে বাধ্য করছে। দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের লোকজন গত বছরও এ ধরনের কাজ করেছিলেন। উপজেলার প্রায় প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের ভালো ভালো শিক্ষার্থীদের তারা চয়েজ করে নিয়ে গেছেন। সন্তানদের কলেজে ভর্তির আবেদনের স্বাধীনতাটুকুও কেড়ে নিয়েছেন তারা।’

হাইমচর কেভিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ নাথ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ের প্রায় সব শিক্ষার্থীর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির আবেদন কে বা কারা দুর্গাপুর হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে করে রেখেছে। যারা কাজটি করেছে ঠিক করেনি। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা করছে তারা। আমার বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষার্থী আছে, ভালো ফল করেছে। তারা ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারবে। অন্য কলেজে আবেদন করার ফলে এখন তারা পছন্দের কলেজে ভর্তির আবেদন করতে পারছে না।’

এ বিষয়ে আলগী দুর্গাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. রুহুল আমিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কে বা কারা শিক্ষার্থীদের ভর্তির আবেদন করেছে, তা আমার জানা নেই। আমার কাছে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ নিয়ে এসেছিল। আমি বলেছি, যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে তাহলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। আবেদন হলো কীভাবে সেটি বলতে পারছি না। গত বছরও এমন অভিযোগ আসায় আমরা অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের ডেকে কথা বলেছি। সবার মতামত নিয়ে কাজ করেছি। আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন করার জন্য এ ধরনের কথা বলা হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হাইমচর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি জেনেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানিয়েছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

শিক্ষার্থীদের অজান্তে কলেজে ভর্তি আবেদন করা ঠিক হয়নি উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীরা যাতে নিজেদের পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারে, আমরা সেই ব্যবস্থা নেবো।’

বিষয়টি জানার পর কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে যোগাযোগ করেছি বলে জানালেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি, যাদের ভর্তির আবেদন নিয়ে কথা হচ্ছে, তাদের আবেদনগুলো ওপেন করে দেওয়ার জন্য। যেন শিক্ষার্থীরা তাদের মতো করে আবেদন করতে পারে।’




👇Comply with extra 👇
👉 bdphone.com
👉 ultraactivation.com
👉 trainingreferral.com
👉 shaplafood.com
👉 bangladeshi.assist
👉 www.forexdhaka.com
👉 uncommunication.com
👉 ultra-sim.com
👉 forexdhaka.com
👉 ultrafxfund.com
👉 ultractivation.com
👉 bdphoneonline.com

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest Articles